ঢাকামঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১

ছোট ভাইয়ের খতনার অনুষ্ঠানের দিন পুকুরে ডুবে বোনের মৃত্যু

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

শুক্রবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৫ , ০৫:৪৪ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

পুরো বাড়িজুড়ে মেহমান। সাজানো হয়েছে বড় প্যান্ডেল। রান্নার সব আয়োজনও সম্পন্ন। ছোটভাই রাব্বির সুন্নতে খতনার অনুষ্ঠানে গায়ে রঙ মেখে অন্য শিশুদের সঙ্গে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে মীম (১১)। তবে এ আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় মিমের। আনন্দের সুন্নতে খতনার অনুষ্ঠান মূহুর্তেই রূপ নেয় বিষাদে। বৃহস্পতিবার হৃদয়বিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোছা. মিরা বেগম।

মীম ওই গ্রামের ড্রেজার শ্রমিক দুলাল শেখের মেয়ে। সে স্থানীয় বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো।

বিজ্ঞাপন

মীমের প্রতিবেশী জুয়েল মোল্লা বলেন, বৃহস্পতিবার মিমদের বাড়িতে তার ছোটভাই রাব্বির সুন্নতে খতনার অনুষ্ঠান ছিল। তাদের বাড়িতে অনেক মেহমান আসে। রান্নার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে মিম সকাল থেকেই গায়ে রঙ মেখে অন্য শিশুদের সঙ্গে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সে ৮ থেকে ১০ জন শিশুর সঙ্গে বাড়ির পেছনের পুকুরে গোসল করতে নামে। অন্য শিশুরা গোসল শেষে উঠে এলেও মীম আসে না। সঙ্গে থাকা অন্য শিশুরাও বিষয়টি খেয়াল করেনা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মিমকে দেখতে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ওই পুকুরে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করে। একপর্যায়ে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুকুরের পানির নিচে ডুবন্ত অবস্থায় মীমকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মিমকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটির আকস্মিক মৃত্যুতে অনুষ্ঠান বাড়ির আনন্দ শোকে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় আমরাও খুব মর্মাহত।

আরেক প্রতিবেশী ওহাব মোল্লা বলেন, রাব্বির সুন্নতে খতনা উপলক্ষে বুধবার রাতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেও মীম নতুন হলুদ শাড়ি পড়ে সাজগোজ করে আনন্দে মেতে ওঠে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই সে গায়ে রঙ মেখে আনন্দে মেতে ওঠে। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, তার আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। সাঁতার না জানার কারণে মীম পুকুরের পানিতে ডুব দিয়ে হয়তো আর উঠতে পারেনি। একমাত্র মেয়ের আকস্মিক মৃত্যুতে দুলাল ও তার স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে বার বার মূর্ছা যাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখার মতো না।

শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোছা. মিরা বেগম বলেন, একটি আনন্দ অনুষ্ঠানের দিন বাড়ির কোনো সদস্যের মৃত্যু। এটি খুবই বেদনাদায়ক। এলাকাজুড়ে আনন্দ এখন শোকে পরিণত হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই।

বিজ্ঞাপন

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |