• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
logo

শিল্পী সংগঠন কখনও পলিটিক্যাল পাপেট হতে পারে না: খায়রুল বাসার 

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি

  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:২২
ছবি: সংগৃহীত

হালের তরুণ অভিনেতা খায়রুল বাসার। অভিনয় দক্ষতায় ইতোমধ্যে জয় করেছেন দর্শকের মন। নতুন খবর হলো, এবার এই অভিনেতা শিল্পী সংগঠন ও শিল্পীদের নিয়ে কথা বলেছেন। দিয়েছেন ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট।

আরটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য সেটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

খায়রুল বাসার লিখেছেন, আমরা পর্দায় অভিনয় করি, অভিনয়টা একটা শিল্প। এটা একটা পেশা। সকলের পেশাই তাদের জন্য সম্মানের। কিন্তু এই পেশা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এখনও আসেনি। ‘কি করেন?’ প্রশ্নের উত্তরে যদি আমরা বলি অভিনয় করি তাহলে পাল্টা প্রশ্ন আসে, আর কি করেন? না, আর কিছু করতে হবে কেনো? এটাও একটা পেশা। অন্যান্য পেশার মতোই একটা পেশা। পেশাদার হওয়া শিখতে হবে আমাদের, আমাদের অরাজনৈতিক হতে শিখতে হবে। একটা শিল্পী সংগঠন কখনও পলিটিক্যাল পাপেট হতে পারেনা। অভিনয়শিল্পীদেরও অনেক ধরনের ক্রাইসিস আছে। তাদের স্বার্থ, মর্যাদা এবং অধিকার নিশ্চিত করা তখনই সম্ভব যখন সকল পর্দার অভিনয়শিল্পীরা একটি মাত্র সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর তখেই পুরো সিস্টেমটা পুনর্গঠন করা সম্ভব।

তিনি আরও লিখেছেন, রিফর্মেশন একটা পজিটিভ আইডিয়া। একটা মতাদর্শ। পারস্পরিক সম্মান চর্চার মাধ্যমে এর শুরু করতে হয়। অহিংসতা হলো একমাত্র ওয়ে এমন ন্যাশনাল ক্রাইসিসে রিফর্মেশন করার জন্য। এতদিন যারা ছিল তারা কেউ থাকবেনা, একে বাদ দাও, ওর সঙ্গে কাজ করবো না এমন নয়। এটা যার সঙ্গে যার হবে সেটা ব্যক্তিগত। অভিনয়শিল্পীরা অভিনয় করবেন। এটাই তো কাজ। আমরা যে পরিকল্পনা নিয়েছি তাতে অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন হবে বাংলাদেশের একমাত্র কাস্টিং হাব। যেখানে দেশের সকল স্ক্রিন অ্যাক্টররা লিস্টেড থাকবেন তাদের স্কিল এবং ক্যাপাবিলিটি অনুযায়ী। অভিনয়শিল্পীরা নিশ্চিন্তে ক্যারেক্টারের প্রিপারেশন নেবেন, সুন্দর পরিবেশে, নিরাপদভাবে শুটিং করবেন।

এ অভিনেতা লিখেছেন, লাইফ এবং হেলথ ইন্স্যুরেন্স থাকবে, প্রভিডেন্ট ফান্ড, রিটায়ারমেন্ট ফান্ড থাকবে, আর্থিক নিরাপত্তা থাকবে। কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা থাকবে, কাস্টিং উইং, পি আর উইং থাকবে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে অ্যাক্টরস ক্যাম্প হবে। বিভিন্ন রকম স্কিল এবং নলেজ ডেভেলপমেন্ট কোর্স থাকবে, স্কলারশিপের ব্যবস্থা থাকবে। লিগ্যাল সাপোর্ট থাকবে। যুগোপযোগীভাবে সংগঠনের পুরো সিস্টেমটাকে এভাবে রিফর্ম করলেই একটি শিল্পী সংগঠন শিল্পীদের আস্থার জায়গা হয়ে উঠতে পারে। কারণ, এই সংগঠন দ্বারা তার সকল পেশাদারী স্বার্থ, মর্যাদা এবং অধিকার নিশ্চিত হবে।

খায়রুল আরও লিখেছেন, রিফর্মেশন মানেই একদল খেয়ে গেল আর একদল এসে খেতে বসবে এমন নয়। ফ্যাসিস্ট সরাতে গিয়ে নিজেই ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার চান্স বেশি থাকে, এই চর্চা বন্ধ হোক। সিস্টেমের রিফর্মেশনের পাশাপাশি আমরা নিজেরদেরও রিফর্মেশন চাচ্ছি। সেল্ফ রিফর্মেশন যেটাকে বলে। অভিনয়শিল্পীরা তো হবে শান্তির দূত, ধ্বংসের দূত নয়। কারণ তারা শিল্পী। শিল্পীদের সার্বজনীন হতে হয়।

তিনি লিখেছেন, আমরা মন থেকে সৎভাবে চাই অভিনয়শিল্পীরা যেন গর্ব করে মাথা উঁচু করে বলতে পারেন, তিনি অভিনয়শিল্পী। এটাই তার পেশা এবং তাদের পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবাই যেন এই পেশাটাকে সম্মান করে। পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে গ্লোবাল করার জন্য পারস্পরিক সম্মান চর্চার মাধ্যমে একটি শক্ত ঐক্য তৈরি করা নিকট ভবিষ্যতের জন্য খুবই প্রয়োজন।

তরুণ এই অভিনেতা লিখেছেন, সারা দেশে যেভাবে একই রকম সিচুয়েশনের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে তার একটাই কারণ। সেটা হলো গত ৫৩ বছর ধরে দেশে শুধু প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা এবং ঘৃণার চর্চা হয়েছে। যদি সত্যিই একটা সুন্দর দেশ গড়তে চাই আমরা তাহলে সবাই মিলে সত্য, সুন্দর আর ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সম্মানের চর্চা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা এই চর্চাটাই করতে চাই।

সবশেষে খায়রুল বাসার লিখেছেন, আমাদের অভিনয়শিল্পীরা অনেক বেশি পরিশ্রমী এবং মেধাবী। শুধু একটা প্রপার স্ট্রাকচার দরকার। আমরা এই দিনটা আনতে চাই , যেদিন থেকে সকল অভিনয়শিল্পীদের দেশ এবং সারা পৃথিবীতে সম্মানের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। আমরা এমন একটা সংগঠন গড়তে চাই যেটা সকল অভিনয়শিল্পীদের জন্য হবে। যেখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এটা একসময় ছিলও এবং এটাই থাকার কথা। এটা ধীরে ধীরে পলিটিক্যাল ইন্টেনশনে নষ্ট হয়েছে। যেমন নষ্ট হয়েছে বটতলার নিচে বাউল গান, পালা গান বা পুথি পাঠ। এমনভাবে সংগঠনকে গড়তে হবে যেন দেশের সকল স্থান থেকেই শিল্পীরা তৈরি হওয়ার সুযোগ পায়। আমরা এই স্বপ্ন দেখছি। তাই এই মুহূর্তে সকল অভিনয়শিল্পীদের এক হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আর ডিভাইড এবং রুল গেমের মধ্যে শিল্পীদের পেঁচিয়ে যাওয়া ঠিক হবেনা। প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে অভিনয়কে একটি সম্মানজনক এবং নিরাপদ পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবো আমরা।

অভিনেতার এই পোস্টে তার সহকর্মী থেকে ভক্ত-অনুরাগী, সবাই নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন।

অভিনেত্রী শশী আফরোজা লিখেছেন, সহমত।

সিফাত চৌধুরী নামে একজন লিখেছেন, অনেক সুন্দর কিছু কথা বলেছেন। খুব সুন্দর করে মনের ভাব প্রকাশ করেছেন। আসলে এটা খুবই দুঃখজনক, আমরা দেশের মানুষ হয়ে কোনো সুবিধা পাচ্ছিনা। আপনার জন্য শুভ কামনা।

রহিম উদ্দিন শাকিল লিখেছেন, ভালোবাসা আছে থাকবে সব সময় বড় ভাই।

রহমাতুল করিম নামে আরেকজন লিখেছেন, অবশ্যই সংস্কার করা হোক।

আরটিভি/আইএম

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
৭১ এর পর আল্লাহ আপনাদের উঠায় নিলেই ভালো হতো: খায়রুল বাসার
সাদিয়া আয়মানের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জনে যা বললেন খায়রুল বাসার
স্বেচ্ছাসেবী মেয়ের জন্য তোপের মুখে খায়রুল বাসার
বাংলাদেশের ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী: খায়রুল বাসার