৮১-তে ফেরদৌসী মজুমদার, ৫১-তে ত্রপা
১৮ জুন, ১৯৪৩। দিনটি ছিল শুক্রবার। এ দিনেই পৃথিবীতে যাত্রা শুরু করেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার। ত্রিশ বছর পর (১৮ জুন, ১৯৭৩), সেদিন ছিল সোমবার। একইদিনে তার কোলজুড়ে আসে কন্যা ত্রপা মজুমদার। এরইমধ্যে জীবনের ৮০ বসন্ত পার করলেন মা, আর মেয়ে ৫০।
ফেরদৌসী মজুমদারের যখন জন্ম, সে আমলে ঘটা করে জন্মদিন পালনের বালাই ছিল না। এমনকি তার জন্মদিন কবে, দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সেটি জানতেনই না অভিনেত্রী। বিশেষ কোনো কারণে জন্মদিন জানার প্রয়োজন হলে বাবার লিখে রাখা ডায়েরিতে চোখ বুলাতেন।
মেয়ে ত্রপার বয়স তখন ছয় কি সাত। একদিন বাবার ডায়েরিতে চোখ বুলাতে গিয়ে চমকে ওঠেন ফেরদৌসী মজুমদার। তিনি প্রথম খেয়াল করেন, তারা মা-মেয়ে একইদিনে জন্ম নিয়েছেন। সেদিন মেয়েকে জড়িয়ে আবেগে ভেসেছিলেন এই কিংবদন্তি। সেদিন থেকেই দিনটি বিশেষ হয়ে যায়।
এরপর থেকে ঘরোয়াভাবেই মা-মেয়ের জন্মদিন উদযাপিত হতো। দুজন দুজনকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগতেন। তবে ত্রপার বিয়ের পর চিত্র খানিকটা পরিবর্তন হয়েছে।
বিশেষ দিনটিতে উপহারণস্বরূপ মায়ের পছন্দের জিনিস নিয়েই অপেক্ষা করেন ত্রপা মজুমদার। মা যদি কখনও কোনো প্রয়োজনীয় জিনিসের কথা বলতেন, সেটি টুকে রাখতেন মেয়ে। কখনও সঙ্গে সঙ্গে মাকে এনে দিতেন, আবার কখনও জন্মদিনে উপহার হিসেবে দিতেন। সেই তালিকায় থাকত গয়না ও নানান শৌখিন জিনিসপত্র। তবে এখন মা-মেয়ে একসঙ্গে সময় কাটানোটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৮০ বছর পূর্ণ করেও জীবনের এক দারুণ সময় কাটাচ্ছেন ফেরদৌসী মজুমদার। প্রতিটি বসন্তকে হাসিমুখে স্বাগত জানান। দীর্ঘ জীবনে তার মধ্যে নেই কোনো হতাশা, নেই অপ্রাপ্তি।
ফেরদৌসী মজুমদারের প্রত্যাশা, ‘জীবন থেকে একটা বছর চলে গেছে যাক, কিন্তু আমি যেন সুস্থ থাকি। আমি যেন বিছানায় না পড়ে যাই। যতদিন আছি যেন সচল, সক্রিয়, সদর্পে, সগর্বে বাঁচি।’
অন্যদিকে মেয়ে ত্রপা মজুমদারের প্রত্যাশা, যে অভিনয় দিয়ে ভক্তরা তাকে চেনেন, সেই অভিনয়ে এখনও অনেক কিছু দেওয়ার বাকি রয়েছে। আর তাই ভালো চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চান তিনি। দিন দিন তার সেই আগ্রহ বাড়ছে।
মন্তব্য করুন