ক্রিকেট যে চরম অনিশ্চয়তার খেলা তা ফের প্রমাণ করলো পাকিস্তান। উড়তে থাকা ইংল্যান্ডকে মাটিতে নামিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে উঠলো সরফরাজবাহিনী।
বুধবার কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনসে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তানের দুর্দান্ত বোলিং ও ফিল্ডিং নৈপুণ্যে মাত্র ২১১ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট ও ৭৭ বল হাতে রেখে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ‘আনপ্রিডেক্টেবল’ পাকিস্তান।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের দেয়া টার্গেটের জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা করেন পাকিস্তানের দু’উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আজহার আলি ও ফখর জামান। এ যেনো বদলে যাওয়া এক পাকিস্তান। হুক, পুল ও ড্রাইভে ইংলিশ ফিল্ডারদের বেসামাল করে অবিচ্ছিন্ন প্রথম উইকেট জুটিতে তারা তোলেন ১১৮ রান। এতেই দলটির জয়ের পথ অনেকটা মসৃন হয়ে যায়।
অবশ্য দলীয় ১১৮ রানেই আদিল রশিদের বলে জস বাটলারের স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফেরেন ফখর জামান (৫৭)। ফেরার আগে তুলে নেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম হাফসেঞ্চুরি। তার ৫৮ বলে ৫৭ রানের দুরন্ত ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭ চার ও ১ ছক্কায়।
ফখরের বিদায়ের পর নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের টপ পারফরমার বাবর আজম। তাকে নিয়ে ধীরে ধীরে জয়ের পথে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন আজহার আলি। তবে তাদের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান জ্যাক বল। দলীয় ১৭৩ রানে বোল্ড করে আজহারকে ফিরতে বাধ্য করেন তিনি। ততক্ষণে জয়ের দ্বারপ্রান্তে দলকে পৌঁছে দেন এ ওপেনার। ফেরার আগে ১০০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৭৬ রানের নায়কোচিত ইনিংস খেলেন টেস্ট স্পেশালিস্ট।
আজহার আলি ও ফখর জামানের গড়ে দেয়া শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে পরবর্তীতে মোহাম্মদ হাফিজকে নিয়ে বাকি কাজটুকু সারেন বাবর আজম। দু’জনই সমানতালে ব্যাট চালিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। বাবর ৩৮ ও হাফিজ ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন।
ইংল্যান্ডের হয়ে দু’টি উইকেট ভাগাভাগি করে নেন জ্যাক বল ও আদিল রশিদ।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সেমিফাইনালের চাপে যেন চিড়ে চেপ্টা স্বাগতিকরা। হাসান আলি, জুনায়েদ খান ও অভিষিক্ত রুম্মন রইসদের আগুন ঝরানো বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি কোনো ইংলিশ ব্যাটসম্যান। হাফসেঞ্চুরিই করতে পারেননি কেউ।
দলীয় ৮০ রানে দু’ওপেনারকে হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। এরপর রুটকে সঙ্গে নিয়ে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন ইংলিশ দলপতি ইয়ন মরগান। তবে দলীয় ১২৮ রানে রুটকে কটবিহাইন্ড করিয়ে ৪৮ রানের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেন শাদাব খান। আর ১৩ রান যোগ হতেই বিদায় নেন মরগান।
এরপর যেন আসা-যাওয়ার খেলায় মাতেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে মাত্র ২১১ রানেই অলআউট হয়ে যায় তারা।
এদিনও পাকিস্তানের সেরা বোলার হাসান আলি। ১০ ওভার বল করে মাত্র ৩৫ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে অল্প রানে বেঁধে রাখতে দারুণ ভূমিকা রাখেন জুনায়েদ খান ও রুম্মন রইন। ১ উইকেট নিয়ে তাতে সহায়তা করেন শাদাব খান।
ডিএইচ