মান্নার মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য স্ত্রীর
ঢাকাই সিনেমার প্রয়াত নায়ক মান্না চলে যাওয়ার ১৬ বছর পূর্ণ হলো শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি)। ২০০৮ সালের আজকের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই অভিনেতা। মাত্র ৪৪ বছর বয়সেই নিভে যায় তার জীবনপ্রদীপ।
তবে মান্নার মৃত্যু নিয়ে আজও ভিন্নমত পোষণ করেন তার স্ত্রী শেলী মান্না। এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মান্না।
সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন শেলী। তিনি বলেন, মান্না মাঝরাতে যখন বাসায় ফেরে তখন বুকে একটু ব্যথা করছিল। মান্না খুবই সতর্ক একজন মানুষ ছিলেন। আমরা হলে হয়তো এতটা ভাবতাম না। কিন্তু মান্না ইগনোর করে না। অ্যালার্জি হলেও চিকিৎসকের কাছে যায়। ওর অসুখ-বিসুখ বলতে কিছু ছিল না, শুধু অ্যাসিডিটি ছিল। যেহেতু ব্যথা কমছে না, মান্না ভাবল ইউনাইটেড হাসপাতালে যাই।
সেখানে যাওয়ার কারণ হিসেবে মান্নার স্ত্রী জানান, পিতামাতা সিনেমার শুটিং ইউনাইটেড হাসপাতালে করা হয়েছিল। তাই তখন তার মনে হয়েছিল, ইউনাইটেড হাসপাতাল হয়তো বেস্ট। ওয়েল অর্গানাইজড। মান্না কিন্তু নিজে গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে যায়। চিকিৎসকদের ভাষ্য, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। যদি কারও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, সে কোনোভাবেই গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবে না। একটা স্টেপও নিতে পারবে না।
শেলী আরও বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতাল আমাদের যেসব ফুটেজ দিয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে মান্না হেঁটেই হাসপাতালে ঢুকেছে। তার বিভিন্ন টেস্ট করিয়েছে। তারপর ভর্তি হয়েছে। তাকে কিন্তু কেউ ধরেও নেয়নি। ওই সময় মান্না খুবই স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন। গ্যাসের পেইন, হার্টের পেইন সেইম। চিকিৎসকরাও একইভাবে ট্রিটমেন্ট করেন।
মান্না যখন হাসপাতালে ভর্তি হলো, তখন ভোর পৌনে ৫টা। আমি যদি বাংলাদেশে থাকতাম, তাহলে তাকে হার্টের স্পেশালিস্ট দেখাতাম। কারণ আমার যখন হাত ভেঙে গিয়েছিল, তখন আমি অর্থোপেডিকস ডাক্তারের কাছেই গিয়েছিলাম। সাধারণ চিকিৎসকরা কিন্তু আমার হাত জোড়া লাগাতে পারবে না। কিন্তু মান্নার চিকিৎসা সাধারণ চিকিৎসকরা করেছে। ট্রিটমেন্ট করে যখন কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে। ৭টা ৪০-এর দিকে এসকে নামের একটি হার্টের ইনজেকশন দেয় তারা। অভিজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই এসব করা হয়েছে। আমরা কেস করেছি, এগুলো পয়েন্ট আছে।
শেলী বলেন, ওই ইনজেকশন দেওয়ার পরই মান্না গোঙানি দিয়ে বমি করে দেয়। তাদের চিকিৎসক রুটিন অনুযায়ী ৯টায় এসেছে। ডাক্তার ফাতেমার মান্নার আন্ডারে ট্রিটমেন্ট হয়। ওই হাসপাতালে কি প্রোসিডিউর ছিল না? যে ওই সময় ইমার্জেন্সিতে নিয়ে অভিজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা করা। তারা কিন্তু দুই ঘণ্টা ৪০ মিনিটের হিসাব দিতে পারেনি।
সবশেষ তিনি বলেন, চলতি বছরে মান্নার মৃত্যু প্রসঙ্গে আদালতে একটা শুনানি হবে। শুনানি হলে হয়তো এক যুগ পরে হলেও ন্যায়বিচার পাবেন। মানুষ জানবে যে মান্না কীভাবে মারা গেছেন।
মন্তব্য করুন