ঢাকাশনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

নোবিপ্রবির নবীন শিক্ষার্থীর ৭৪ শতাংশ চট্টগ্রাম বিভাগের

মো. রিয়াদুল ইসলাম, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ , ১১:৩৩ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) নবীন শিক্ষার্থী তথা স্নাতক ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে এবং বাকি ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর বাড়ি অন্য ৭ বিভাগে। এর মাঝে সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগের যা মোট নবীন শিক্ষার্থীর ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের সাথে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থী সংখ্যায় এমন মহাফারাক হওয়ার কারণ হিসেবে গুচ্ছপদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দায়ী করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক ছাত্রসংগঠনের নেতারা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের একটি সূত্র হতে এ তথ্য পাওয়া যায়।

জানা যায়, গত বছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে মোট ১৪৫৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এর মাঝে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ভর্তি হয়েছেন ১০৮৫ জন যা মোট নবীন শিক্ষার্থীর ৭৪.৪১ শতাংশ। ঢাকা বিভাগ থেকে ভর্তি হয়েছেন ১১৭ জন (৮.০২ শতাংশ),রংপুর বিভাগ থেকে ভর্তি হয়েছে ৫৬ জন (৩.৮৪ শতাংশ), ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে ভর্তি হয়েছে ৫৪ জন (৩.৭০ শতাংশ), রাজশাহী বিভাগ থেকে ভর্তি হয়েছে ৩৯ জন শিক্ষার্থী (২.৬৭ শতাংশ), বরিশাল বিভাগ থেকে ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন (২.৫৩ শতাংশ), খুলনা বিভাগ থেকে ভর্তি হয়েছে ৩৫ জন (২.৪০ শতাংশ) এবং সিলেট বিভাগ থেকে ১৯ জন (১.৩০ শতাংশ)।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, দেশের ৬৪ জেলা গুলোর মধ্যে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে  সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী জেলা থেকে যা সংখ্যায় ২৯৯ জন। তবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয় নি খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে। পার্বত্য জেলা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী এসেছে রাঙামাটি জেলা থেকে,সবচেয়ে কম বান্দরবান থেকে। শিক্ষার্থী সংখ্যায় নোয়াখালীর পর অবস্থান করছে চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলা (২০৫ জন), ৩য় তে অবস্থান করছে কুমিল্লা (১৮০ জন), ৪র্থ অবস্থানে ফেনী (১০৭ জন), ৫ম অবস্থানে লক্ষ্মীপুর (৮৯ জন)।

বিভাগীয় জরিপে জানা যায়, ঢাকা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে ঢাকা জেলা থেকে,সবচেয়ে কম শরীয়তপুর ও মানিকগঞ্জ থেকে।রংপুর বিভাগের রংপুর জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী এসেছে,সবচেয়ে কম লালমনিরহাটের। ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে শিক্ষার্থী এসেছে ময়মনসিংহ জেলা থেকে, সবচেয়ে কম এসেছে নেত্রকোনা থেকে। রাজশাহী বিভাগে বগুড়া জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী এসেছে,সবচেয়ে কম জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে। বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী এসেছে,সবচেয়ে কম পিরোজপুর থেকে। খুলনা বিভাগের মধ্যে বেশি শিক্ষার্থী সাতক্ষীরা জেলার,কোনো শিক্ষার্থী নেই চুয়াডাঙ্গা জেলায়। সিলেট বিভাগের সিলেট ও হবিগঞ্জ থেকে বেশি শিক্ষার্থী এসেছে,সবচেয়ে কম সুনামগঞ্জের।

এমন অনুপাতের ফলে ধীরে ধীরে নোবিপ্রবি আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে মনে করছেন  শিক্ষার্থীরা।বাকি সকল বিভাগ থেকে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়াতে হলে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জোরালো দাবি জানিয়েছে তারা।এছাড়াও নোয়াখালীর সাথে অন্যান্য বিভাগের যোগাযোগ ব্যবস্থাকেও দায় দিচ্ছেন নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন জালালাবাদ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তানজিম নোবিপ্রবি প্রশাসনকে নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা নিতে আহ্বান জানানোসহ, শিক্ষার্থীদের মাঝে বিচিত্রতা আনতে পদক্ষেপ গ্রহন করার অনুরোধ জানান।

নোবিপ্রবির বৃহত্তর ময়মনসিংহ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন,"গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভর্তির সময় নিজেদের অঞ্চলকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।এর কারণে নোবিপ্রবিতে ময়মনসিংহসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।নোবিপ্রবিতে ময়মনসিংহ বিভাগের শিক্ষার্থী কম ভর্তি হওয়ার পিছনে যাতায়াত ব্যবস্থা বড় প্রভাব ফেলে আসছে।

নোবিপ্রবির বৃহত্তর বরিশাল স্টুডেন্টস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, বৃহত্তর বরিশাল বিভাগ থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি কম হওয়ার পেছনে বেশ কিছু যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে বলে আমি মনে করি, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু হওয়ার পূর্ববর্তী বছরগুলোতে আমরা দেখেছি, বৃহত্তর বরিশাল বিভাগ থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেন এবং চান্স প্রাপ্ত বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতেন কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু হওয়ার পর এর চিত্র অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে।নোবিপ্রবির চেয়ে কাছাকাছি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভাগকে প্রাধান্য দিচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী। এছাড়াও, বরিশাল থেকে নোয়াখালী সরাসরি যাওয়ার সহজ রুট নেই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মো.রেজোয়ানুল হক আরটিভিকে বলেন, আগামী বছর গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

আরটিভি/এএএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |