দুর্নীতির দায়ে শাহজাদপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের ৩ জন বরখাস্ত
সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরের সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের আলোচিত ঘটনার জেলা রেজিস্ট্রারের তদন্ত প্রতিবেদন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রার (আইজিআর) কার্যালয় থেকে বের হয়ে সোমবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
দীর্ঘ আট কর্মদিবসের তদন্ত প্রতিবেদনটি সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. মঞ্জুরুল ইসলাম রোববার আইজিআর কার্যালয়ে পাঠান। ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর আইজিআরের পৃথক সুপারিশসহ সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সুপারিশে সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সাময়িক বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছেন আইজিআর নিজেও।
সোমবার বিকেলে আইজিআর ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এ প্রতিবেদকে মুঠোফোনে বলেন, ‘সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসের পার পাবার কোনও সুযোগই নেই। জেলা
রেজিস্ট্রারের তদন্ত প্রতিবেদন সুপারিশসহ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলা রেজিস্ট্রার যে ধরনের সুপারিশ করেছেন, একই ধরনের আরেকটি পৃথক সুপারিশসহ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ে এটি এখন
প্রক্রিয়াধীন থাকবে। খুব শিগগিরই সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসও শাস্তি পাবেন বলেও মন্তব্য তার।
এদিকে, সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রক্রিয়াগত কিছুটা বিলম্ব হলেও তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে ও আইজিআরের নির্দেশে আপাতত শাহজাদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের তিন দুর্নীতিবাজ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. মঞ্জুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাদের তিনজনকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।ওই আদেশপত্রটি রোববার বিকেলে তার অফিসের ম্যাসেঞ্জার মারফত শাহজাদপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা রেজিস্ট্রার মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ডকৃত কর্মচারীরা হলেন, শাহজাদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসার সুব্রত দাসের ঘুষ বাণিজ্যে সহযোগী একই অফিসের দায়িত্বরত মহরার আব্দুস সালাম, নকল নবিশ সুমন আহম্মেদ ও দৈনিক মজুরির চুক্তিতে অফিস সহায়ক আনিছুর রহমান।
জমিদাতা-দলিল গ্রহিতাদের প্যাঁচে ফেলে অবাধে ঘুষ বাণিজ্য, দালাল চক্রের দৌরাত্ম বৃদ্ধিতে সহায়তা, জমির প্রকৃত বাজারমূল্য কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি, কতিপয় অসাধু দলিল লেখকের সঙ্গে ঘুষের ভাগবাটোয়ারা, ঊর্ধ্বতনদের
অনুমতি ছাড়া দলিল সম্পাদন বন্ধ রেখে অফিসে সংবাদ সম্মেলন ও গাছ বিক্রির অভিযোগে সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসসহ চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। তদন্তে তারা সবাই দোষী সাব্যস্ত হলে সাময়িক বরখাস্ত ও তাদের বিভাগীয় শাস্তির জন্য আইজিআর বরাবর সুপারিশ পাঠান জেলা রেজিস্ট্রার।
প্রসঙ্গত, সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসসহ তার সহযোগীদের ঘুষ নেবার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুকে’ ভাইরাল করেন শাহজাদপুরের মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সোহেল রানা। এ বিষয়ে আরটিভি অনলাইনে গেল ২৯ আগস্ট উৎকোচ ছাড়া কোনও দলিল পাস করেন না তিনি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। পরে এ বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সকল গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
জেবি
মন্তব্য করুন