আগামী সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়িত হবে প্রাচ্যনাট প্রযোজিত নাটক ‘পুলসিরাত’। এদিন দর্শক আসনে বসে নাটকটি উপভোগ করবেন সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র ‘বিউটি সার্কাস’ টিম।
তাদের মধ্যে থাকবেন পরিচালক মাহমুদ দিদার, অভিনেত্রী জয়া আহসান, অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, তৌকির আহমেদ, এ বি এম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, গাজী রাকায়েত, মনিসা অর্চিসহ টিমের অন্যান্য সদস্যরা। নাটক শেষে ‘বিউটি সার্কাস’ টিম নাটক এবং চলচ্চিত্রটি নিয়ে দর্শকদের সঙ্গে আড্ডায় অংশগ্রহণ করবেন।
ফিলিস্তিনি লেখক ঘাসান কানাফানির উপন্যাস ‘মেন ইন দ্য সান’ অবলম্বনে ‘পুলসিরাত’ নাটকটির অনুবাদ করেছেন মাসুমুল আলম। নাট্যরুপ দিয়েছেন মনিরুল ইসলাম রুবেল এবং নির্দেশনা দিয়েছেন কাজি তৌফিকুল ইসলাম ইমন।
আবু কায়েস তার দুই সন্তান ও এক স্ত্রী রেখে বন্ধুর পরামর্শে নতুন এক স্বচ্ছন্দময় স্বচ্ছল জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কুয়েত পাড়ি দিতে চায়। তার স্বপ্ন, সন্তানেরা স্কুলে পড়াশোনা করতে পারবে। বয়সের কারণেই হোক বা চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যই হোক- স্বভাবে বেশ নরম ও কিছুটা ভীতু স্বভাবের আবু কায়েস। আর তার ঠিক বিপরীত চরিত্রের আসাদ। বয়সে সে তরুণ। কিছুটা রাগী এবং স্বভাবে বেশ কৌশলী। সে এর আগেও সীমান্ত পার হয়ে অবৈধ পথে কুয়েত যেতে চেষ্টা করেছিল। নিশ্চিত ও উন্নত ভবিষ্যত, চাচাতো বোনকে বিয়ে করার স্বপ্ন, আবার একই সঙ্গে চাচার করা অপমান তাকে যুগপৎ তাড়িত করে।
অন্যদিকে ষোল বছরের মারওয়ান স্কুলের পড়াশোনা ছেড়ে নিজের পরিবারের দায়িত্বের চাপে পাড়ি দিতে চায় স্বপ্নের কুয়েতে। নিজের বড় ভাই কুয়েত থাকে। সেখানে সে কাজ করে দেশে পরিবারের জন্য টাকা পাঠাতো। কিন্তু বিয়ে করে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। তার বাবা সন্তানদের ভরণ পোষণে অপারগ হয়ে নিজের স্বচ্ছল জীবনের স্বপ্ন পূরণে এক পঙ্গু মহিলাকে বিয়ে করে আলাদা হয়ে যায়। মারওয়ান তাই পরিবারকে বাঁচাতে অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি দিতে চায় কুয়েত।
তারা সবাই ঘটনাক্রমে আবুল খাইজুরানের শরণাপন্ন হয়। আবুল খাইজুরান একজন পানিবাহী ট্যাঙ্ক লরির ড্রাইভার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সে ব্রিটিশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছে। আবার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথেও কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। সেখানে একবার আকস্মিক হামলায় সে বোমা বিস্ফোরণের শিকার হয়। এই আবুল খাইজুরান কায়েস, আসাদ আর মারওয়ানকে স্বপ্নের কুয়েত পর্যন্ত নিয়ে যেতে এগিয়ে আসে। বিনিময়ে সে তিন জনের কাছ থেকে দশ দিনার করে নেবে। তার পানিবাহী লরিতে করে তিনজনকে নিয়ে সে সীমান্ত পাড়ি দিবে। খাইজুরানের জন্য সেটা কোন কষ্টকর কিছু না।
আগস্ট মাসের প্রচণ্ড গরমে, রোদে পুড়ে মরুভূমির পথে লরিটি এগিয়ে যায়। তিনটি হতভাগ্য বিড়ম্বিত জীবন ছুটে চলে স্বপ্নময় এক নতুন স্বচ্ছল জীবনের প্রত্যাশায়। পাড়ি দিতে ছুটে চলে এক পুলসিরাত!
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন আজাদ আবুল কালাম, শাহরিয়ার সজীব, মনিরুল ইসলাম রুবেল, সাইফুল ইসলাম জার্নাল, চেতনা রহমান ভাষা প্রমুখ। সেট ডিজাইন করেছেন শাহীনুর রহমান, সংগীত পরিকল্পনায় নীল কামরুল, আলোক পরিকল্পনায় বাবর খাদেম।