তীব্র সংঘাতময় ১২ দিন শেষে আপাতত যুদ্ধবিরতি চলছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে। ভয়াবহ এ সংঘাতের শেষ দিকে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও। টানা ১২ দিন হামলার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে ইরান; কিন্তু সার্বিক ফলাফল বলছে, ইরান ইস্যুতে ‘চরমভাবে মার খেয়েছেন’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার বন্ধু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
শনিবার (২৮ জুন) এমনই তথ্য উঠে এসেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক বিশ্লেষণে।
সাম্প্রতিক সংঘাতকে কীভাবে দেখছেন, আলজাজিরা এমন প্রশ্ন রেখেছিল ইরানের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষক আলী আকবর দারেনির সামনে।
জবাবে তিনি বলেন, ইরানের দৃষ্টিকোণ থেকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল উভয় দেশই তাদের লক্ষ্যে ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা এবং তারপর ক্ষমতার অবস্থান থেকে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আমন্ত্রণ জানানো। তিনি ইরানকে দেখাতে চেয়েছিলেন যে, তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং আমেরিকান দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া ইরানের আর কোন বিকল্প নেই। অন্যদিকে ইসরায়েলের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা, অস্থিরতা উস্কে দেওয়া এবং ইরানের নেতাদের পতন করা। কিন্তু, এমন কিছুই ঘটেনি।
আলী আকবর দারেনির মতে, সংঘাতে জড়ানোর কারণে ট্রাম্পই বরং ইরানের সঙ্গে তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি করার একটি ‘সুবর্ণ সুযোগ’ নষ্ট করেছেন। কারণ, তিনি ইরানকে আলোচনার টেবিলে থাকাকালীন প্রতারিত করেছিলেন আক্রমণ চালানোর ফন্দি এঁটে।
ইরানি এ গবেষকের ভাষ্য, ‘ট্রাম্প শান্তির রাষ্ট্রপতি হওয়ার দাবি করছিলেন, কিন্তু এখন তিনি প্রমাণ করেছেন যে তিনি যুদ্ধের রাষ্ট্রপতি।’
অন্যদিকে ইরানের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করতে গিয়ে নিজেই বিপদে পড়ে গেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে নিজ দেশেই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি; একইসঙ্গে হারিয়েছেন পশ্চিমা মিত্রদের একাংশের সমর্থনও। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরান শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লেও তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়নি। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই ইরানকে দেখছে ইসরায়েলি হামলার শিকার হিসেবে।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর