রংপুর পদাতিক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে ২৪ জানুয়ারি-২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ‘রংপুর পদাতিক - বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যৌথ নাট্যোৎসব ২০২৫’। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী নাটক হিসাবে মঞ্চস্থ হয় অলোক রঞ্জন সরকার রচিত মঞ্চ নাটক ‘মুক্তির কণ্ঠ’। আফ্রিকান বিদ্রোহী কবি বেঞ্জামিন মলোয়েস এর ফাঁসি নিয়ে সারা বিশ্বে যে আলোড়ন উঠেছি্লো তা উঠে এসেছে এই নাটকে।
নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের নাট্যস্নাতক লুকমান শারীফ। নাটকটির প্রযোজনা উপদেষ্টা ও নেপথ্যকর্মী হিসাবে কাজ করেছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক দীপংকর দীপন।
সমাপনী দিনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার রংপুর বিভাগ এর মাননীয় পরিচালক জনাব মোঃ আবু জাফর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব হাবিবুল হাসান রুমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বিভাগীয় সদস্য জনাব ইফতেখারুল আলম রাজ।
২৪ জানুয়ারি লোরংপুর পদাতিক - বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যৌথ নাট্যোৎসব ২০২৫’- এর উব্দোধন ঘোষনা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
৯ দিন ব্যাপি এই নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা থিয়েটারের ‘একটি লৌকিক ও অলৌকিক স্টিমার’, তীরন্দাজ ঢাকা এর ‘কণ্ঠনালিতে সূর্য’, ম্যাড থেটার ঢাকা - এর ‘রবীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় বিজয়া’, পঞ্চগড়- এর ‘মায়াচর’, পাবনা ড্রামা সার্কেল-মএর ‘কেনারাম বেচারাম’, প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম- এর ‘ঘর জামাই’, সারথি নাট্য সম্প্রদায় রংপর- এর নাটক ‘কী হচ্ছে এসব’।
প্রতিদিন দর্শক মনভরে উপভোগ করে এসব নন্দিত নাটক।
৮টি দলে ৮ টি সেরা নাটক ছাড়াও এই নাট্যোৎসবে একসন্ধ্যায় তারুণ্যের উৎসব জাতীয় নৃত্যানুষ্ঠান অর্ন্তভূক্ত ছিল।
এই নাট্যোৎসবে অংশ নিয়ে প্রখ্যাত অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, অনেকদিন আগে রংপুরে ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’ নাটক মঞ্চায়ন করেছিলাম। এবার উৎসবে অংশগ্রহণ করে খুব ভাল লেগেছে ।
অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ বলেন, আমাদের নাটক চলার সময় দর্শকদের এমন রেসপন্স পেয়েছি যে, তা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।
অভিনেতা দীপক সুমন বলেন, নিজেদের নাটক না গেলে জানতামই না রংপুর এত ভাল দর্শক আছে এবং রংপুর পদাতিক শিল্পকলার সাথে মিলে একটা এত ভাল আয়োজন করতে পারে।
নাট্যকার ও অভিনেতা আসাদুল ইসলাম বলেন, রংপুরের এই উৎসবে প্রদর্শনী আমাদের ‘ম্যাড থেটার’- এর জন্য একটি বড় পাওয়া। মগ্নতার এই নাটকটি রংপুরে দর্শক একটা মগ্ন হয়ে উপভোগ করবে ভাবিনি।
উৎসবের উপদেষ্ঠা চলচ্চিত্র পরিচালক দীপংকর দীপন বলেন, রংপুরে নাট্যর্চার মাধ্যমেই আমার সাংস্কৃতিক জীবনের শুরু। অনেকে বলে রংপুরের নাট্যচর্চায় নাকি ভাটা পড়েছে, আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতাম সেটা সত্যি নয়। সেটাই প্রমাণ হয়েছে এই উৎসবের মাধ্যমে। প্রতিদিন হাউসফুল মঞ্চে দর্শক নাটক দেখছেন। এই দৃশ্য দেখে আগত প্রতিটি দলই অভিভূত। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এই নাট্যোৎসব রংপুরের নাট্যর্চায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
অত্যন্ত সফলভাবে শেষ হওয়া ‘রংপুর পদাতিক - বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যৌথ নাট্যোৎসব ২০২৫’ রংপুরের নাট্যচর্চার ধারাকে গতিশীল করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। দর্শক ভালবাসায় সিক্ত হয়ে প্রাণবন্ত এই নাট্যোৎসব রংপুরের নাট্যকর্মীদের মধ্যে নব প্রাণের সঞ্চার করেছে।
আরটিভি/এএ