ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা নূতন। এফডিসিতে ছিল তার তুমুল কর্মব্যস্ততা। এখন অভিনয়ে নিয়মিত নন, এফডিসিতেও তেমন আসেন না। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সরব তিনি। বিভিন্ন ইস্যুতে খোলামেলা কথা বলেন এ অভিনেত্রী।
সম্প্রতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে, সেই ইস্যুতে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন নূতন।
নায়িকার আক্ষেপ, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে এমন লেখা লিখতে হবে, তা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। এ দেশে নায়িকা হওয়া এখন আমার জন্য পাপ মনে হয়।
তিনি যোগ করেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে টিকটক ক্যাটাগরি নেই? টিকটক আর ফেসবুক ফলোয়ার ক্যাটাগরি রাখার আবেদন করছি। সঙ্গে ভাইরাল ক্যাটাগরি রাখলে মন্দ হয় না।
নূতন লিখেছেন, একসময় এই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর কাজ করতাম। এখন তা (জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার) যাকে তাকে অন্য পুরস্কারের মতো দেওয়া হয়। অনেকটা ফেসবুক অ্যাওয়ার্ডের মতো। যার ফলোয়ার হাইপ বেশি, সে পুরস্কার নিয়ে ছবি তুলবে। তাতে স্পনসর আসবে বা পুরস্কারের জাত বাড়বে।
শঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি লেখেন, আমি ভয়ে আছি অন্য কারণে। হুট করে আবার টিকটক বা ফেসবুকের মহরত নায়ক-নায়িকা বা পাঁচটা ছবি করে তিনটা পুরস্কার পাওয়া নায়ক-নায়িকা এসে যদি বলে, আপনি আর আমি সমান। আমিও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি, আপনিও পেয়েছেন। সে কথার উত্তর আমি কি দিয়ে দেব? এমনিতেই ভয়ে আছি, অনেকে বলে আপু আপনি এত বড় নায়িকা, আপনার ফেসবুক ফলোয়ার নেই কেন? আমার ৫-৬ লাখ ফলোয়ার। শেষ একটা কথাই মনে পড়ল, বিচারক তোমার বিচার করবে কে?
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে মূল থেকে পার্শ্ব প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন নূতন। সত্তর-আশির দশকে সুজাতা, সুচন্দা, কবরী, শাবানা, ববিতার ভিড়ে তিনিও এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আলো ছড়িয়েছেন।
নূতনের অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘রাজনর্তকী’, ‘পাগলা রাজা’, ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’, ‘বসুন্ধরা’, ‘প্রাণসজনী’ ‘প্রেমবন্ধন’, ‘স্ত্রীর পাওনা’, ‘মানসী’, ‘রাজমহল’, অবিচার’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘বদলা’, ‘ননদভাবি’, ‘রাঙাভাবি’, ‘অলংকার’, ‘বদনাম’, ‘শাহজাদা’, ‘কন্যাবদল’, তাজ ও তলোয়া’, ‘কাবিন’, সোনার চেয়ে দামি, ‘ বাঁশিওয়ালা’, ‘সত্য-মিথ্যা’, পাহাড়ি ফুল, অশান্ত, ‘মালামতি’ ‘বাঁশিওয়ালা’, ‘আবদুল্লাহ’। প্রায় সব ছবিতেই বিশেষত্ব পেয়েছেন অপূর্ব নৃত্যশৈলীর কারণে। কীর্তনিয়া, শাস্ত্রীয়, কত্থক, ভারতনাট্যম, সর্পনৃত্য, বাউল, ফোক, আধুনিক, ওয়েস্টার্ন-চরিত্র অনুযায়ী নানা ধরনের নৃত্য সমাহারে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।