এস আলমের ৮২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা
দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগ্রুপ এস আলমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২৬ ব্যাক্তি এবং ৫৬ প্রতিষ্ঠানকে শেয়ার কেনা-বেচা ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এই ৮২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিএসইসিকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে অধিষ্ঠিত পরিচালক এবং প্রতিনিধি পরিচালক সবাই চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট মর্মে জানা গেছে। এই গ্রুপের বা গ্রুপ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ঋণ নিয়মাচারের ব্যত্যয় করে পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবে বিভিন্ন ব্যাংক হতে বিশাল অংকের ঋণ ও বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করেছে মর্মে সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে এ ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে অবনতি হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা একই গ্রুপ সংশ্লিষ্ট হওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের গৃহীত ঋণ ও বিনিয়োগসমূহ আদায়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনাধীন রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্বে উল্লিখিত ব্যাংকসমূহের পরিচালকরা ও তাদের পরিবার এবং পরিচালকদের মনোনয়ন প্রদানকারী ব্যাংকের শেয়ারধারক প্রতিষ্ঠানসমূহ (প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতকৃত তালিকা) যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে তাদের ধারণকৃত শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তর করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা এবং নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের তালিকা ইতোমধ্যে বিএসএসসি থেকে স্টক এক্সচেঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম), স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ছেলে আহসানুল আলম, মেয়ে মায়মুনা খাতুন। এছাড়াও রয়েছেন পরিবারের সদস্য আতিকুর নেসা, শারমিন ফাতেমা, মারজিনা শারমিন, ফারজানা বেগম, শাহানা ফেরদৌস, রহিমা বেগম, মোহাম্মদ আবদুল মালেক, আশরাফুল মোস্তফা চৌধুরী, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, জামাল মোস্তফা চৌধুরী, বেলাল আহমেদ, মাহমুদুল আলম, আশরাফুল আলম, বদরুন নেসা আলম, ওয়াহিদুল আলম সেথ, রোকয়ে ইয়াসমিন, শহিদুল আলম, হালিমা বেগম, রাশেদুল আলম, মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ আদিল, ওসমান গনি ও শহিদুল আলম।
আর নিষেধাজ্ঞা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, এবিসি ভেঞ্চার লিমিটেড, আরমাডা স্পিনিং, বাংলাদেশ পেট্রো কেমিক্যাল, বিএলইউ ইন্টারন্যাশনাল, ব্রিলিয়ান্ট বিজনেস কোম্পানি, ব্রডওয়ে ইম্প্যাক্স কোম্পানি, সি অ্যান্ড এ এক্সেসরিস, সি অ্যান্ড এ ফেব্রিকস, কারোলিনা বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ডাইনামিক ভেঞ্চার লিমিটেড, এক্সেল ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, এক্সেলসিয়র ইম্পেক্স কোম্পানি, ফতেহাবাদ ফার্ম, জেনেসিস টেক্সটাইল এক্সেসরিস অ্যান্ড অ্যাপারেলস, গ্র্যান্ড বিজনেস লিমিটেড, হাসান আবাসন প্রা. লিমিটেড, হাইক্লাস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, হলিস্টিক ইন্টারন্যাশনাল, হানিওয়েল সিকিউরিটিজ করপোরেশন, আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলস, জেএমসি বিল্ডার্স, কর্ণফুলী ফুডস, কর্ণফুলী প্রাকৃতিক গ্যাস, কিংস্টোন ফ্লাওয়ার মিল, কিংস ওয়ে এনডিভার্স লিমিটেড, লিডার বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, লায়ন সিকিউরিটিজ, লায়নহেড বিজনেস রিসোর্স, ম্যারাথন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মিল্কওয়ে ইম্প্যাক্স লিমিটেড, মডার্ন প্রপার্টিজ, নওশিন স্টিল, ওশ্যান রিসোর্ট, পদ্মা এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ট্রেডিং, প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল, পিকস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, পারসেপটা এন্ডিভার্স লিমিটেড, প্লাটিনাম এন্ডিভার্স লিমিটেড, পোর্টম্যান সিমেন্ট লিমিটেড, প্রাসাদ প্যারাডাইস রিসোর্ট, পুষ্টি ভেজিটেবল ঘি, রিল্যায়াবল এন্টারপ্রাইজ, শাহ আমানত প্রাকৃতিক গ্যাস, সলিড ওয়্যাক ইন্স্যুরেন্স, সোনালী কর্পো লজিস্টিক, ইউনিগ্লোব বিজনেস রিসোর্স, ইউনিক ইনভেস্টমেন্ট সিকিউরিটিজ, ইউনিটেক্স সিমেন্ট, ইউনিটেক্স স্টিল মিলস, ইউনিটেক্স ট্রি লিমিটেড, ভাইব্রান্ড এন্টিভার্স, ভেক্টর ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস, ওয়েসকো লিমিটেড এবং ওয়েস্টার্ন ডিজাইনার লিমিটেড।
মন্তব্য করুন