ঢাকাশুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইরানে হামলার প্রস্তুতি ইসরায়েলের, নেতানিয়াহুকে শাসালেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ 

বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ , ০১:০৯ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে কড়া ভাষায় শাসিয়েছেন তিনি। 

বিজ্ঞাপন

মূলত, পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা চলছে এবং এই মুহূর্তে ইসরায়েলের কোনো হঠকারী পদক্ষেপে এ আলোচনা ভেস্তে যাক, তা কোনোভাবেই চাইছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। 

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ইরানের ওপর কোনও সামরিক হামলা না চালানোর জন্য কড়াভাবে সতর্ক করেছেন,যাতে তার প্রশাসন তেহরানের সাথে একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তির জন্য আরও সময় পায়। কারণ, ওমান এবং ইতালিতে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েক দফায় দেশ দুটির মধ্যে আশাব্যঞ্জক আলোচনা হয়েছে।

বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তিনি নেতানিয়াহুকে জানিয়েছেন যে এখন ইরানে হামলা করা সঠিক হবে না, কারণ যুক্তরাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের খুব কাছাকাছি রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে সতর্ক করেছেন, তিনি যেন এমন কোনো পদক্ষেপ না নেন, যাতে সম্ভাব্য পরমাণু চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটন-তেহরান আলোচনা বিপন্ন হয়।

বিজ্ঞাপন

হোয়াইট হাউসের ওই সূত্রটি বলছে,  ইসরায়েলের পরিকল্পনা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন ট্রাম্প ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা। কারণ, ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা চালাতে পারে বলে তাদের কাছে খবর আছে, যা চলমান আলোচনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এমনকি এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ট্রাম্পের ‘সবুজ সংকেত’ ছাড়াই ইরানে হামলার নির্দেশ দিতে পারেন নেতানিয়াহু।

বিজ্ঞাপন

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, নেতানিয়াহুকে ট্রাম্পের বার্তা হলো, ‘তিনি চান না যে নেতানিয়াহু এমন এক সময়ে কোনো ঝামেলা করুন, যখন তিনি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে ট্রাম্প এ কথাও বলেছেন, আলোচনা ভেস্তে গেলে ‘বিকল্প ব্যবস্থাও’ টেবিলে রয়েছে। তবে তিনি প্রথমে দেখতে চান যে কূটনৈতিক সমাধান সম্ভব কিনা। 

পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এখন পর্যন্ত পাঁচ দফায় পরোক্ষ আলোচনা হয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার  ইতালির রাজধানী রোমে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সাথে পরোক্ষ বৈঠকে যোগ দেন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ। ওই বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেছেন, আলোচনায় বেশ ‘অগ্রগতি’ দেখা গেছে এবং চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে এই বিষয়ে বড় একটি ‘সুসংবাদ’ আসতে পারেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিতে সীমা আরোপ করেছিল এবং এর বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একতরফাভাবে সেই চুক্তি থেকে সরে আসেন, যার ফলে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে।

যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলছে, যেকোনো নতুন চুক্তিতে ইরানকে সম্পূর্ণভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে, কারণ এটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগোনোর সম্ভাবনা তৈরি করে। তবে ইরান বলছে, তাদের কর্মসূচি শুধু শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে।

একইসঙ্গে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার ছাড়তেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইরান। কারণ, এটিকে নিজেদের জাতীয় অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে তেহরান।

আরটিভি/এসএইচএম/এআর

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |