বর্তমান সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু। নানা কাঠখড় পুড়িয়ে সাবলীল অভিনয় দিয়ে এরই মধ্যে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্র কিংবা ওটিটি, এমনকি নাটকসহ সব ক্ষেত্রেই নিজের চরিত্রের সঙ্গে মিশে যান এ অভিনেতা। দর্শক চাহিদাকে ছাপিয়ে পরিচালকদের পছন্দের তালিকায় উঠে গেছেন তিনি।
এদিকে এবার ঈদে রাশেদ মামুন অপু অভিনীত দুটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। একটি আফরান নিশো-তমা মির্জা অভিনীত ‘দাগি’ ও সিয়াম-বুবলী অভিনীত ‘জংলি’। ঈদের দিন মুক্তির পর থেকেই ছবি দুইটি বেশ আলোচনায় আছে। বিশেষ করে রাশেদ মামুন অপু তার অভিনয় দিয়ে দর্শক মহলে ফের নিজের জাত চিনিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে তাকে নিয়ে চলছে নানা চর্চা।
অন্যদিকে, সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া টেলিভিশন নাটকের অভিনয় শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ' ২০২৫-এর নির্বাচনে নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু।
নির্বাচিত হওয়ার পর সংগঠন নিয়ে নানা পরিকল্পনা ও নিজের কাজ নিয়ে আরটিভির সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন অপু।
আরটিভি: হুট করেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা কেন?
অপু: গত ৫ বছর ধরে নানাভাবে সাংগঠনিক বিভিন্ন কাজ করেছি। আমাদের সাংগঠন ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ’ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে অনেক দিন ধরেই। তাই সেসব করতে হলে একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই যেতে হবে আর তাই নির্বাচনে অংশ নেয়া।
আরটিভি: নির্বাচিত হয়েছেন, এখন আপনার প্রথম কাজ কোনটা হবে, পাশাপাশি এই মেয়াদে সংগঠন নিয়ে আপনার পরিকল্পনা জনাতে চাই...
অপু: ইতোমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে আমরা আমাদের কাজ শুরু করেছি। যেমন শুরুতেই অ্যাক্টরস ইকুইটি ডে করবো। এরপরই আমরা সরকারের সঙ্গে বসবো আমাদের পেশা স্বীকৃতি দেয়া ও শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট চালু নিয়ে আলোচনা করবো। আপনারা জানেন আমাদের জন্য আফতাম নগরে একটি জমি বরাদ্দ ছিল, সেটি নিয়েও বেশ কিছু আইনি জটিলতা আছে। সেই আইনি জটিলতা নিরসনের জন্য চেষ্টা করবো। পাশাপাশি আমাদের সংগঠনের সিস্টার কনসার্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরেকটি পারফর্মিং ইনস্টিটিউট তৈরি করা যেখান থেকে বছরে কমপক্ষে চারটি ব্যাচ থেকে ৫০ জন ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী বের হতে পারে যারা টিভি মিডিয়ায় ভালো কাজ করতে পারবে।
আরটিভি: সংগঠন ও অভিনয়, দুইটি কি সমানতালে চালানো সম্ভব হবে?
অপু: একদম ছোটবেলা থেকেই আমার সংগঠনের হাতেখড়ি। আট বছর থেকেই আমি নানা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছি। সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি আমি পড়াশোনাও শেষ করেছি তাতে খুব বেশি ঝামেলা হয়নি। সো, সংগঠন ও আমি অনেক আগে থেকেই একে অন্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছি। অভিনয়ে আসার পর ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ’-এর সাথে নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সাংগঠনিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমি নিজেকে বেশ দক্ষ মনে করি। সুতরাং আমার মনে হয় না সংগঠনের জন্য আমার অভিনয়ে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে।
আরটিভি: ইদানীং নাটকে আপনাকে কম দেখা যাচ্ছে, এর কারণ কী?
অপু: আসলে এখন আমি ওটিটি ও সিনেমা নিয়েই বেশ ব্যস্ত আছি তাই আগের মতো আমাকে এর নাটকে দেখা যাচ্ছে না।
আরটিভি: অনেকেই অপানাকে এখন একজন জাত অভিনেতা বলে আখ্যায়িত করছেন, বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
অপু: জাত অভিনেতা কিনা আমি জানি না। আমি কখনো ওইভাবে ভাবি না। আমি প্রতিনিয়ত অভিনয়ের মান উন্নয়নের চেষ্টা করি, কিছু করার চেষ্টা করি। আর অভিনয়টা করেই আমার জীবন অতিবাহিত করতে হয় সেক্ষেত্রে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমাকে করতেই হবে। যারা আমাকে জাত অভিনেতা বলেন তাদের আমি সম্মান জানাই। আর হ্যাঁ, আমি একজন খুব সাধারণ অভিনেতা।
আরটিভি: করোনার পর নানা কারণে দেশি সিনেমা ইনডাস্ট্রির অবস্থা তেমন ভালো নেই। ঢাকাই সিনেমা কি আবারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে আপনি মনে করেন?
অপু: ঢাকাই সিনেমা আবারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা অনেক বেশি জরুরি। সিনেপ্লেক্স আরও নির্মাণ করতে হবে, ই-টিকিটিং সিস্টেম চালু করতে হবে। শুধু ভালো সিনেমা বানালেই হবে না, অন্যান্য বিষয়গুলোতেও রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
আরটিভি: নতুন কাজ নিয়ে জানতে চাই...
অপু: তিনটি নতুন সিনেমার কথা হচ্ছে। খুব দ্রুতই একটি সাইনিং করবো। আরও বেশ কিছু সিনেমা আছে মুক্তির অপেক্ষায়।
আরটিভি/এএ/এআর