রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি থেকে ১০ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত কমিশন নিচ্ছেন বিবেকহীন কিছু চিকিৎসক। কমিশন নামে ঘুষের যোগান দিতে রোগীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত টাকা নিতে হচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে।
সম্প্রতি এ ব্যবসায় যোগ হয়েছে নতুন কারসাজি। পাশের দেশে নিখুঁত টেস্ট হয় এমন ধোঁয়া তুলে রোগীদের পটিয়ে দেশের টেস্ট পাঠানো হয় বাইরে। পুরোপুরি অবৈধ এ কাজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪শ’ টাকার রিপোর্ট ভারত থেকে করিয়ে আনার নামে নেয়া হয় ৪ হাজার টাকা।
এমনি একটি বিশ্বখ্যাত কোম্পানি সিমেন্সের ‘বায়োকেমিক্যাল এনালাইজার’মেশিনের বেশ কদর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। বিশ্বের প্রায় সব চিকিৎসকেরই আস্থা এর রিপোর্টের ওপর।
সরকারি হাসপাতাল কুর্মিটোলা জেনারেল বা মুগদার ৫শ’ শয্যা হাসপাতালেও আছে সিমেন্সের এই মেশিন। ঠিক একই মেশিন ব্যবহার করে রাজধানীর ক্লিনিকপাড়া হিসেবে খ্যাত ধানমন্ডি ও পান্থপথের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোও।
সরকারি হাসপাতালে সকালে যে ডাক্তার কাজ করেন সন্ধ্যায় তিনিই চলে যান বেসরকারি কোনো ক্লিনিকে। সকালে তার লেখা যে রিপোর্ট পাওয়া যায় ৫০ টাকায় সন্ধ্যায় সেই রিপোর্ট হয়ে যায় ২শ’ টাকা। এর কারণ হিসেবে ডাক্তারদের প্রতি রিপোর্টে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ কমিশন নেয়ার প্রবণতাকে দায়ী করছে বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রাইম করছে। জনগণকে ধোঁকা দিয়ে টাকা নেয়া অন্যায় কাজ।
স্বাস্থ্যখাত বিশেষজ্ঞ ডা. জাফরুউল্লাহ বলেন, এটা ঘুষের সমান, কেউ যদি ওষুধ কোম্পানি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা হাসপাতাল থেকে কমিশন নেয় সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো নীতিমালা এবং তদারকি না থাকায় দিনে দিনে এমন প্রতারণা লাগামছাড়া হয়ে পড়ছে বলেও মনে করেন তারা।
আরকে/এসএস