ঢাকাশনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাকৃবিতে হলে প্রাণী উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

বাকৃবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫ , ০১:৫৯ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সুলতানা রাজিয়া হলে প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানোর বিষয়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৫ মে) বিকেলে ‘ভয়েসলেস, নট ওয়ার্থলেস–সেভ ক্যাম্পাস অ্যানিম্যালস!’ স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের প্রধান ফটকে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সচেতন নাগরিকরা অংশ নেন।

জানা যায়, বিগত শনিবার (৪ মে) হলের পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য হিংস্র প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে- এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুলতানা রাজিয়া হল কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এই মর্মে সুলতানা রাজিয়া হলে অবস্থানরত সব আবাসিক ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, হলে কুকুর, বিড়াল ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণী হলের পরিবেশ দূষিত করছে। হলের পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য হলে হিংস্র প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। উক্ত অভিযানে সব আবাসিক ছাত্রীদেরকে সহযোগিতা করার জন্য বলা হলো।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ এবং সমালোচনা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।

বিক্ষোভ সমাবেশে ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ এর প্রস্তাবিত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুব আলম বলেন, প্রাণী কল্যাণ আইন অনুসারে প্রাণীকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করা যাবে না। যদি করা হয় আর যে বা যারা করবেন তার জন্য ৬ মাসের জেল অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে তিনি দণ্ডিত হতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, পোষা প্রাণীরা মানুষের পরম বন্ধু। এমনকি বেওয়ারিশ কুকুরও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। এভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালালে পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। প্রাণীর জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে, ভ্যাকসিন দেওয়ার মাধ্যমে আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারি। প্রাণী অধিকার যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখা উচিত।

বিজ্ঞাপন

এ সময় অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য সচিব ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী আল ফারুক বলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি অনুষদ, পশু পালন অনুষদের মতো দুটি অনুষদ রয়েছে, যারা প্রাণীদের সুরক্ষা ও লালন পালন নিয়ে কাজ করে থাকে, সেখানে সুলতানা রাজিয়া হলের এমন বিজ্ঞপ্তি আমাদের জন্য লজ্জাজনক।

এ বিষয়ে সুলতানা রাজিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হলের অর্ডিন্যান্স অনুসারে কোনো জীব-জানোয়ার হলে রাখা যাবে না। মূল ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন হলের একজন নারী শিক্ষার্থী একটি বিড়ালকে লাথি দেয়, পরে বিড়ালটি মেয়েটাকে আঁচড় দেয়। পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থী তার মাকে এ বিষয়ে অবগত করলে শিক্ষার্থীর মা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং মেয়ের চিকিৎসার জন্য হল প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। ঘটনা গুরুতর হয়ে গেলে সেসময় ওই নারী শিক্ষার্থীকে থামানোর জন্য আমার অনুপস্থিতিতে হলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার বা সুপারভাইজার কেউ একজন ওই নোটিশটি দিয়ে দেয়। এটি একটি সামান্য বিষয়, এই বিষয়কে কেন্দ্রীভূত করে আমার সঙ্গে কথা না বলে মানববন্ধন করতে হবে কেন? আমি হলের প্রভোস্ট, যদিও এই নোটিশের ব্যাপারে আমি জানতামই না।

উচ্ছেদ অভিযান হবে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভোস্ট বলেন, মেয়েদের মধ্যেই তো গ্রুপিং রয়েছে। একদল বিড়ালকে আদর করে খাওয়ায়, আরেকদল বিড়ালকে কাছে আসতে দেবে না। এতেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। বাইরে থেকে হলে বিড়াল ঢোকে, অনেক সময় কুকুরও দেয়াল টপকে ঢোকে। ওই নোটিশটি তারা আমার অজান্তেই দিয়েছেন। এসব অভিযান, এগুলো কিছুই হবে না।

আরটিভি/এমকে/আইএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |