জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফেরানোর প্রস্তাবে ধস্তাধস্তি
জম্মু ও কাশ্মীরকে আবার ৩৭০ ধারার অধীনে নেয়ার প্রস্তাবকে ঘিরে বিধানসভায় ধ্বস্তাধস্তি হলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মার্শাল ডাকতে হলো। বিধানসভা নির্বাচনের পর জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার প্রথম অধিবেশনেই বিধায়কদের মধ্যে সংঘর্ষ হলো। সেটাও হলো ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনা নিয়ে। এই ৩৭০ অনুচ্ছেদের জন্যই কাশ্মীর কিছু বিশেষ অধিকার ভোগ করত।
কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে। বুধবার বিজেপির বিরোধের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় ধ্বনিভোটে একটি প্রস্তাবে গৃহীত হয়েছে। সেখানে ৩৭০ ধারা আবার চালু করার দাবি করা হয়েছে। সে জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে আলোচনা করার কথাও বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। বিজেপির বিধায়ক সুনীল শর্মা যখন বলছিলেন, তখন বিধায়ক শেখ খুরশিদ একটা ব্যানার নিয়ে ওয়েলে নেমে পড়েন। খুরশিদ হলেন বারামুলার সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার রশিদের ভাই। সেই ব্যানারে ৩৭০ ধারা ও সংবিধানের ৩৫ এ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনার দাবি ছিল। রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবিও করা হয়েছিল।
সেই সময় বিজেপির কিছু বিধায়ক ওয়েলে নেমে পড়েন। একজন খুরশিদের হাত থেকে ব্যানারটি ছিনিয়ে নিতে যান। অন্যরা ব্যানারটি ছিঁড়তে চান। সেসময় পিপলস কনফারেন্সের সাজ্জাদ লোন সেদিকে চলে যান। বিধায়কদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়। কিছুক্ষণ ধরে গোলমাল চলতে থাকে। স্পিকার অধিবেশন মুলতবি করে দেন। মার্শাল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সাজ্জাদ লোন পরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়করা খুরশিদকে বাঁচাতে আসেননি। আমরা তার সঙ্গে নির্বাচনে লড়েছি। কিন্তু কাশ্মীরি হিসাবে আমি যখন দেখেছি, তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তখন তাকে বাঁচাতে গেছি। আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।
তার অভিযোগ, বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের আনা প্রস্তাব তিনি সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র টুইট করে বলেন, আমরা বিজেপির সঙ্গী। এ সব বাজে কথা অনেক হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ বিরোধী নেতা সুশীল শর্মা সাংবাদিকদের বলেছেন, ওই প্রস্তাব যতক্ষণ প্রত্যাহার না করা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা বিধানসভা চালাতে দেবেন না। বিজেপি বিধানসভার বাইরেও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে।
বিজেপির অভিযোগ, স্পিকার ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতার মতো ব্যবহার করছেন। তিনি স্পিকারের মতো নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছেন না।
দিল্লিতে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেছেন, তারা জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধানের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বলেছেন, পিডিপি প্রথমে একটা প্রস্তাব এনেছিল। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ঠিক থাকলে তারা নিশ্চয়ই ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে আলোচনা করত। জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত সমর্থন করে না। বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের আনা প্রস্তাব ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়।
আরটিভি/এএইচ/এআর
মন্তব্য করুন