ঢাকাশুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

শিশুকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

বিকেলে থানায় অভিযোগ দায়ের, রাতেই মীমাংসা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ 

শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৬:০৩ এএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় শিশুকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় বিকেলে অভিযোগ দায়ের রাতেই মীমাংসার ঘটনা ঘটেছে। 

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৩ বৃহস্পতিবার) বিকেল সাড়ে ৫টায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। শিশুটির বাবা আনসার আলী এই অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু প্রভাবশালীদের চাপে ও পুলিশের পরামর্শে ওই দিন রাত একটার দিকে ঘটনাটি মীমাংসা করা হয় বলে জানা গেছে। নির্যাতনের বিষয়টি আরটিভি অনলাইনসহ অসংখ্য গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রচারিত হয়। 

এদিকে অভিযোগটি থানায় জমা দেওয়ার সময় বাদীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি সাদুল্লাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি কামরুল ইসলাম ও স্থানীয় সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম।

বিজ্ঞাপন

মীমাংসা প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম বলেন, সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আমি সশরীরে শিশুটিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। শিশুটির অভিভাবককে মামলা দেওয়ার কথা বলেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের সামনে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

0

কিন্তু অভিযোগ দেওয়ার পরও মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত হয়নি। উল্টো পুলিশ প্রভাবিত হয়ে ঘটনাটি মীমাংসার জন্য বাদীকে পরামর্শ দেন। পরে গভীর রাতে ঘটনাটি মীমাংসা করা হয়। ফলে অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ পেল। অপরদিকে মীমাংসার জন্য পুলিশের পরামর্শ দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মামলার বাদী আনসার আলী।

বিজ্ঞাপন

আনসার আলী মুঠোফোনে বলেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অনেক লোক আমার বাড়িতে আসে। তারা ঘটনাটি মীমাংসার জন্য চাপ দেন। আমাদের এলাকায় থাকতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে মীমাংসায় রাজি হয়েছি। পুলিশও মীমাংসার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন

তবে মীমাংসার পরামর্শ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার। তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগই পাইনি।

কয়েকদিন আগে সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামের বিকাশ ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে মোবাইল ও কিছু টাকা হারিয়ে যায়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে একই গ্রামের আনসার আলীর ছেলে রানা মিয়া (৯) নামের ওই শিশুটিকে গত মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে তার বাড়ি থেকে ধরে আনা হয়। পরে তাকে প্রায় ঘণ্টা-ব্যাপী স্থানীয় বাজারে একটি মুদি দোকানের সামনের রড সিমেন্টের তৈরি খুঁটির সাথে পেছনে দুই হাত বেঁধে রাখা হয়। এ সময় তাকে নির্যাতন করে ওই ব্যবসায়ী ও তার লোকজন। একপর্যায়ে শিশুটির হাতে সুচ ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
 
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বুধবার রাতে গণমাধ্যমের নজরে আসে। এ ছাড়া খুঁটিতে বেঁধে রাখার ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির দুই হাত পেছনে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। কিছু নারী-পুরুষ তাকে ঘিরে আছে। নানা জনে তাকে নানা প্রশ্ন করছে। এ সময় শিশুটিকে বলতে শোনা যায়, হাত খুলে দেন ঝিনঝিন (ব্যথা) লাগছে। এ সময় শিশুটিকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। ঠোঁট ফ্যাকাসে দেখাচ্ছিল।

আরটিভি/এএএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |