বিশ্বে ৮৫ শতাংশ সাংবাদিক হত্যার শাস্তি হয় না: ইউনেস্কো
২০২২-২০২৩ সালে প্রতি চার দিনে একজন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে, জাতিসংঘের বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি হয়নি বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি৷ ২০০৬ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংবাদিক হত্যা নিয়ে দায়ের করা মামলার ৮৫ শতাংশ এখনও অমীমাংসিত৷
শনিবার (১ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইউনেস্কো জানায়, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের হত্যার ঘটনা আগের দুই বছরের তুলনায় ২০২২-২০২৩ সালে ৩৮ শতাংশ বেড়েছে৷ এই সময়ে ১৬২ জন সাংবাদিককে হত্যার নিশ্চিত তথ্য দিয়েছে সংস্থাটি৷
এক বিবৃতিতে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলে বলেছেন, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে প্রকৃত সত্য খুঁজে বের করার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে প্রতি চার দিনে একজন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন৷
২০২২ এবং ২০২৩ সালে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের অর্ধেকেরও বেশি সংগঠিত হয়েছে সংঘাত ও সহিংসতা প্রবণ অঞ্চলে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা তাদের নিজ দেশেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন৷
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংগঠিত অপরাধ বা দুর্নীতি নিয়ে কাজ করার সময় কিংবা বিক্ষোভের প্রতিবেদন করার সময় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সাংবাদিকেরা৷
২০২২ সালে মেক্সিকোতে সর্বোচ্চ ১৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে৷ আর ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ ২৪ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন ফিলিস্তিন অঞ্চলে৷
প্রতিবেদনটিতে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ল্যাটিন অ্যামেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল এবং আরব দেশগুলোকে৷
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে উত্তর অ্যামেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপ সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে কম বিপজ্জনক অঞ্চল ছিল৷ এসব অঞ্চলে মোট ছয় জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন৷
২০২২-২০২৩ সালে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাংবাদিকদের মধ্যে নারী সাংবাদিক ছিলেন ১৪ জন (নয় শতাংশ)৷
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হয়নি৷ ২০০৬ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংবাদিক হত্যা নিয়ে দায়ের করা মামলার ৮৫ শতাংশ এখনও অমীমাংসিত৷
২০১৮ সালের হিসাবে দেখা গেছে, সংখ্যাটি ছিল ৮৯ শতাংশ৷ ২০১২ সালে দায়মুক্তির হার ছিল ৯৫ শতাংশ৷
ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলে বলেন, এই অপরাধগুলোর অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত৷ কিন্তু বাস্তবতা হলো ৮৫ শতাংশ ঘটনা এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে৷
প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটির দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়েছে৷
আরটিভি/এমএ
মন্তব্য করুন