কিশোরগঞ্জে জমে উঠেছে চামড়ার হাট। হাট জমে উঠলেও দাম কম থাকায় ধস নেমেছে চামড়ার বাজারে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) শহরের প্রাচীনতম হাট মোরগ মহাল কোরবানি চামড়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চামড়া নিয়ে এসেছেন খুচরা ও মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। ঢাকার বাহিরে প্রতি পিস গরুর চামড়া ১ হাজার ১৫০ টাকা সরকার নির্ধারিত করলেও ব্যবসায়ীরা কিনেছেন আরও কম দামে।
তারপরও ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে না পাড়ায় পুঁজি হারানোর ঝুঁকিতে ব্যবসায়ীরা। প্রতি পিস গরুর চামড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের ৯০০ থেকে একহাজার টাকা খরচ হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ছাগলের চামড়া প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। অথচ সরকার নির্ধারিত লবণযুক্ত গরুর চামড়ার, প্রতি বর্গফুটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা। কাগজে কলমে সরকার নির্ধারণ করলেও বাজারে এর প্রতিফলন নেই।
চামড়া ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, আমরা গরুর কাঁচা চামড়া আকার বেধে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা ধরে কিনে এনেছি। প্রতি চামড়া পেছনে আরও ২০০ টাকা ধরে খরচ হয়েছে। এখন বাজারে দাম বলে ৬০০-৭০০ টাকা। আমি ৪০০ পিস চামড়া কিনে খুবই বিপদে আছি। কি করবো বুঝতে পারছি না।
কাপাসিয়া থেকে আসা ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ব্যাপারী বলেন, সরকার বলেছিল লবণ দেওয়া চামড়া এক হাজার ৬০০ টাকা করে দাম দিবে। বাজারে এসে হতাশ সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা করে বিক্রি করতে পারছি। ঈদের আগে লবণের দাম ছিল ৭০০ টাকা মণ। ঈদের পর ৯৭০ টাকা করে কিনেছি। এই ব্যবসার জন্য আমাকে ৪৫ হাজার টাকার লবণ কিনতে হয়েছে।
কোরবানি চামড়া বাজারের ইজারাদার আরিফুল ইসলাম আরজু বলেন, চামড়া শিল্পটা ধ্বংসের একদম দারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। ছোট ব্যবসায়ী অনেকে আছেন যারা ১০-২০ হাজার টাকার চামড়া কিনে আনার পর বাজারে ৮-১০ হাজার টাকা বিক্রি করতে হয়। প্রতিবারই সরকারের পক্ষ থেকে গৎবাঁধা দাম নির্ধারণ ও তদারকি না করায় ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েন।
সরকার মিডিয়াতে দাম প্রচার করার পর দায়িত্ববান কাউকে পাওয়া যায় না। চামড়া ক্রয় বিক্রয়ের ব্যাপারে কাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তা আজও জানতে পারলাম না। মোরগ মহল চামড়ার এই হাটে প্রতি মৌসুমে কয়েক কোটি টাকার চামড়া কেনা বেচা হয়। এবারও প্রায় তিন কোটি টাকার চামড়া বিক্রি হবে বালে আশা করছি।
আরটিভি/এএএ/এস