মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ভয়ংকর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকাশ্যে এনেছে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কঠিন জ্বালানিযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম রাখা হয়েছে ‘কাসেম বাসির’।
রোববার (৪ মে) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহের একটি সাক্ষাৎকার চলাকালে ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রদর্শন করা হয়। খবর এপির।
মার্কিন সংবাদসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শত্রুপক্ষের প্রতিরক্ষা স্তর অতিক্রম করার জন্য এবং সহজেই অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং কৌশলগত প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রটিতে।
ইরানের সর্বাধুনিক এ ক্ষেপণাস্ত্রটি কমপক্ষে ১২০০ কিলোমিটার (৭৪৫ মাইল) পাল্লার বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী। শুধু তাই নয়, জিপিএস নির্দেশিকা ছাড়াই নির্ভুলতার সঙ্গে একাধিক লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে এবং তাতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রটি।
ইয়েমেনে হুতিদের প্রতি ইরানের সমর্থন প্রসঙ্গে মার্কিন সতর্কতার প্রতি ইঙ্গিত করে জেনারেল নাসিরজাদেহ বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করে, তাহলে ইরান তাদের স্বার্থ, ঘাঁটি এবং বাহিনীতে যেখানেই হোক না কেন এবং যখনই প্রয়োজন হোক না কেন, আক্রমণ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের কোনো শত্রুতা নেই। আমরা ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। তবে আক্রমণের ক্ষেত্রে, এই অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিগুলোকে বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
ইরান তার ‘কাসেম বাসির’ ক্ষেপণাস্ত্রটি এমন একটা সময় সামনে আনলো, যখন ইসরায়েলের বেন গুরিওন বিমানবন্দরে হুতিদের হামলা ঘিরে উত্তপ্ত এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যে। হামলার জেরে ইতোমধ্যে হুতি এবং তাদের ইরানি সমর্থক; উভয়ের বিরুদ্ধেই ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এদিকে, গত ৩ মে রোমে পারমাণবিক চুক্তি ইস্যুতে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পরোক্ষ আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে। আলোচনার নতুন তারিখও ঘোষণা করা হয়নি এখন পর্যন্ত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবারই হুমকি দিয়ে আসছেন, যদি কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব না হয়, তবে ইরানের কর্মসূচি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানি কর্মকর্তারাও বরাবরই সতর্ক করে আসছেন, নিজেদের ইউরেনিয়ামের মজুদ দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারেন তারা।
আরটিভি/এসএইচএম/আইএম