কাপ্তাই বাঁধ
জলকপাট খোলায় সেকেন্ডে ১ লাখ ৩০ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন
টানাবর্ষণ ও উজান থেকে নামা পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর এখনও চূড়ান্ত বিপৎসীমায় রয়েছে। এ কারণে বাঁধের ১৬টি জলকপাট ৫ ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন প্রতি সেকেন্ডে ৯৮ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। সব মিলে প্রতি সেকেন্ডে ১ লাখ ৩০ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি গেইট দিয়ে ৫ ফুট করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুরজ্জাহের জানান, বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে বাঁধের জলকপাট আড়াই ফুট থেকে ধাপে ধাপে ৫ ফুট বাড়ানো হয়েছে। এখন ১৬টি গেইট দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৯৮ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। সব মিলে এক লাখ ৩০ হাজার কিউসেক পানি প্রতি সেকেন্ডে কর্ণফুলীতে যাচ্ছে। আশাকরি দুই একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
জানা যায়, পানি ছাড়ার ফলে তীব্র স্রোত ও জোয়ারে করণে বন্ধ রাখা হয় চন্দ্রঘোনা ফেরি চলাচলা। এতে রাঙ্গামাটি-রাজস্থলী ও বান্দরবান সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই সড়কে দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, সকালে শহরের শান্তিনগর, রসুলপুর ও রিজার্ভ বাজারসহ আশেপাশের এলাকার সড়ক এবং বাসাবাড়ি থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে এখনও অনেক এলাকা ও বাসাবাড়িতে পানি রয়েছে। অনেকে ত্রাণ না পাওয়া নিয়ে করছেন অভিযোগ। আবার কেউ বলছেন, ত্রাণ চাই না, দ্রুত কমিয়ে দেওয়া হোক হ্রদের পানি। পানিবান্দি থাকায় দুর্ভোগে আছেন কয়েক হাজার মানুষ। প্লাবিত এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট।
রাঙ্গামাটি শহরের রসুলপুরের একজন বলেন, আমার ঘরে রাতে প্রায় এক ফুট পানি ছিল। সকালে বাসা থেকে বের হবার সময় দেখেছি ৩ ইঞ্চির মতো পানি আছে। যদি এভাবে পানি কমতে থাকে আশাকরি আজকের মধ্যে ঘর থেকে পানি নেমে যাবে।
লংগদু উপজেলার বগাবচর ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা জানান, গত কয়েকদিন দ্রুত পানি বাড়ছিল। তবে গতকাল থেকে পানি বাড়া বন্ধ হলেও অনেক বাসাবাড়ি ও সড়ক এখনও ডুবে আছে। এমন পানি ২০০৭ সালের পরে আর হয়নি। এলাকার লোকজন গরু-ছাগল নিয়ে কষ্টে পড়েছেন।
অন্যদিকে সকালে শহরের শান্তিনগর, রসুলপুর ও রিজার্ভ বাজারসহ আশপাশে এলাকার সড়ক ও বাসাবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো অনেক বাসাবাড়িতে পানি রয়েছে। জেলার লংগদু, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, বরকলসহ কয়েক উপজেলার প্রায় ১৭টি গ্রামের মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছেন।
মন্তব্য করুন