নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে মাঠ, স্টেশন চত্বর বা কখনো বাজারপট্টি—প্রতিদিন শহরের পথে পথে এক ভবঘুরে মানুষকে দেখা যায়, কাঁধে বিশাল একটি পুরোনো বস্তা, গায়ে ময়লা জামা। বয়স পঞ্চাশের কোঠায়। নাম গণি মিয়া। দেখলেই বোঝা যায় দীর্ঘদিন গোসল করেন না। তার সেই নোংরা বস্তা থেকে মিলেছে তিন লাখেরও বেশি টাকা।
শনিবার (১৪ জুন) সকাল সৈয়দপুর শহরের চারজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে গোসল করিয়ে নতুন পোশাক পরানোর কাজে নামে ‘হিউম্যানিটি বাংলাদেশ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই গণি মিয়াকেও খুঁজে বের করা হয় রেলওয়ে মাঠ থেকে। প্রথমে রাজি না হলেও পরে স্বেচ্ছাসেবকদের কথায় ধীরে ধীরে সম্মত হন গোসল করতে।
আর তখনই ঘটে চমকপ্রদ এক ঘটনা। পোশাক বদলানোর সময় গণি মিয়ার জামার হাতা, কলার ও ভাঁজে পাওয়া যায় মোড়ানো টাকা। শুধু তাই নয়, তার কাঁধের নোংরা বস্তার ভেতরও পাওয়া যায় এক হাজার, পাঁচশ ও একশ টাকার বেশ কিছু বান্ডিল।
টাকা দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় বাড়তে থাকলে সংগঠনটির সেচ্ছাসেবক ময়নুল ইসলাম জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় টাকাসহ ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গণনা করে দেখা যায়, গণি মিয়ার কাছে পাওয়া গেছে মোট তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা। বস্তায় আরও পাওয়া গেছে কয়েকটি জমির দলিল ও কাগজপত্র।
স্থানীয়রা জানান, গণি মিয়া শহরের পরিচিত মুখ। কারও ক্ষতি করেন না, সাহায্য চাইলে হাত বাড়ান। অনেকেই দয়ার বশে তাকে টাকা-পয়সা দেন, আর সেই টাকাগুলোই তিনি খরচ না করে নিজের মতো করে গুছিয়ে রাখতেন।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দীন বলেন, তিনি আমাদের জানিয়েছেন, তার বাড়ি রংপুরের আলমনগরের রবার্টসনগঞ্জ এলাকায়। তার পরিবারের সন্ধান নেওয়ার চেষ্টা চলছে। বর্তমানে ওই অর্থ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দপ্তরের সমাজকর্মী রশিদুল ইসলামের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
আরটিভি/এএএ/এস