বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডারসহ নিহত ৩, আহত ৭৫ 

আরটিভি নিউজ

বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪ , ১০:১০ এএম


বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডারসহ নিহত ৩, আহত ৭৫ 
হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শোকর। ফাইল ছবি

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে তিনজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭৫ জন। হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শোকরও নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে  ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। খবর আল জাজিরার। 

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় হিজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠের হারেত রেইত এলাকায় এ হামলা চালানো হয়।

হামলার পর এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শোকর নিহত হয়েছেন। একই দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টও।

বিজ্ঞাপন

অবশ্য হিজবুল্লাহর দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ফুয়াদ শোকর এই হামলা থেকে বেঁচে গেছেন। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি সংগঠনটি। তাছাড়া, ফুয়াদ শোকর বেঁচে গেছেন বলে দাবি করা সূত্রগুলোও তাদের দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দেয়নি।

এদিকে টুইটারে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার পর স্ট্রেচারে করে আহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। ওই ব্যক্তির সঙ্গে ফুয়াদ শোকরের চেহারার মিল আছে। তবে ভিডিওটি যাচাই করা যায়নি।

ফুয়াদ শোকরের বয়স ৬০ বছরের বেশি হবে বলে ধারণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ১৯৮৩ সালে বৈরুতে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন সেনাদের ব্যারাকে বোমা হামলার কেন্দ্রীয় ভূমিকায় ছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় ২৪১ জন মার্কিন সেনা নিহত হন। তাকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

বিজ্ঞাপন

সূত্রগুলো জানায়, মুগনিয়েহ গুপ্তহত্যার শিকার হলে সংগঠনে আরও প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন ফুয়াদ শোকর। আড়ালে থাকতে পছন্দ করা মুগনিয়েহকে হিজবুল্লাহর সামরিক কর্মকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্মরণ করা হয়ে থাকে। তিনিও যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী তালিকায় ছিলেন।

কে এই ফুয়াদ শোকর

হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নসরুল্লাহর বিশেষ সামরিক উপদেষ্টা ও সংগঠনটির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ শুরা কাউন্সিলের সদস্য মুহসিন শোকর। তিনি ফুয়াদ শোকর ও আল-হাজ মহসিন নামেও পরিচিত। হিজবুল্লাহর এই কমান্ডার সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অপারেশন সেন্টারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

প্রায় চার দশক আগে প্রতিষ্ঠা হওয়া হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডারদের একজন ফুয়াদ শোকর। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির প্রয়াত কমান্ডার ইমাদ মুগনিয়েহর বন্ধু তিনি। ২০০৮ সালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে গুপ্তহত্যার শিকার হন মুগনিয়েহ।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, ফুয়াদ শোকর হিজবুল্লাহর সর্বোচ্চ সামরিক ফোরাম জিহাদ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তিনি এই কাউন্সিলের ‘স্ট্র্যাটেজিক ইউনিটের’ নেতৃত্বে দিচ্ছিলেন।

ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ফুয়াদ শোকর হিজবুল্লাহ প্রধানের ডান হাত এবং তিনি তার কৌশলগত বিষয় ও যুদ্ধকালীন অভিযান পরিচালনাবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।

গত শনিবার ইসরায়েলে দখলে থাকা গোলান মালভূমির দ্রুজ অধ্যুষিত মাজদাল শাম গ্রামে খেলার মাঠে রকেট হামলায় ১২ জন নিহত হন। এ হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করে ইসরায়েল। তবে হামলার বিষয়টি শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে হিজবুল্লাহ।

ইসরায়েল ওই হামলার কড়া জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিলে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে ইসরায়েল যাতে সীমিত আকারে হামলা চালায়, সে জন্য জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এখন শীর্ষ কমান্ডারের ওপর হামলার জবাব হিজবুল্লাহ কীভাবে দেয়, তার ওপর নির্ভর করছে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে। 

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission