ঢাকাবৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ফাগুনের হাওয়ায় আগুন লেগেছে জাদুকাটা তীরের শিমুল বাগানে

বিন্দু তালুকদার (সুনামগঞ্জ), আরটিভি নিউজ

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০২:৫৭ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে নবযৌবনের সাজে সাজতে শুরু করেছে প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতিই রক্তের লালে লাল হয়ে সৃষ্টি হয়েছে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের। বসন্তের শুরুতেই ফাগুনের হাওয়া লেগেছে রূপের নদী জাদুকাটার তীর সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগানে। 

বিজ্ঞাপন

গাছে গাছে থোকায় থোকায় ফুল, পাখিদের কলকাকলীতে মুখরিত পরিবেশ এবং সববয়সী মানুষের পদচারণা এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যে নবপ্রাণের সঞ্চার হয়েছে এখানে।
 
সকল কর্মব্যস্ততা ভুলে কিছু সময় প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে আনন্দ উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও ভ্রমণ পিঁপাসু মানুষেরা আসছেন শিমুল বাগান দেখতে। স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকদের দাবি এই বাগানটি বাংলাদেশ তথা এশিয়ার সর্ববৃহৎ শিমুল বাগান।
 
জানা যায়, ২০০০ সালে তাহিরপুর উপজেলার সোহালা গ্রামের প্রকৃতিপ্রেমি জয়নাল আবেদীন শখ করে জাদুকাটা নদীর পশ্চিম তীরে মানিগাঁও গ্রামে ১০০ বিঘা জমির উপর প্রায় তিন হাজার শিমুল গাছের চারা লাগিয়েছিলেন। গাছগুলো বড় হওয়ায় এখন সবগুলো গাছেই ফুল ফোটে। শিমুল বাগান দেখতে প্রতিদিনিই দেশের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন আসেন। প্রথমে শুধু তুলা সংগ্রহের জন্য গাছ লাগানো হলেও এখন মানুষের বিনোদনের জন্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখন শুধু ফুল ফোটার সময়ই নয়, সীমান্তের মেঘালয়ের পাহাড়ের পাদদেশে যাদুকাটা নদী ও শিমুল বাগানের অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখতে সারা বছরই আসেন পর্যটকরা। জয়নাল আবেদীন মারা যাওয়ার পর তার সন্তানরা বাগানের দেখভাল করছেন। শিমুল ফুলের কোন বিশেষ গন্ধ না থাকলেও এর সৌন্দর্য্য এলাকার গণ্ডি পেরিয়ে দেশবাসীকে আকৃষ্ট করছে। 

দেশের যেকোনো জায়গা থেকে সুনামগঞ্জ শহরে এসে শহর থেকে সিএনজি, মোটরসাইকেলে করে শিমুল বাগান যাওয়া যায়। বাগানে দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা থাকলে রাতে থাকার ব্যবস্থা নেই। রাত্রী যাপন করতে হলে সুনামগঞ্জ শহর বা তাহিরপুর উপজেলা সদরের হোটেলে উঠতে হবে।

বিজ্ঞাপন

নেত্রকোণার দুর্গাপুর এলাকার সোহেল মিয়া বলেন, রাস্তাঘাটের কারণে খুব কষ্ট হয় আসতে, তবে শিমুল বাগান দেখার পর কষ্ট দূর হয়ে যায়। শিমুল বাগানে পর্যটকদের জন্য আরও সুযোগ সুবিধা বাড়ানো উচিত।

তাহিরপুরের উজান জামালগড় গ্রামের শিক্ষিকা পলি রায় বলেন, শিমুল বাগনের সৌন্দর্য্য না দেখলে বুঝা যায় না। আমি এই শিমুল বাগানে দুই ঋতুতেই যাই। বসন্তে যখন ফুল ফুটে যাই, আবার বর্ষাকালেও যাই।

সিলেটের বিশ্বনাথের বাসিন্দা আব্বাস হোসেন ইমরান বলেন, শিমুল বাগানটি অনেক বড়, দেখতে বেশ সুন্দর। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না। যার কারণে শিমুল বাগান যাওয়া কিছুটা কষ্টকর। যদি যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন করা যেত তাহলে আরও বেশি পর্যটক শিমুল বাগান দেখতে যেত।

বিজ্ঞাপন

বাগান মালিক প্রয়াত জয়নাল আবেদীনের ছেলে রাকাব উদ্দিন বললেন, শিমুল বাগানে সারা বছরই পর্যটক আসলেও বসন্তের আগমনে পর্যটকরা বেশি ভিড় করেন। প্রতিদিনই শতশত পর্যটক বাগান দেখতে আসেন। পর্যটকদের জন্য বাগানের ভেতরে ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে, স্যানিটেশন, পর্যটকদের বসার জন্য বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার জন্য বাগানে কর্মী রাখা হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে বাগানে রিসোর্ট গড়ে তোলা হবে।

আরটিভি/একে/এস 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |