ঢাকাবুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

হাতিয়ায় ৩ জেলেকে পিটিয়ে ডাকাত সাজানোর চেষ্টা!

হাতিয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৯:০৩ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

বসতঘর থেকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। ডাকাত হিসেবে জোরপূর্বক নেওয়া হয় স্বীকারোক্তি। এ সময় পরিবারের লোকজন বারবার বাঁচাতে এলে তাদেরকেও লাঞ্ছনা করা হয়। পরে ডাকাত তকমা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে, পুরো ঘটনা ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। জেলফেরত এক বিএনপি নেতাকে দেখতে যাওয়ার অপরাধে এই বর্বরোচিত ঘটনার শিকার হন নোয়াখালী হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের তিন জেলে।
 
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে জাহাজমারা ইউনিয়নের কাদিরিয়া স্লুইসগেট এলাকার সরকারি ব্যারাক হাউজে এই ঘটনাটি ঘটে।
 
আহত তিন জেলে হলেন—একই এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে ফখরুউদ্দিন (২৮), মো. দিলুর ছেলে শাহারাজ (২৭) ও কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. কাউসার (২৭)।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী জানান, আহত তিনজন পেশায় জেলে। ঘটনার দিন জাহাজমারা ইউনিয়ন বিএনপির ৬ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি হাসান মাঝি দীর্ঘদিন পর জেল থেকে বের হলে তাকে দেখতে তার বাড়িতে যায় শাহারাজ, ফখরুউদ্দিন ও কাউসার। হাসান মাঝির সঙ্গে দেখা করার অপরাধে ওই দিন রাত দশটায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের হামলা ও বেধড়ক পিটুনির শিকার হন তিনজন। পরে তাদেরকে পিটিয়ে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। ভুয়া রকেট লঞ্চার সামনে রেখে ডাকাত সাজিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ে ভিডিও ধারণ করা হয়, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এখানে শেষ নয়, থানা মোবাইল করে ডাকাত ধরা হয়েছে বলে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

থানার প্রধান ফটকে দেখা হয় জেলে কাউসারের মা জাহেরা খাতুনের সঙ্গে। সাংবাদিকদের দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে জাহেরা জানান, তার সন্তান সহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত কিংবা মৌখিক কোন অভিযোগ কখনো আসেনি। তারা সব সময় নদীতে থাকেন। রাতে তাদেরকে ঘর থেকে ডেকে এনে বেধড়ক পিটানো হয়। এসময় বার বার অনেকের পায়ে ধরেও নিজের ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি বলে জানান জাহেরা।
 
এ বিষয়ে জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের জানান, থানায় সোপর্দ করা তিনজন সরাসরি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনা তিনি জানেন না। তবে বিগত সরকারের আমলে তারা বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।  

বিজ্ঞাপন

বিএনপি নেতা হাসান মাঝি জানান, এখানে সরকারি ব্যারাকের অনেক মানুষ আমাকে দেখতে এসেছে। এরই মধ্যে ব্যারাকে বসবাস করা তিন জনকে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করেন।
 
এ বিষয়ে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ডাকাত হিসেবে থানায় সোপর্দ করা তিনজনের বিষয়ে আমরা ক্ষতিয়ে দেখেছি। তাদের সাথে যেগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো একপ্রকার সমুদ্রে ব্যবহৃত প্যারাসুট সিগনাল বাতি। এগুলো কোন রকেট লঞ্চার না। এ বিষয়ে হাতিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। থানায় সোপর্দ করা তিনজনকে তাদের স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য জাহাজমারা ফাঁড়ি থানার ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


আরটিভি/এএএ-টি 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |