ঢাকারোববার, ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

করোনায় আটকে পড়া ছেলেকে ফেরাতে ১৪০০ কিলোমিটার স্কুটি চালালেন ভারতের এক মা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০২০ , ০৪:০৯ পিএম


loading/img
সংগৃহীত

আমি এখন অনেক খুশি, অনেকটা নিশ্চিন্ত, ফোনে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত ভারতের তেলেঙ্গানার রাজ্যের বাসিন্দা রাজিয়া বেগম। হবেন নাই বা কেন? বন্ধুর বাড়িতে আটকা পড়ে যাওয়া ছেলেকে উদ্ধার করতে পেরে মায়ের গলায় যে শান্তি, সেই সুরই শোনা গেল রাজিয়ার কন্ঠে। লকডাউনে অন্ধ্রপ্রদেশে আটকে পড়েছিলেন ছেলে। তাকে উদ্ধার করতে স্কুটি নিয়েই পথ পাড়ি এক মায়ের। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু লকডাউনে কীভাবে আটকে পড়লেন ছেলে? সে কথা অবশ্য নিজের মুখেই জানালেন ১৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন। তিনি বলেন, আমার এক বন্ধুর বাবা হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দেখতে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরে দরগায় গিয়েছিলাম। ২৩ মার্চ ট্রেনের টিকিট ও বুক করেছিলাম ফিরে আসব বলে। কিন্তু সব ট্রেন ক্যানসেল হলো লকডাউনে। ফেরার সব উপায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমার কাছে।

এদিকে ছেলের এই অবস্থা শুনে চিন্তায় পড়ে যান রাজিয়া, যিনি নিজে একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষিকাও। রাজিয়া, আমি খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। নিজামুদ্দিন এমন একটা জায়গায় আটকে যেখানে যেকোনো সময় করোনা সংক্রমিত হতে পারে। আর নেল্লোর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলোদের মধ্যে একটি। পুলিশের কাছে গিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। এদিকে কীভাবে ওকে ফেরত আনবো সারাদিন সেই চিন্তাই করতাম।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ এপ্রিল) যখন রাজিয়া শুনলেন আরও দীর্ঘায়িত হতে চলেছে লকডাউন, তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি নেল্লোরে যাবেন এবং ছেলেকে নিয়ে আসবেন। কিন্তু কীভাবে? গাড়ি, বাস, ট্রেন সব তো বন্ধ। অগত্যা ভরসা বলতে স্কুটি। তাতেই দিলেন পাড়ি। কাউকে না জানিয়ে সোমবারই চড়ে বসলেন স্কুটিতে। দ্রুত গতিতে বড়িয়ে দিলেন গিয়ার।

লকডাউনে যখন চারিদিক বন্ধ, পুলিশি পাহারা চলছে তখন এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে ভাবলেন না একবার? রাজিয়া বেগম বলেন, আমি ২৫ বছর ধরে স্কুটি চালাচ্ছি। আমার যখন ডায়ালিসিস চলছিল তখনও আমি স্কুটি চালিয়েই হায়দরাবাদ যেতাম। দূরত্বে আমার ভয় নেই। পাশে ছেলেকে নিয়ে প্রশান্তির হাসি মায়ের মুখে।

কিন্তু এত দীর্ঘ জার্নি কেমন ছিল? প্রধানশিক্ষিকা রাজিয়া বলেন, যখনই পেট্রোল পাম্প দেখতাম তেল ভরে নিতাম। যাওয়ার সময় ব্যাগে রুটি-তরকারি করে নিয়েছিলাম। পেট্রোল স্টেশনে মিনিট পনেরোর বিরতি নিতাম। অন্ধ্রপ্রদেশে বর্ডারে আমাকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি পড়তে হয়েছে। তবে তারা আমাকে ছেড়ে দেন। এরপর ছেলেক নিয়ে ফিরে আসি। নিজামুদ্দিন বলেন, আমি মাকে দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। তবে মা অত্যন্ত সাহসী একজন নারী।

বিজ্ঞাপন

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |