নিখোঁজের ৫ দিন পর স্কুলছাত্রের মরদেহ মিলল আড়িয়াল খাঁ নদে
নিখোঁজের ৫ দিন পর আড়িয়াল খাঁ নদে পাওয়া গেল স্কুলছাত্র অনয়ের মরদেহ। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে বেলাবো উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের দীঘলদিকান্দি এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদে মরদেহটি ভেসে ওঠে বলে জানায় পুলিশ ও স্থানীয়রা।
পুলিশ আরও জানায়, নরসিংদীর বেলাবোতে আড়িয়াল খাঁ নদে ভেসে উঠে এক কিশোরের মরদেহ। স্থানীয়রা মরদেহটি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি, ডিবির সদস্যরা।
পরিবারের পক্ষ হতে মরদেহটি নিখোঁজ ১২ বছর বয়সী স্কুলছাত্র অনয় চন্দ্র মোদকের বলে দাবি করা হলেও পুলিশ বলছে, মরদেহটি বিকৃত হওয়ায় নিশ্চিত করে পরিচয় বলা যাচ্ছে না। তবে ডিএনএ টেস্টের আগে নিশ্চিত হওয়া যাবে না আসল মরদেহটি কার।
অনয় চন্দ্র মোদক বেলাব উপজেলার বেলাব মাটিয়াল পাঁড়া গ্রামের গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোদকের ছেলে। সে বেলাব পাইলট সরকারি মডার্ন উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। অনয় পাঁচদিন আগে নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজ কিশোরের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় অনয় চন্দ্র মোদক মাটিয়াল পাঁড়া নিজবাড়ি থেকে শিক্ষা উপকরণ কিনতে বেলাবো বাজারে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতেই বেলাবো থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। পরবর্তীতে ১৬ জানুয়ারি সাধারণ ডায়েরিটি মামলায় রূপান্তরিত হয়।
অনয়ের পরিবার জানায়, অনয় নিখোঁজের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে লেখালেখির পর অজ্ঞাত নম্বর থেকে অনয়ের পরিবারের নম্বরে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণও চাওয়া হয়। তাদের কথামতো বিকাশের মাধ্যমে দেওয়া হয় এক লাখ টাকা মুক্তিপণ। পরে পুলিশ অপহরণকারীদের মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান দেখতে পান বরিশালের ভোলায়।
এ সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত বেলাবো থানা পুলিশের একটি দল অনয়কে উদ্ধারের জন্য বরিশালের ভোলায় অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। তারা একজনকে আটকও করেছেন বলে জানা যায়।
অনয়ের পরিবারের দাবি, এটি হত্যাকাণ্ড। তারা অনয় হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিখোঁজ অনয়ের চাচাতো ভাই পলাশ মোদক বলেন, ‘অনয় নিখোঁজ হওয়ার পরে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার খোঁজ না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করলে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে আমাদের ফোন করে জানানো হয়, তারা অনয়কে অপহরণ করেছে। তাদের কথামতো অনয়কে জীবিত পাওয়ার আশায় কয়েক দফায় বিকাশের মাধ্যমে এক লাখ টাকাও দিয়েছি। কিন্তু অনয়কে জীবিত পাইনি, পেয়েছি মৃত অবস্থায়। তারা অনয়কে হত্যা করেছে।’
বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘নদীতে ভাসমান মরদেহের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিখোঁজের স্বজনরা ধারণা করছেন, এটি অনয়ের মরদেহ। মরদেহটি বিকৃত হওয়ায় নিশ্চিত করে পরিচয় বলা যাচ্ছে না। মরদেহের সুরতহাল ও ডিএনএ পরীক্ষার পর জানা যাবে এটি অনয়ের মরদেহ কিনা।’
আরটিভি/এমকে-টি
মন্তব্য করুন