ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করলে আস্থা বাড়বে: ইসি
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, ভোটের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সংযুক্ত করা গেলে আস্থা বাড়বে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে নীলফামারীতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ভোটের নিরাপত্তায় বিএনসিসি সদস্যদেরকেও সংযুক্ত করতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী স্বল্প সংস্কার শেষে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে হিসাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
আরটিভি/আইএম/এস
মন্তব্য করুন
আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কাজের অভিযোগে ২ তরুণী আটক
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলীর একটি আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দুই তরুণীকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমার হোটেল সাগর রেস্ট হাউজের দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের আটক করা হয়।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দক্ষিণ সুরমা এলাকায় হোটেল সাগর রেস্ট হাউজের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় দুই তরুণীকে আটক করতে সক্ষম হয়। তারা ওই হোটেলে অসামাজিক কাজে জড়িত ছিল। আটককৃতদের সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আদালতে প্রেরণ করা হবে।
আরটিভি/একে
যশোরে আজহারীর মাহফিল ঘিরে ৩ শতাধিক জিডি
যশোরে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে মোবাইল ফোন, স্বর্ণলংকার ও বিভিন্ন জিনিস হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ঘটনার পর থেকে থানায় ভুক্তভোগীরা জিডি করতে রীতিমতো লাইন ধরেছেন। প্রায় ৩০০ জিডি হয়েছে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায়।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় বিকেল পর্যন্ত তিন শতাধিক জিডি হয়েছে। সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে শহরতলী পুলেরহাট আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশ এলাকায় মাহফিলে গিয়ে মুসল্লিরা তাদের জিনিসপত্র হারিয়েছেন। মাহফিলের ভিড়ের মধ্যে পদদলিত ও ধাক্কাধাক্কিতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিন শুক্রবার রাতে বক্তব্য দেন জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী। তার আসার খবরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে সমগ্র মাহফিল এলাকায়। সকালে থেকেই শীত উপেক্ষা করে মানুষ জামায়েত হয়। বিকেল থেকে মাহফিল স্থান ছাপিয়ে সড়ক, মহাসড়কেও শিশু, নারী, পুরুষের ঢল নামে। দুপুরের পর সড়কে যানজট দেখা দেয়। এজন্য অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছায়। সব সড়কের ঢেউ গিয়ে মিশে পুলেরহাটে। মাহফিল প্রাঙ্গনে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। এদিন সন্ধ্যায় উক্ত মাহফিলে বক্তব্য দেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহও।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বর্ণলংকার ও মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ৩০০ জিডি হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে অসংখ্যা মানুষ মোবাইল হারিয়ে যাওয়া বা চুরির ঘটনায় জিডি করতে আসেন। তাৎক্ষণিক যারা মোবাইলের ডকুমেন্ট দেখাতে পেরেছেন তারা জিডি করতে পেরেছেন। শনিবার সকাল থেকে রীতিমতো ভিড় লেগেছে। জিডির সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিন দিনব্যাপী বৃহৎ মাহফিল হয়েছে যশোরে। পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এর ভেতরে অসংখ্যা মানুষের মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। অনেকেই জিডি করেছেন। কয়েকটি চুরির অভিযোগও পেয়েছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আরটিভি/এমএ/এআর
বেতনের টাকা কাটছিল ঋণদান প্রতিষ্ঠান, কর্মীর আত্মহত্যা
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে (৩৮) নামে বেসরকারি ঋণদান প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তার স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, ঋণের কিস্তি আদায়ে প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ প্রয়োগ ও বেতনের টাকা কেটে নেওয়ায় হতাশ হয়ে শুক্লা দে আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) বোয়ালখালী থানায় করা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় শুক্লার স্বামী সিদুল পাল রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায়ের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথসহ (৪৫) চারজনকে আসামি করেন। অন্য তিন আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মী নন্দন (৪০), চিনু বিশ্বাস (৪২) ও পলাশ নাথ (৪৩)।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুল ইসলাম।
নিহত শুক্লা দে রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহত শুক্লা এক ছেলে ও এক মেয়ের মা।
শুক্লার স্বামী সিদুল পাল এজাহারে অভিযোগ করেন, সংস্থাটির কানুনগোপাড়া শাখায় ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন শুক্লা। সংস্থাটি এলাকায় মানুষজনকে ক্ষুদ্রঋণ দেয়। এসব ঋণ কিস্তি আকারে আদায় করতেন তিনি। ৫ আগস্টের পর থেকে কিস্তি আদায়ে ধীরগতি ছিল। কিস্তি আদায়ের জন্য গেলে শুক্লাকে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হতো।
এজাহারে আরও বলা হয়, সংস্থার ম্যানেজার কাঞ্চনসহ অন্যরা কিস্তি আদায়ে শুক্লাকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। এরপর সংস্থাটি শুক্লার মাসিক বেতন থেকে অনাদায়ি কিস্তির টাকা কেটে নিচ্ছিল। এ ছাড়া নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছিল। কাজের চাপ সইতে না পেরে শনিবার সন্ধ্যায় রান্নাঘরের বিমের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়, গত নভেম্বর মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনের মধ্যে শুক্লাকে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পটিয়ার ধলঘাট এলাকায় বদলি করে শুক্লাকে। এ নিয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
বোয়ালখালী থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথকে কল করেও পাওয়া যায়নি।
আরটিভি/এমকে
পূর্বাচলে পড়ে থাকা গলাকাটা তরুণীর পরিচয় মিলেছে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল থেকে এক তরুণীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ৫ নম্বর সেক্টরের গুতিয়াবো এলাকা থেকে রূপগঞ্জ থানার পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম।
তিনি বলেন, ওই তরুণীর নাম রানী (২৯)। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের মো. কাশেমের মেয়ে।
পুলিশ সুপার বলেন, সোমবার সকাল ৮টার দিকে পূর্বাচল উপশহরের ৫ নম্বর সেক্টরের গুতিয়াবো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে অজ্ঞাত এক তরুণীর গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তাদের একজন পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, গত রাতে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থলেই তাকে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ ফেলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ নিয়ে তরুণীর পরিচয় শনাক্ত হয়। আমরা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা থানায় আসছেন। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা হবে। দ্রুতই আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারবো বলে আশা করছি।
আরটিভি/এমকে/এআর
চার খাটিয়া রাখা উঠানে, লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা
সাভারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স ও দুইটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) মরদেহের জন্য বাড়ির উঠানে রাখা আছে চার খাটিয়া। স্বজনরা অপেক্ষায় আছেন লাশ আসবে কখন। একই পরিবারের চারজনকে হারিয়ে নিহতের স্বজনরা হতবাক। এদিকে বাড়ির ছোট ছেলে ফাহিম সিদ্দিকী (১১) এখনও জানে না তার বাবা, মা, বড় ভাই এবং খালা আর বেঁচে নেই।
নিহতেরা হলেন- ভবন দত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এএইচ ফারুক সিদ্দিকী, তার স্ত্রী মহসিনা খন্দকার, ছেলে মহায়মিন সিদ্দিকী ফুয়াদ ও স্ত্রীর বড় বোন সীমা খন্দকার।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বড় ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী কিছুদিন থেকে অসুস্থ। শরীরে রক্ত কমে যায়। চিকিৎসার জন্য গত রাতে ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকীসহ পরিবারের চার সদস্য অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। গত রাত তিনটার দিকে সাভারে বাসের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষ হয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা একই পরিবারের চারজন নিহত হয়।
ঘাটাইল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান তালুকদার বলেন, লাশ এখনো ঢাকায় রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নিহত ফারুখ হোসেন সিদ্দিকীর ছোটভাই মামুন সিদ্দিকী বলেন, তারা তিন ভাই এক বোন। বোন সবার বড়। ইতালি প্রবাসী। বড়ভাই ফারুখ সিদ্দিকী ভবনদত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। বড় ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী স্থানীয় ভবনদত্ত গণ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। হঠাৎ করেই কিছুদিন থেকে সে অসুস্থ। শরীরে রক্ত কমে যায়। তবে থ্যালাসেমিয়া নয়। ঢাকায় ডাক্তার দেখানোর জন্য গত রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা থেকে ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী ও তার বোনকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যোগে রওনা দেন ঢাকার উদ্দেশ্যে। ঘাটাইল উপজেলার হামিদপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন ফারুখ সিদ্দিকী।
মামুন সিদ্দিকী জানান, রাতে তার কাছে ফোন করে সবাইকে দোয়া করতে বলেন। এরপর আর কোন কথা হয়নি।
ফারুখ সিদ্দিকীর সহকর্মী মো. রুবেল মিঞা বলেন, প্রধান শিক্ষক খুব নীতিবান ছিলেন। একজন নীতিবান মানুষের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমরা সবাই চলে এসেছি। এমন শিক্ষক আর হবে না। আমাদের সবসময় আগলে রাখতেন।
নিহত ফারুখ সিদ্দিকীর আরেক সহকর্মী তার চাচাতো বোন সোমা সিদ্দিকা বলেন, স্যারের ছোট ফাহিম সিদ্দিকী (১১) হোস্টেলে থেকে মাদরাসায় পড়ে। সে এখনো জানে না তার বাবা মা আর ভাই পৃথিবীতে নেই।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হেপলু জানান, রাতে তিনি ফারুখ সিদ্দিকীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে বাড়ি আসেন। একসঙ্গে চা পান করেছেন। ফারুখ সিদ্দিকীর মতো ভালো মানুষ আর হবে না।
আরটিভি/এএএ/এস
পেরেক দিয়ে উপড়ানো হয় যুবকের দুই চোখ, কাটা হয় রগ
ফরিদপুরের কানাইপুরে ওবায়দুর খান নামের এক যুবকের দুই চোখ পেরেক দিয়ে উপড়ে এবং পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মরদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন তারা।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকালে নিহত ওবায়দুর খানকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই খায়রুজ্জামান খাজা। এ সময় তার দুই চোখে পেরেকে ঢুকিয়ে উপড়ে ফেলা হয় এবং পায়ের রগ কেটে ভেঙে ফেলা হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওবায়দুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে এবং পেশায় কৃষি ও কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন। তার পাঁচ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন ও তার ভাই খায়রুজ্জামান খাজা সহ সকলকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।
পরিবার ও স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে কানাইপুর বিসিক শিল্পনগরীর মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে যায় ওবায়দুর। পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকারে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত স্থানীয় খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ফরিদপুর জুট ফাইবার্স মিলের পেছনে খাজার বাড়ির পাশে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। এ সময় তার দুই চোখে লোহার পেরেক দিয়ে তুলে ফেলা হয় এবং বাম পায়ের রগ কেটে ভেঙে ফেলা হয়। পরে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। রাত ৯টায় গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভাঙ্গা-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা এলাকা থেকে মারা যায় সে।
নিহতের বাবা বিল্লাল খান বলেন, ‘আমরা বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফের লোক। শুক্রবার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছার মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। আমরা ওই মিটিংয়ে না যাওয়ার কারণেই আমার ছেলেকে তুইল্যা নিয়ে মাইর্যা ফেলায়ছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। ওর (খাজা) ফাঁসি না হলে আরও মানুষ মরবে। খাজা আর আলতাব চেয়ারম্যান অর্ডার দিয়েই আমার ছেলেকে মারছে।’
এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘মরদেহ দাফন শেষে পরিবারকে আসতে বলা হয়েছে, রাতেই হত্যা মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। এ ছাড়া জড়িতদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।’
আরটিভি/এসএপি/এআর
‘আমার মৃত্যুর জন্য জাহেদা দায়ী, জীবনটা নষ্ট করেছে কাওছার’
‘আমার মৃত্যুর জন্য জাহেদা দায়ী। আমার জীবনটা নষ্ট করেছে কাওছার’—মৃত্যুর জন্য এই দুজনের নাম চিরকুটে লিখে সুবর্ণা আক্তার সুমনা (১৭) নামে এক কিশোরী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সুমনা। পরে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এর আগে, ৮ জানুয়ারি রাতে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কেদার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সুবর্ণা আক্তার সুমনা ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।
মৃত্যুর আগে লেখা চিরকুটে আরও রয়েছে—আমার জীনের মূল্য নেই, এসবের পেছনে সব দায় জাহেদার। আমি এই দুনিয়া থেকে চলে যাইতেছি, আমি তখনি শান্তি পাব যখন জাহেদা আর কাওছার সারা জীবন জেলে ধুঁকে ধুঁকে মরবে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সাদুমোড় এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে সুমনার সঙ্গে বাড়ির পাশের আজাদ আলীর ছেলে কাওছারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন মন দেওয়া-নেওয়ার একপর্যায়ে তাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এতে ওই কিশোরী গর্ভধারণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের পরিবার বিয়ের জন্য কাওছারকে চাপ দেয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য সালিশ বসে। এতে কোনো প্রকার সুরাহা হয় না। অন্য দিকে কাওছার গোপনে অন্য জায়গায় বিয়ে করে। পরে উপায়ান্তর না পেয়ে মেয়ের পরিবার কাওসারসহ চারজনের নামে কুড়িগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। আদালত কচাকাটা থানাকে মামলাটি ১০ জানুয়ারির মধ্যে রেকর্ড করার আদেশ দেন।
এদিকে মেয়ের গর্ভধারণের বয়স পাঁচ মাস পার হলেও সন্তানের স্বীকৃতি না পেয়ে ৮ জানুয়ারি রাতে বিষপান করে সুমনা। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ জানুয়ারি শনিবার সকালে মারা যায় সুমনা। ময়নাতদন্ত শেষে আজ রোববার সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন জানান, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর মামলাটি ৭ জানুয়ারি রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আরটিভি/এএএ-টি