নব্বই দশকের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেতা মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ। দর্শকের কাছে তিনি ফয়সাল আহসান নামেই পরিচিত। তার সময়ে সেরা মডেলদের অন্যতম একজন তিনি। কিউট ট্যালকম পাউডার কিংবা কোকাকোলার বিজ্ঞাপনের সেই লম্বা চুলের ফয়সাল আজও তার ভক্তদের মধ্যে আবেদন ছড়ান। তবে মডেলিং ছাড়াও রয়েছে তার আরও পরিচয়। দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি সফলতার সাথে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক এই কেন্দ্রীয় নেতা একজন হকি খেলোয়াড়ও। তিনি নিজে যেমন হকি খেলতে ভালোবাসেন তেমনি বাংলাদেশে হকির জনপ্রিয়তা বাড়াতে আড়ালে থেকে সংগঠক হিসেবেও কাজও করে যাচ্ছেন অনেকদিন ধরেই।
তবে এবার আর আড়ালে থেকে নয় বরং হকির উন্নয়নে নিজের সাংগঠনিক ভূমিকা আরও জোরদারভাবে চালানোর লক্ষ্যে তিনি আগামী ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিব্য বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সাজিদ-সাদেক প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করছেন জনপ্রিয় এই মডেল ও ক্রীড়া সংগঠক।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশের হকির বর্তমান অবস্থা, হকি নিয়ে তার ভবিৎষত পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন।
হকির সাথে আপনার সম্পর্কটা কিভাবে?
হকি আমার কাছে নেশার মতো। স্কুল জীবন থেকেই হকি খেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি। কম্বাইন্ড স্পোর্টিং ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাব, ঊষা ক্রীড়াচক্রের হয়ে টানা ১০ বছর হকি খেলেছি। সেই আবেগের জায়গা থেকে ২০১৫ সালে সাবেক হকি খেলোয়াড়দের নিয়ে ‘ভ্যাটারান হকি বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছি আমরা। বর্তমানে আমি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।
হঠাৎ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
আসলে হঠাৎ নয়। হঠাৎ শব্দটা এখানে বললে ভুল হবে। কারণ আমি মডেলিং বা রাজনীতিতে আসার আগে হকি খেলার সাথে জড়িয়ে আছি। স্কুল জীবন থেকে শুরু করে লীগেও আমি টানা দশ বছর হকি খেলেছি। এছাড়া হকির যেকোনও আয়োজন বা প্রয়োজনে আমি সবসময়ই ছিলাম। হকির প্রতি আমার এই কমিটমেন্ট থেকেই এবার আমার মুরুব্বি, সতীর্থ খেলোয়াড়, বন্ধু-বান্ধবদের অনুরোধ এবং বাংলাদেশ হকির উন্নয়নে আমার চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।
নির্বাচনে অংশ না নিয়ে কি হকির উন্নয়নে আপনার চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যেতো না?
হয়তো যেতো। দেখুন সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় একটি কাজ যখন হয় তা অনেকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করা সম্ভব। কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে তা কিছুটা যে কঠিন হয়ে যায়। আমি হকি ভালোবাসি। একটা সময় জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বাংলাদেশে ফুটবলের পরই ছিল হকির অবস্থান। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আমাদের হকির সেই স্বর্ণালী যুগ এখন আর নেই। কিন্তু এই খেলাটির প্রতি আমার মতো সারা দেশে আরও অনেকের ভালোবাসা আছে, ভালোলাগা আছে। সেই ভালো লাগা, ভালোবাসাটুকু সাথে নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে আমি বিশ্বাস করি হকির সুদিন আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমার নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
আপনি সাজিদ-সাদেক প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনে আপনার প্যানেল বা আপনার প্রতিশ্রুতি কী?
আপনাকে প্রথমেই বলে রাখি আমি ‘প্রতিশ্রুতি’ শব্দটি পছন্দ করি না। এর কারণ হলো আমি ঠিক তখনই কাউকে কথা দেই যখন আমি মনে করি বা বুঝি সেই কথা আমি রাখতে পারবো। সেই একইকথা আমি বলছি যে, আমরা ইশতেহারে যা যা বলেছি আমরা প্রতিটি কাজ বাস্তবায়ন করে দেখাবো ইনশাল্লাহ। সেই ইশতেহার বাস্তবায়ন পূর্ণ হলে বাংলাদেশ হকি তার পুরোনো মর্যাদা, ঐতিহ্য ও জনপ্রিয়তা আবার ফিরে পাবে এবং হকির উন্নয়ন আরও বেগবান হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সভাপতি পদ অলঙ্কৃত করেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান। এর বাইরের পদগুলোর জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আসন্ন নির্বাচনে সাজিদ-সাদেক প্যানেল ও সাঈদ-রশীদ প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। ৮৪ জন ভোটারের সংগঠনটিতে ২৮টি পদের জন্য ভোট হবে ২৯ এপ্রিল।
এম/পি