ইসরাইলের সামরিক অভিযানের পর এবার পাল্টা প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে ইরান। ঘোষণা দিয়েই তারা ক্ষান্ত হয়নি। পাল্টা হামলাও চালিয়েছে পরমাণু শক্তিধর দেশটি।
দেশটিতে ইসরাইলি সামরিক অভিযানের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ভোরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের অভিজাত সামরিক বাহিনী ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ও দুই বিজ্ঞানী নিহত হওয়ার পর এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে খামেনি বলেন, ভোরবেলায় ইহুদিবাদী সরকার আমাদের প্রিয় দেশের বুকে তার রক্তাক্ত ও কলুষিত হাত বিস্তার করেছে, আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়ে আগের থেকেও স্পষ্টভাবে তার বর্বর স্বভাব প্রকাশ করেছে। এর জন্য তাদের কঠিন শাস্তি ভোগ করতেই হবে।
তেহরান ও অন্যান্য শহরে ইসরায়েলি হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দেওয়া এই বক্তব্যে তিনি বলেন, এই হামলার মাধ্যমে ইহুদিবাদীরা নিজেদের জন্য এক তিক্ত ও যন্ত্রণাদায়ক পরিণতি ডেকে এনেছে এবং তা তাদের ভোগ করতেই হবে।
খামেনি জানান, এই হামলায় বেশ কয়েকজন কমান্ডার ও বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। তবে তাদের উত্তরসূরিরা অবিলম্বে তাদের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলোকে সামনে এগিয়ে নিতে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
এর আগে, ইরানের সশস্ত্রবাহিনীও ইসরায়েলকে কড়া জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
আজকের হামলায় নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি। ৬৫ বছর বয়সী সালামি সরাসরি খামেনির অধীনে কাজ করতেন এবং ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক মহলে ছিলেন অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি।
তিনি গত বছর এপ্রিল ও অক্টোবর মাসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গত জানুয়ারিতে আইআরজিসি’র একটি গোপন ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র কারখানায় তার উপস্থিতির ভিডিও ইরানি মিডিয়ায় প্রচারিত হয়।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর গঠিত এই অভিজাত বাহিনী শুধু সামরিক নয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক ক্ষমতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি। ইয়েমেন, সিরিয়া, লেবানন ও ইরাকে ইরানের মিত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেয় এই বাহিনী। দেশটির টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি, নির্মাণ, এমনকি গাড়ি শিল্পেও রয়েছে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা।
ইসরায়েল এখনও এই হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে খামেনির সরাসরি হুমকির পর আশঙ্কা করা হচ্ছে, বড় ধরনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসতে পারে।
আরটিভি/এএইচ