ঢাকারোববার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট যেন শিক্ষার্থীদের জীবনের নীরব দুর্যোগ

ইবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ , ০৩:৫৩ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

চার বছরের স্নাতক কোর্স শেষ করতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সময় লাগছে পাঁচ থেকে ছয় বছর। সেশনজট এখন আর শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বপ্নভঙ্গের বাস্তব গল্প। যথাসময়ে স্নাতক শেষ না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ চাকরির সার্কুলার হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

কেন বছরের পর বছর ধরে একই সমস্যায় আটকে আছে শিক্ষাজীবন? উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যায় অপ্রয়োজনীয় ছুটি, শিক্ষক সংকট, অনিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষা ও ফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা আর প্রশাসনিক দুর্বলতার এক জটিল চক্র।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকদের ক্লাসের প্রতি অনীহা ও প্রশাসনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অভাবেই সেশনজট বাড়ছে। এ ছাড়া নতুন বিভাগগুলোয় পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ছেন।

বিজ্ঞাপন

তীব্র সেশনজটে ধীর গতিতে চলছে ইবির বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পরিসংখ্যান, সিএসই, আইন, আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ, সমাজকল্যাণ, ফলিত রসায়ন ও কেমিক্যাল এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজসহ প্রায় ২০টিরও অধিক বিভাগ।

এ বিষয়ে ১৯ থেকে ২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী গালিব বলেন, আমাদের সেশনটা শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের শুরুর দিকে। এখন ২০২৫ চলে, অথচ এখনও আমাদের চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়নি। নতুন ব্যাচ এসে ক্লাস করছে, আর আমরা পুরনো ব্যাচ হয়েও ঝুলে আছি। কখন ডিগ্রি হাতে পাব, সেটা ভেবে শুধু হতাশাই বাড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান বলেন, ক্লাস চলে খণ্ডকালীনভাবে, শিক্ষক সংকট থাকায় নিয়মিত লেকচার হয় না। একটা পরীক্ষা শেষ হয়, পরেরটার জন্য আবার কয়েক মাস অপেক্ষা। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুতে না পারায় ভবিষ্যতের প্ল্যানিংগুলোও ভেঙে পড়ছে। সেশনজট যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বুরহান উদ্দিন বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট বর্তমানে হতাশায় পরিণত হয়েছে। একজন শিক্ষার্থীর অনার্স শেষ করতে সময় লাগছে ছয় থেকে সাত বছর। সবচেয়ে বড় হতাশার বিষয় এটা যে, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরে দেখলাম দুজন ভিসি তাদের দায়িত্ব পালন করে চলে গেছেন এবং বর্তমানে আরেকজন নিযুক্ত হয়েছেন। তবু এখনও পর্যন্ত আমার পড়াশোনা শেষ হলো না।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামুলক বেশি ছুটির রেওয়াজ রয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম এ বছর থেকে ছুটি কিছুটা কমিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বৃদ্ধি করার জন্য তবে একাডেমিক ক্যালেন্ডার আগে থেকে তৈরি হওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আমরা ছুটি কমিয়ে নিয়ে একাডেমিক সিডিউল বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। আশা করি, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

আরটিভি/এমকে/এস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |