এবার সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ৭৮ জনকে বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এর মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশি ও তিনজন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন। তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। রোববার রাত ১১টার দিকে তাদেরকে কোস্টগার্ড সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়।
সোমবার (১২ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার।
উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের বাড়ি নড়াইল, খুলনা, যশোর ও বরিশাল জেলায়। তাদের অধিকাংশই দুই মাস থেকে ৩৭ বছর ধরে বিভিন্ন মেয়াদে ভারতের গুজরাট রাজ্যের আমেদাবাদ ও সুরাট শহরে বসবাস করতেন।
মামলার আসামিরা হলেন, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের খালিদ শেষের ছেলে আব্দুর রহমান (২০), নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মুন্না শাহ এর ছেলে হাসান শাহ (২০) ও একই গ্রামের সোহেল শেখ এর ছেলে সাইফুল শেখ (১৯)। তাদের বাবা-মা বাংলাদেশি হলেও জন্ম ভারতের গুজরাট প্রদেশের আমেদাবাদ জেলার যথাক্রমে নেহেরীনগর, জোপারপাচ্চি ও ফুলবাড়িয়ায়।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মংলা মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বিএসএফের পুশ ইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশি। অপর তিনজনের পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশে হলেও তাদের জন্ম ভারতে। সে কারণে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড বাদী হয়ে রোববার রাতেই শ্যামনগর থানায় মামলা দায়ের করেছে। ৭৫ জন বাংলাদেশিকে একইসঙ্গে শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৬৭ জনের বাড়ি নড়াইল জেলায়, ৬ জনের খুলনায়, দুজনের যশোরে, একজনের বরিশালে ও একজনের সাতক্ষীরায়।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার বলেন, পুশইন করা ৭৮ জনকে রোববার রাত ১১টার দিকে কোস্টগার্ড পশ্চিমজোন মংলা থেকে শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করে। তাদের মধ্যে ৩ জনের জন্ম ভারতে। যদিও বাংলাদেশে পৈতৃক ভিটা রয়েছে তাদের। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মোংলা জোনাল অফিসের পিও মশিউর রহমান বাদী হয়ে রোববার রাতে ওই ৩ জনের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তাদেরকে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে। বাকি ৭৫ জনকে তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মে সন্ধ্যায় ভারতীয় বিএসএফ ৭৮ জনকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন গভীর সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় একটি চরে ঠেলে দিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা পায়ে হেঁটে বনবিভাগের মান্দারাড়িয়া টহল ফাঁড়িতে চলে আসে। সেখানে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার বিকেলে সমুদ্রপথে একটি জাহাজ ও একটি স্পিড বোটে করে বাগেরহাটের মংলা কোস্টগার্ড অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশি ও তিনজন ভারতীয় বলে জানা যায়। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদেরকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়।
আরটিভি/এমকে