জল্লাদ শাহজাহানকে নিয়ে অভিনেতা ফারুকের আবেগঘন স্ট্যাটাস
বিভিন্ন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৬০ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা আলোচিত ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজিউন)। সোমবার (২৪ জুন) ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে এই আলোচিত শাহজাহান ভূঁইয়ার মৃত্যুর পর এই ‘জল্লাদ’কে নিয়ে নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন অভিনেতা ফারুক আহমেদ। সেখানে তিনি লিখেন, ‘জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া’। এ বছর বই মেলায় কিংবদন্তী পাবলিকেশন্স থেকে তার লেখা একটা বই প্রকাশ হয়েছিল। বইটির নাম ‘কেমন ছিলো জল্লাদ জীবন’। মেলার কিংবদন্তী প্রকাশনীতে আমার লেখাও একটি বই ছিলো। বই মেলার প্রায় ১৫ দিন আমি কিংবদন্তী স্টলে বসেছি। জল্লাদ শাজাহানের সাথে আমার কিংবদন্তীর স্টলেই পরিচয়। তার দীর্ঘ জেল জীবন, জল্লাদ হওয়ার গল্প, ফাঁসি দেওয়ার সময় তার মনের অবস্থা, ফাঁসির সময় আসামীর ক্রিয়া এসব বিষয় তার কাছে জানতে চেয়েছি। সে খোলামেলা ভাবে আমার কথার উত্তর দিয়েছে। এক দিন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, মুক্ত জীবন কেমন লাগছে? সে মাথা নিচু করে বললো, ভালো না। আমার কেউ নাই। কিচ্ছু নাই। ভালো লাগে না। আমি বোকার মত তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আহারে জীবন! জীবনের ৪০ বছরেরও বেশি সময় জেলের চার দেয়ালের ভিতর কাটিয়ে মুক্ত জীবন পেয়েও বলে ভালো লাগেনা! আমি তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম, কি করলে আপনার ভালো লাগবে? সে সাথে সাথে উত্তর দিলো, মরে গেলে। জল্লাদ শাজাহান আজ দুপুরে মরে গেছে। তার চাওয়া পূরণ হয়েছে। ওপারে ভালো থাকবেন জল্লাদ শাজাহান।
এদিকে জানা গেছে, সোমবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়। তার বোন ফিরোজা হাসপাতালে মরদেহ গ্রহণ করেন। আইনগত কার্যক্রম শেষে শাহজাহানের মরদেহ নরসিংদির পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ৩৬ মামলার আসামি জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া ৩২ বছর কারাভোগের পর গত বছরের ১৮ জুন মুক্তি পান। সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় একের পর এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কয়েদি থেকে জল্লাদ বনে যান শাহজাহান।
মন্তব্য করুন