গাইবান্ধায় সাবেক হুইপ, সাবেক পাঁচ সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের ৮৫ নেতাকে আসামি করে নতুন একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে। প্রায় ১০ মাস আগের ঘটনায় আজ গাইবান্ধা সদর থানায় এ মামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২২) বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলা শাখার সদস্যসচিব বায়োজিদ বোস্তামি মামলাটি করেন। মামলায় ৮৫ নেতার নাম উল্লেখ ছাড়াও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান তালুকদার সন্ধ্যায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুঠোফোনে বলেন, মামলার বাদী বায়োজিদ বোস্তামিকে হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে এই মামলা করা হয়েছে। মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ মাহাবুব আরা বেগম, গাইবান্ধা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাহিদ নিগার, গাইবান্ধা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ সারোয়ার কবির, গাইবান্ধা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম, গাইবান্ধা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, গাইবান্ধা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিদের হুকুমে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর, গণহত্যাকারী ও ছাত্র-জনতার ওপর নির্যাতনকারীরা গত বছরের ১৪ জুলাই গাইবান্ধা সরকারি কলেজ মাঠে বাদীকে (বায়োজিদ বোস্তামি) অপহরণ করে কলেজপাড়ায় একটি বাসায় আটকে রাখেন। সেখানে লোহার রড, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি দিয়ে তার ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়। এ ছাড়া ৪ আগস্ট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বাদীর ওপর সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালানো হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, সেখান থেকে জোরপূর্বক তাকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গেটের সামনে নিয়ে যান আসামিরা। সেখানে বাদীকে কিল–ঘুষি, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন। পরে তারা একযোগে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বাদীকে হত্যার নির্দেশ দেন। বায়োজিদ বোস্তামিকে রক্তাক্ত অবস্থায় টেনেহিঁচড়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে নেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত অজ্ঞাতনামা পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত ৭০-৭৫টি রাবার বুলেট বিদ্ধ করে। অজ্ঞাতনামা লোকজন বাদীকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বাদী দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। হামলার ঘটনায় দীর্ঘ সময় ধরে বিচার না পাওয়ায় তিনি আইনের আশ্রয় নেন।
আরটিভি/এএএ