জার্মানিতে সুরক্ষা কমার পর গির্জায় আশ্রয়প্রার্থী বাড়ছে

ডয়চে ভেলে

সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ , ০৯:১৫ পিএম


জার্মানিতে সুরক্ষা কমার পর গির্জায় আশ্রয়প্রার্থী বাড়ছে
ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চের তথ্য অনুসারে, কিছু জায়গায় গির্জায় আশ্রয়ের আবেদন প্রায় চারগুণ বেড়েছে। তবে, তাদের পক্ষে সবাইকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়।

বিজ্ঞাপন

রোববার জার্মান সংবাদ মাধ্যম ফাংকে মিডিয়া গ্রুপকে জার্মানির প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ- ইকেডি জানিয়েছে, নির্বাসনের হুমকির দেশটিতে আরো বেশি সংখ্যক শরণার্থী সুরক্ষার জন্য গির্জার দিকে ঝুঁকছেন।

ইকেডি জানিয়েছে, নির্বাসনের চাপ বাড়ার ফলে অনেক জায়গায় অনুরোধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কখনো কখনো অনুরোধগুলো (আশ্রয়ের) চারগুণেরও বেশি বেড়েছে। ইকেডি-এর এক মুখপাত্র আঞ্চলিক গির্জাগুলির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএকে তিনি এই সংখ্যা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

তবে তিনি বলেন, প্রতিবেদন থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, উচ্চ চাহিদার কারণে অনেক অনুরোধ মঞ্জুর করা যায়নি। এর ফলে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপের ফলে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছেন অনেক শরণার্থী। রক্ষণশীল দল খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল- সিডিইউ এর সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের নেতৃত্বে আসন্ন সরকার অতীতের তুলনায় আরো বেশি আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানোর ইচ্ছা জানিয়েছে। ২০২০ সালে তুলনামূলক ভাবে প্রত্যাবাসন কমার পর বিদায়ী সরকারের অধীনে প্রত্যাবাসনের সংখ্যা এরই মধ্যে আবার বাড়তে শুরু করেছে।

গির্জায় আশ্রয় প্রার্থনা বিষয়ক জার্মান একুমেনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান ডিটলিন্ড উয়োখিমস এর কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন, অনিরাপদ আবাসনে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ভয় এবং নিরাপত্তাহীনতা।

ফাংকে মিডিয়া গ্রুপের সংবাদপত্রগুলিকে উয়োখিমস বলেছেন, এর ফলে, নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার ভয় ক্রমশ বাড়তে থাকায় গির্জায় সুরক্ষার জন্য অনুরোধের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

জার্মান ফেডারেল অফিস ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি- বিএএমএফ অনুসারে, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৬১৭ জন আশ্রয়প্রার্থী গির্জায় সুরক্ষা পেয়েছেন। গত বছর একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ৬০৪ জন। জার্মানির গির্জাগুলো কয়েক দশক ধরে শরণার্থীদের একটি বিশেষ সুবিধার অধীনে অস্থায়ী আশ্রয় দিয়ে আসছে। কোনো আইনে এই সুবিধার কোনও দৃঢ় ভিত্তি নেই, তবে দেশের খ্রিস্টীয় এবং মানবিক ঐতিহ্য অনুসারে এই আশ্রয় দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

গির্জাগুলোতে আশ্রয় পাওয়া শরণার্থীরা আশ্রয় মামলা পুনর্মূল্যায়ন এবং অন্যান্য বিচারিক বিকল্প সন্ধানে প্রত্যাবাসন থেকে সাময়িক সুরক্ষা পেতে পারেন। এসব আশ্রয় প্রার্থনা মামলার বেশিরভাগ মামলাই তথাকথিত ডাবলিন মামলা। অর্থাৎ এসব মামলার অধীনে আশ্রয় প্রার্থনা করা ব্যক্তিকে যে ইইউ দেশে তিনি প্রথম এসেছেন সেখানেই তাকে ফেরত পাঠানো হবে।

গির্জার আশ্রয়ের সমালোচনা ক্রমবর্ধমান তবে, অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনের রাজনৈতিক দাবি জোরালো হওয়ার পর থেকে গির্জার আশ্রয় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। জার্মান একুমেনিক্যাল কমিটি অন চার্চ অ্যাসাইলাম জানিয়েছে, গির্জায় আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের পুলিশি উচ্ছেদের হুমকি ক্রমশ বাড়ছে। গত কয়েক বছরে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। গির্জার কর্মকর্তারাও মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন।

তবে ইকেডি এই প্রথার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে। বুধবার ইকেডি এর প্রকাশ করা একটি প্রচারপত্রে প্রোটেস্ট্যান্ট শরণার্থী কমিশনার ক্রিশ্চিয়ান স্টাবলিনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সুরক্ষা চাওয়া ব্যক্তিদের তাদের দুর্দশার স্বীকৃতি পাওয়ার শেষ উপায় হিসাবে সতর্কতার সঙ্গে যাচাই বাছাইয়ের পরই গির্জায় আশ্রয় দেওয়া হয়।

আরটিভি/এএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission