ঢাকাবৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালাতে চান ভারতীয় মন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ 

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ , ০৫:৫৩ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে। ঘটনার পর থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দুদেশ। তার ওপর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। এরই মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) টানা আট দিন গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে। 

বিজ্ঞাপন

উত্তপ্ত এ পরিস্থিতিতে ভারতের উদ্দেশে ভয়ানক পরিণতির হুঙ্কার ছাড়ছেন পাকিস্তানের মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারাও। হুমকি-ধমকিতে পিছিয়ে নেই ভারতীয় নেতারাও। এই যেমন, প্রয়োজনবোধে নিজের শরীরে বোমা বেঁধে পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলা চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জামির আহমেদ খান নামে ভারতীয় এক মন্ত্রী। দেশটির কর্ণাটক রাজ্য সরকারের আবাসন ও সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন তিনি। 

শনিবার (৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

বিজ্ঞাপন

জামির আহমেদ খানের ওই বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেই ভিডিওতে কর্ণাটক রাজ্য সরকারের এ মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, শরীরে বোমা নিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে আত্মঘাতী হামলা চালাবেন তিনি। এমনকি এ জন্য নাকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে অনুমতিও চেয়েছেন তিনি। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত শুক্রবার (২ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে জামির আহমেদ খান বলেন, পাকিস্তান বরাবরই ভারতের শত্রু। এমন দুঃখের দিনে যদি প্রধানমন্ত্রী মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমাকে যদি সুযোগ দেন, তবে আমি নিজেই সীমান্তে গিয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত। আমরা সবাই ভারতীয়, আমরা হিন্দুস্তানি। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। 

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আত্মঘাতী বোমা সরবরাহের আহ্বানও জানান কংগ্রেসের এ নেতা। তিনি বলেন, আমি যুদ্ধের জন্য পাকিস্তানে যাবো। মোদি-শাহ আমাকে আত্মঘাতী বোমা দিন। আমি তা শরীরে বেঁধে পাকিস্তানে গিয়ে হামলা করব।
 
এর আগে, পেহেলগাম হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জামির আহমেদ খান বলেন, প্রত্যেক ভারতীয়র ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত, এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। 
 
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া সিন্ধু নদের পানি ইস্যুতে কড়া বার্তা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। স্পষ্ট ভাষায় তিনি ঘোষণা দেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান। সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের জেরে ভারতকে হুমকি দেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ও দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোও। তিনি বলেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।

বিজ্ঞাপন

পাকিস্তান প্রয়োজনে পারমাণবিক হামলার জন্যও প্রস্তুত আছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ ও রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি। 

অন্যদিকে পেহেলগাম হামলায় জড়িত ও মদতদাতাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করব এবং এমন শাস্তি দেব, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। সময় এসেছে সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার। ১৪০ কোটি মানুষের দৃঢ় সংকল্প সন্ত্রাসের মদতদাতাদের চূর্ণ করে দেবে।

আরটিভি/এসএইচএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |