মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৩ হাজার ৩৫৪ জনে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটিকে সহায়তা করতে বিশ্ববাসীর প্রতি নতুন করে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থা।
গত ২৮ মার্চ ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার। এরপরই আরেকটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে দেশটিতে। দুই দফার প্রচণ্ড ভূকম্পনে আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে দেশটির রাষ্ট্রয়াত্ত্ব সংবাদমাধ্যম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ দুর্যোগে আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৫০৮ জন। এছাড়া, এখনও নিখোঁজ আছেন ২২০ জন।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলন শেষে শুক্রবার দেশে ফেরেন মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। ব্যাংককে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ও থাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে সর্বপ্রথম উদ্ধারকারী পাঠায় চীন, রাশিয়া এবং ভারত। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দল যায় সেখানে। ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও তাদের শনাক্ত করার কাজ করছেন তারা।
পৃথিবীতে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ সহায়তায় সাধারণত সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাতব্য সংস্থা ইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন।
এর মাঝেও গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত মিয়ানমারকে ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। সেইসঙ্গে তারা জানিয়ে দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রই সবসময় নেতৃত্ব দেবে, এমন চিন্তা করা অযৌক্তিক।
২০২১ সালে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সুচিকে রক্তপাতবিহীন এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। কিন্তু, এরপর সেনা সরকারের সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। ক্রমেই গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে মিয়ানমারে। দেশটির স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে প্রায় সব সেবাই ভেঙে পড়েছে এই যুদ্ধের কারণে। এর মধ্যেই সবশেষ আঘাত হানলো মহাশক্তিশালী ভূমিকম্প, মিয়ানমারবাসীর দুর্ভোগকে আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছে যা।
আরটিভি/এসএইচএম