জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ স্থগিত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব সুবিধা বাতিলের নির্বাহী আদেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দেশটির এক আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল বিচারক এ আদেশ দেন। এর আগে, ২২টি রাজ্যে ট্রাম্পের এই আদেশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়।
রায়ে বিচারক বলেন, ট্রাম্পের এ আদেশ সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর বিরোধী যা যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্মানো সকলকে নাগরিকের অধিকার দেয়। এছাড়া রায়ে নির্বাহী এ আদেশ বাস্তবায়নের আইনি প্রয়োগকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্থ হচ্ছে, যেই দেশটিতে জন্মাবে, সে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে যাবে। এই নীতি বদলাবেন বলে অনেক দিন ধরেই ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলেন। ক্ষমতায় বসে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপও নেন। আদালত ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ ১৪ দিনের জন্য রুখে দিয়েছেন।
এর আগে গত সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথের প্রথম দিনই জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলসহ বেশ কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। তার এ আদেশ সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করে বলে মনে করেন আদালত।
যদিও ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের পর বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়। কারণ নাগরিকত্বের এই অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে লিপিবদ্ধ। এটি বদলাতে কংগ্রেসের দুই কক্ষেই দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার সমর্থন লাগবে। এরমধ্যে ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং সান ফ্রান্সিসকো শহর ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়াসহ বহু জায়গায় ট্রাম্পের ওই আদেশের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটন রাজ্যে শুনানির সময় সিনিয়র ডিস্ট্রিক্ট জজ জন কগেনর ট্রাম্পের আদেশ সম্পর্কে বলেন, এটি একটি নির্লজ্জভাবে অসাংবিধানিক আদেশ। আমি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বেঞ্চে রয়েছি। আমি আর এমন দ্বিতীয় কোনো মামলা এর আগে পাইনি।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর প্রথম বাক্যে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ নীতিটি বলবৎ হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং এর আওতাধীন এলাকায় জন্ম নেওয়া বা আত্মীকৃত সব মানুষ যুক্তরাষ্ট্র এবং তারা যেই রাজ্যে বাস করে সেখানকার নাগরিক। এই নীতি অবৈধ অভিবাসীদের জন্য ‘বড় চুম্বক’ এবং এটি নথিপত্রহীন গর্ভবতী নারীদের সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে এসে সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করে বলে ভাষ্য কট্টর অভিবাসনবিরোধীদের। তারা টিটকারি করে একে ‘বার্থ ট্যুরিজম’ বা ‘অ্যাংকর বেবি’ নেওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবেও অ্যাখ্যা দেন।
আরটিভি/কেএইচ
মন্তব্য করুন