ময়মনসিংহের ভালুকায় ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসারের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, হবিরবাড়ীর সিডস্টোর এলাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসার আশরাফুজ্জামানের ভুল চিকিৎসায় আয়ুশ বড়ুয়া আদর (৯) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার অভিযোগ করছে। আয়ুশ স্থানীয় আনোয়ার খান মডেল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্র ছিল। নিহত আয়ুশ বড়ুয়া চট্টগ্রামের পটিয়া থানার কেলিশহর, ছত্তর পেটুয়া গ্রামের পীযুষ বড়ুয়ার ছেলে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে আয়ুশের পেট খারাপ ছিলো। দুপুরে অতিরিক্ত বমি হওয়ায় আয়ুশ বড়ুয়াকে নিয়ে সিডস্টোর-বাটাজোর রোডে লতিফ মেডিকেল হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসার মো. আশরাফুজ্জামান (আশরাফ ডাক্তার) এর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। আয়ুশকে কোন পরীক্ষা-নিরিক্ষা না করেই প্রেসক্রিপশনে এন্টিবায়োটিকসহ একাধিক ইনজেকশন ও স্যালাইনের চিকিৎসা দেন আশরাফুজ্জামান। স্যালাইন চলা অবস্থায় আয়ুশকে ঝালবাজার রোডের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরে রাত ৮টার দিকে আয়ুশ মারা যায়।
নিহতের বাবা পীযুষ বড়ুয়া বলেন, ডাক্তার আশরাফের কাছে নিয়ে গেলে ফুড পয়জন হয়েছে বলে চিকিৎসা দেন। স্যালাইন চলা অবস্থায় ছেলের মৃত্যু হয়। এ ধরনের ভুল চিকিৎসা অন্য কোনো শিশুর বেলা যেন না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
আনোয়ার খান মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আশরাফুজ্জামান উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসার হয়ে কিভাবে নিজের নামের সঙ্গে ডাক্তার লিখে সব ধরনের রোগী দেখে তা বিভাগীয় তদন্ত করে দেখা উচিত। তার খামখেয়ালীপনার কারণে একটি মেধাবী প্রাণ ঝরে গেলো। যা খুবই দুঃখজনক।
স্থানীয়রা জানান, আশরাফ কোনো এমবিবিএস ডাক্তার না। তারপরেও তিনি নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেন এবং সকল রোগের চিকিৎসা দেন। প্রায় সময় এরকম ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ঘটে।
স্থানীয় রাজিব হোসেন নামে একজন বলেন, আশরাফের ভুল চিকিৎসায় শুধু আয়ুশের মৃত্যু হয়নি, পূর্বেও একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কথিত আশরাফ ডাক্তারের কঠিন বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে লতিফ মেডিকেল হলে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসার মো. আশরাফুজ্জামানকে পাওয়া যায়নি এবং একাধিকবার ফোন করা হলেও তা রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, আশরাফুজ্জামানের এ ধরনের প্রেসক্রিপশন লেখা বা চিকিৎসা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরটিভি/এমকে