নির্মাতা রিংকুকে আটকের প্রতিবাদে সরব নির্মাতা-শিল্পীরা
নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকুকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে গুলশান থানা এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেছে পুলিশ। গণমাধ্যমকে নির্মাতাকে আটক করার খবরটি নিশ্চিত করেন গুলশান থানার ওসি তৌহিদ আলম। এদিকে রিংকুকে আটক করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই। ফলে খবরটি পাওয়ার পর পরই প্রতিবাদে সরব হন নির্মাতা-শিল্পীরা।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিংকু। ঘনিষ্ঠজনদের ধারণা, ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণেই হয়তো আটক করা হয়েছে তাকে। যদিও রিংকুকে আটকের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।
রিংকু আটকের খবর শুনে ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়ে নির্মাতা দীপংকর দীপন লেখেন, ‘তরুণ নাট্য নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকুকে গতকাল রাত সাড়ে বারোটার দিকে আটক করা হয়েছে। এখন গুলশান থানায় আছে। কেন কি কারণে আটক জানা যায়নি। একজন নির্মাতাকে এত রাতে আটকের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। শিল্পী কলাকুশলীসহ সবার বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসা এই নির্মাতার দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
অভিনেত্রী তানজিন তিশা লিখেছেন, রিংকু ভাই কখনও কারোর ক্ষতির কারণ হতে পারে না। দ্রুত নির্মাতা রিংকু ভাইকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
অভিনেতা খায়রুল বাসার তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি এবং আমি জানি, নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু কখনও কারোর ক্ষতির কারণ হতে পারে না। নির্মাতা রিংকুকে যারা চিনেন বা জানেন তারাও তা ভালো করেই জানার কথা। তাকে কী কারণে মধ্যরাতে আটক করা হয়েছে সেটা এখনও জানা যায়নি। যদি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আটক হয়, তাহলে এই পরিবর্তিত সময়ে সকলের উচিত যার যার অবস্থান থেকে এমন পদক্ষেপের প্রতিবাদ করা। দ্রুত নির্মাতা রিংকুকে মুক্তি দেওয়া হোক।’
সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে মনিরা মিঠু লিখেন, পুলিশ গভীর রাতে ধরে নিয়ে গেছে নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকুকে। এখন গুলশান থানায় আটক। সে একজন জনপ্রিয় নির্মাতা, সে ভালো মানুষ। রিংকু কখনও কারোর ক্ষতি করে নাই। সে মানুষের বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসতো। তার মা বাবা-মা কেউ নেই। সে কখনোই কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত না। তার একমাত্র পেশা তিনি একজন নির্মাতা। তার মুক্তি চাই।
গোলাম ফরিদা ছন্দা ফেসবুকে লিখেছেন, রাফাত মজুমদার রিংকুকে চিনি পরিচালক হওয়ার আগে থেকে। ছোট্ট একটা ছেলে মনে স্বপ্ন নিয়ে শেখার আগ্রহ থেকে সহকারী পরিচালক হয়েছিল। নির্মাতা আমাকে টাকা দিতে ঝামেলা করছিল কিন্ত সেই টাকাও সে দায়িত্ব নিয়ে তুলে দিয়েছিল। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে গেছে সে। সহকারী থেকে একজন জনপ্রিয় পরিচালক হয়েছে। প্রচুর কাজ করেছে। সবসময় মানুষের বিপদ আপদে ছুটে গেছে। মানবিকতা সম্পন্ন একজন মানুষ বলেই ওকে জানি। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গেও সে ভীষণ এক্টিভ ছিল। সে কি এমন অন্যায় করতে পারে যে তাকে আটক করতে হলো! কোনো প্রতিহিংসার স্বীকার যেন না হয় সে। মুক্ত হোক রিংকু এটাই আমাদের চাওয়া।
সাগর জাহান ফেসবুকে লেখেন, আমি কোনো ভাবেই মানতে পারছি না রিংকুর আটক হওয়া। রিংকু শুধু ভালো ছেলেই না সে পরোপকারী। সবার পাশে থাকে। যে কারো বিপদে এগিয়ে যায়। যদি আমার কথাই বলি, আমার বাবা মা মারা যাবার সময় থেকে টানা আট মাস আমি কোনো কাজ করতে পারিনি। এই রিংকু আমার অফিসে এসে আমাকে অনেক সান্তনা দিয়ে কাজে ফেরায়। সব ভুলে কাজে মনোযোগ দিতে বলে আমাকে। এমনও বলেছে আপনার কাছ থেকে আমরা ভিউ চাই না, চাই আপনার মতন করে সুন্দর একটা নাটক। ভাই রিংকু তুমি কোনো চিন্তা করো না আমরা আছি। তোমার পাশে দাঁড়ানো মানুষের অভাব হবে না। আল্লাহ অবশ্যই সহায় হবেন। শিল্পী কলাকুশলীসহ সবার বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত।
প্রসঙ্গত, ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত রঙিন আশা, পুতুলের সংসার, ইতিবৃত্ত, নরসুন্দরী, কবর, বন্ধন, ব্লগার মিতু, জাল, কাটুস, অতিরিক্ত, নোঙ্গর, রিকশা গার্লসহ প্রায় দেড় শতাধিক নাটক নির্মাণ করেছেন রিংকু।
আরটিভি/এইচএসকে
মন্তব্য করুন