নাট্যকারদের মূল্যায়নই হচ্ছে না: রাজীব মণি দাস
রাজীব মণি দাস। টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের নতুন কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। কাজসহ নানা বিষয় নিয়ে তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন আরটিভির।
আরটিভি: টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের নতুন কমিটিতে আপনি সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। কেমন লাগছে?
রাজীব মণি দাস: অবশ্যই অনেক ভালো লাগছে। সব নাট্যকারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আরটিভি: নতুন কমিটি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
রাজীব মণি দাস: পূর্বের কমিটিতে আমি দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার সংগঠনকে গতিশীল করার জন্য যা যা প্রয়োজন, তার সবই করব।
আরটিভি: বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে একটু জানতে চাই...
রাজীব মণি দাস: এই মুহূর্তে চারটি চিত্রনাট্যের কাজ নিয়ে সময় পার করছি। সব ঠিক থাকলে নাটকগুলো ঈদেই মুক্তি পাবে।
আরটিভি: একক নাটকের পাশাপাশি ধারাবাহিক নাটকও লেখেন আপনি। এ পর্যন্ত আপনার লেখায় প্রচারিত নাটকের সংখ্যা কত?
রাজীব মণি দাস: ধারাবাহিক প্রচার হয়েছে ১৩টি। আর একক নাটকের সংখ্যা দেড়শ’র ওপরে।
আরটিভি: আপনার লেখা কোনো ধারাবাহিক নাটক কী এই মুহূর্তে প্রচারিত হচ্ছে?
রাজীব মণি দাস: হ্যাঁ। বর্তমানে আরটিভিতে প্রচার হচ্ছে ‘ট্রাফিক সিগনাল’।
আরটিভি: ‘ট্রাফিক সিগনাল’ ধারাবাহিকের রেসপন্স কেমন পাচ্ছেন?
রাজীব মণি দাস: দারুণ। দর্শকরা খুব প্রশংসা করছেন। এমন সাড়া পেলে কাজের গতিটাই বেড়ে যায়।
আরটিভি: নাট্যকাররা ঠিকঠাক পারিশ্রমিক পান না, প্রায়ই এই অভিযোগটা ওঠে। এটা আসলে কতটুকু সত্য?
রাজীব মণি দাস: টাকা অনেকেই পান না, অভিযোগটা সত্য। আগের কমিটিতেও আমরা বিভিন্ন চ্যানেলে গিয়ে অভিযোগ দিয়ে দিয়ে বিভিন্নজনের টাকা উদ্ধার করেছি।
আরটিভি: গানের ক্ষেত্রে যেমন কথা প্রাণ, নাটকের ক্ষেত্রেও তেমনি চিত্রনাট্য। সেই জায়গা থেকে আসলে নাট্যকারদের মূল্যায়নটা হচ্ছে কি না?
রাজীব মণি দাস: নাট্যকারদের মূল্যায়নই হচ্ছে না। হলে আমাকে চ্যানেলে ফোন দিয়ে বলতে হতো না, নাট্যকার হিসেবে আমার নামটা কই? আমার ধারণা, এমনটা অনেকের সাথেই হয়েছে। নাটক অনএয়ার হয়েছে, সেখানে শুধু পরিচালকের নাম। নাট্যকারের নাম নেই। আবার ইউটিউব থাম্বনেইলেও দেখা গেছে একই চিত্র। সেখানেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাট্যকারদের নাম নেই।
আরটিভি: তাহলে কী আমরা নাটক নির্মাণের পেছনের মানুষগুলোকে অবহেলা করছি?
রাজীব মণি দাস: অবশ্যই। আমরা তাদেরকে ভুলেই যায়। স্বীকার করতে চাই না, পরিচালক-নাট্যকার-প্রযোজক-প্রোডাকশনের সবার সম্মিলিত চেষ্টাতেই একটি সুন্দর কাজ হয়। অথচ দেখুন, লাইট-ক্যামেরা-মেকআপ-ক্রুদের কথা কেউই বলেন না।
আরটিভি: বর্তমানে টিভি নাটকে দেখা যায় গল্পের তেমন ভিন্নতা নেই। এর পেছনে আসলে কারণ কী?
রাজীব মণি দাস: নাট্যকাররা প্রযোজক-পরিচালক কিংবা এজেন্সির চাহিদা অনুযায়ী চিত্রনাট্য লেখেন। তাই চাইলেও অনেক সময় অনেক কিছু করতে পারেন না। তাছাড়া আরেকটা বিষয় তো রয়েছেই। তারা ভাবেন, লিখে পাইনা ঠিকঠাক টাকা। তার মধ্যে এত বৈচিত্র্যতা আনতে গেলে সংসারই তো চলবে না। আমাদেরও তো পেট আছে। সংসার আছে। তাহলে কী আমরা চুরি করে চলবো?
আরটিভি: অনেক নাটকে স্ল্যাং লাঙ্গুয়েজের ব্যবহার হচ্ছে, বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
রাজীব মণি দাস: এই ট্র্যাডিশনটা চালু করেছে মুষ্টিমেয় কিছু ইউটিউব চ্যানেল। তাদের উচিত শুধু ব্যবসা নয়, দেশের সংস্কৃতির দিকেও নজর দেওয়া।
আরটিভি: অনেক নাট্যকারই লেখার পাশাপাশি নির্মাণে যুক্ত। আপনাকে পাচ্ছি কবে?
রাজীব মণি দাস: শখের বশে বছরে ১টা নাটক বানাই। এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে নেই।
আরটিভি: বড় পর্দায় কাজ করা নিয়ে আপনার পরিকল্পনার কথা জানতে চাই...
রাজীব মণি দাস: অবশ্যই পরিকল্পনা আছে। তবে সেটা যদি মনের মতো না হয়, তাহলে করবো না। অনেকগুলো অফারও পেয়েছি। কিন্তু ব্যাটে-বলে মেলে নাই। দেখা যাক, সামনে কী হয়। তবে লিখলে আর্ট ফিল্মই লিখবো। কমার্শিয়াল ফিল্ম নয়।
মন্তব্য করুন