গত ১৪ মার্চ কানাডার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বহুল আলোচিত সিনেমা ‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতা আজিজুর রহমান। বগুড়ার গ্রামের বাড়ি শান্তাহারে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন তিনি।
কিংবদন্তী এই নির্মাতার রুহের মাগফেরাত কামনায় গতকাল (১২ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় বিএফডিসির জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে এক স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রয়াত নির্মাতার স্মৃতিচারণ করেছেন চিত্রনায়ক আলমগীর, ইলিয়াস কাঞ্চন, ওমর সানী, চিত্রনায়িকা সুজাতা, রোজিনা, অঞ্জনা, চলচ্চিত্র পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, আব্দুল লতিফ বাচ্চু, কাজী হায়াত, মনতাজুর রহমান আকবর, নির্মাতা আজিজুর রহমানের মেয়ে বিন্দি রহমান প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে মেয়ে বিন্দি রহমান বলেন, 'আমার বাবা একজন প্রকৃত মানুষ ছিলেন। অনেক পরিশ্রম করে তিনি এই পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন। বাবা ছিলেন কাজ পাগল মানুষ। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তাকে দেখেছি কাজের মাঝে ডুবে থাকতে। তবে তিনি কখনো টাকার জন্য কাজ করতেন না। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো আলোচনায় আছে যুগের পর যুগ।'
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, 'ব্যক্তিগত জীবনে বাবার কোনো আক্ষেপ ছিল না। কিন্তু সন্তান হিসেবে আমাদের আক্ষেপ রয়েছে। ৫২টি চলচ্চিত্রের নির্মাতা আমার বাবা। যিনি একাধারে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক, একজন অংকন শিল্পী, প্রযোজক, কাহিনিকার, পোস্টার মেকার, সেট ডিজাইনার, টাইটেল মেকার, মেকাপ আর্টিস্ট। তিনি একজন ভর্সেটাইল পর্সোনালিটির মানুষ হয়েও একবারও জাতীয় কোনো পুরস্কার পেলেন না। পেলেন না একটি আজীবন রাষ্ট্রীয় সম্মানও। এর দায়ভার কি রাষ্ট্র নিতে পারবে?'
বিন্দি জানান, 'বাবা সারা জীবন চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যয় করেছেন। তিনি চলচ্চিত্রকে এতটাই ভালোবাসতেন যে, জীবনের শেষ দিনগুলোতে চলচ্চিত্রের মানুষদের কল্যাণের জন্য কিছু কথা নিজ হাতে লিখে রেখে গেছেন এবং পরিকল্পনা করেছিলেন একটি ছাত্রবৃত্তির ব্যবস্থা করার। সবার সহযোগিতা পেলে তার সন্তান হিসেবে আমরা উনার স্বপ্নের এবং পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে চাই।'