যেসব রোগ সারাবে সজনে ডাঁটা
সজনে একটি অতিপরিচিত পুষ্টি ও খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ সবজি। এতে প্রায় ৩০০ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।শরীরের প্রয়োজনীয় সব ভিটামিনের সাথে অত্যাবশ্যকীয় সব এমিনো এসিড সজনে পাতায় আছে বলে সজনেকে পুষ্টির ডিনামাইট বলা হয়। পুষ্টি ঘাটতি পূরণে সজনে ডাটার পাশাপাশি সজনে পাতাও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সজনের উপকারিতাগুলো-
- ব্লাড প্রেসার রোগীদের জন্য লবণ খুবই ক্ষতিকর, কিন্তু পটাসিয়াম লবণ কোন ক্ষতি করে না। সজনে ডাটায় সোডিয়াম ক্লোরাইড নেই । আর তাই এতে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রিত থাকে।
- বসন্ত রোগ প্রতিরোধে সজনে ডাটা এবং ফুল ভাজা বা তরকারি করে খাওয়া হলে জল বসন্ত ও গুটি বসন্তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি থাকে না। সজনে ফলের নির্যাস যকৃত ও প্লীহার অসুখে, ধনুষ্টংকার ও প্যারালাইসিসে উপকারী।
- শরীরে রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে সজনে। মানবদেহে রক্তের পরিমাণ কমে গেলে পানি দিয়ে সজনে ডাটা সেদ্ধ করে তার কস্ফাথ এবং ডাটা নিয়মিত চিবিয়ে খেলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
- সজনের ডাটা রক্ত সংবহনতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। ১০০ গ্রাম সজনে প্রোটিন পাওয়া যায় ২.৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৩.৭ গ্রাম, ক্যালরি ২৬, ভিটামিন বি ৪২৩ মি. গ্রাম, ভিটামিন সি ১২০ মি. গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ মি. গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৪ মি. গ্রাম, ফসফরাস ২৫৯ মি. গ্রাম, পটাসিয়াম ১১৬ মি. গ্রাম. আয়রন ৫.৩ মি. গ্রাম এবং সালফার ৩৭ মি. গ্রাম।
- সজনে ডাটায় রয়েছে অ্যামাইনো এসিড। সজনেকে খনিজ পদার্থের শক্তিঘর বলা হয়।
- দুধে এবং সজনা ডাটায় ক্যালসিয়ামের পরিমাণ যথাক্রমে ১২০ মি. গ্রাম এবং ৪৪০ মি. গ্রাম, কলায় পটাসিয়াম পাওয়া যায় ৮৮ মি. গ্রাম, তার তুলনায় সজনে পাবেন ২৫৯ মি. গ্রাম।
- ব্লাড সুগার রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখে সজনের পুষ্টি। কারণ এতে আছে ডায়াটিরি ফাইবার।
- কমলায় যেখানে ভিটামিন সি পাবেন ৩০ মি. গ্রাম, সেখানে সজনায় পাবেন ২২০ মি. গ্রাম। এমন তারতম্য রয়েছে আরও অনেক।
- এ ছাড়া অপুষ্টির অভাব থেকে দূরে থাকতে ভিটামিন সমৃদ্ধ সজনে পাতা খেতে পারবেন।
মন্তব্য করুন
শারীরিক দুর্বলতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সেরা ৭ খাবার
শীতকাল ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। অনেকেই শারীরিক দুর্বলতার কারণে শীতে নিজেকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেন এবং বিভিন্ন খাবারের ওপর নির্ভর করেন। তবে কিছুদিন পর দেখা যায়, কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না।
শীতে শারীরিক দুর্বলতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাবারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাইট্রাস ফল, রসুন, দই ইত্যাদি। এই খাবারগুলো আপনাকে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে।
সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এই বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। চলুন তাহলে একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
হলুদ: হলুদ অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী সমৃদ্ধ। এতে থাকা কারকিউমিন উপাদান রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি জোগায় এবং লিভার ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। নিয়মিত হলুদ খেলে ক্লান্তি থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
আদা: প্রাচীনকাল থেকেই নানা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি প্রদাহবিরোধী হিসেবে বিশেষ কার্যকারী। আদা খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সহজতর করে।
রসুন: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য রসুন একটি অতি কার্যকরী উপাদান। এতে থাকা অ্যালিসিন, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি সর্দি-কাশির সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।
গ্রিন টি: গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জন্য প্রসিদ্ধ, বিশেষ করে এতে থাকা ক্যাটিচিন উপাদান ইমিউন সিস্টেমকে সজীব রাখে। ক্যাফিন শরীর ও মনকে চাঙা করার পাশাপাশি মানসিক অবস্থাও ভাল রাখতে সহায়তা করে। পরিমিত পরিমাণ গ্রিন টি পানে আরও অনেক উপকার পাওয়া যায়।
পালং শাক: এই শাকে ভিটামিন সি, ই, এবং বিটা-ক্যারোটিনসহ নানা খনিজ রয়েছে, যা ইমিউন সিস্টেম বজায় রাখতে সহায়তা করে। পালং শাকের আয়রন রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এবং শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও কার্যকর।
দই: দই হলো ভালো ব্যাকটেরিয়ার একটি পরিচিত ও স্বাস্থ্যকর উৎস। এর মধ্যে যুক্ত ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের স্বাস্থ্যে উপকারী। সুস্থ অন্ত্রের জন্য ইমিউন সিস্টেম জরুরি, আর দই সেই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে।
সাইট্রাস ফল: লেবু, মোসাম্বি, কমলা, এবং আঙুর সাইট্রাস ফলের অন্তর্ভুক্ত। এই ফলগুলো ভিটামিন সি-এর সমৃদ্ধ উৎস, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
এ খাবারগুলো আপনার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নয়নে সহায়ক হবে।
আরটিভি/এমএসআর/এস
আজ ‘প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরা দিবস’
প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরলেই ভারি বুক হালকা হয়, কিংবা মনটা একটু বেশিই চনমনে হয়ে ওঠে—এ কথা অস্বীকার সুযোগ নেই। জড়িয়ে ধরা কেবল ভালোবাসার প্রকাশ নয়, এটি মানসিক শান্তি, স্বস্তি এবং সংযোগের প্রতীক। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, আলিঙ্গন মানুষকে মানসিক চাপ কমাতে, সম্পর্কের বন্ধন মজবুত করতে এবং সুখ বাড়াতে সহায়তা করে।
প্রিয়জনকে কম-বেশি সবাই-ই জড়িয়ে ধরি। এই জড়িয়ে ধরাটা বিশ্বাস, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও স্নেহের অনুভূতি বাড়াতে সাহায্য করে।
আজ ৩ ডিসেম্বর। প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরার দিন বা ‘লেটস হাগ ডে’। এ দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয়। দিবসটি কবে থেকে ও কী কারণে পালন করা শুরু হয়, সে বিষয়ে তেমন সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
যতদূর জানা গেছে, কেভিন জাবর্নি নিামক এক ব্যক্তি এই দিনের পেছনে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। তিনি জনসমক্ষে একে অপরের প্রতি স্নেহ দেখাতে লোকেদের উত্সাহিত করতেই প্রথম জাতীয় আলিঙ্গন দিবস উদযাপন করেন।
দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো, একে অপরের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন করা; যা আলিঙ্গনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। আলিঙ্গনের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও আছে।
জানলে অবাক হবেন, আলিঙ্গনের ফলে মানসিক চাপ কমে যাওয়ার প্রভাব আমাদের দৈনন্দিন সুস্থতার ক্ষেত্রেও পড়ে। আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট একাডেমিক পাবলিশিং কোম্পানি প্রকাশিত সেজ জার্নালস চার শতাধিক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর একটি গবেষণা করে। গবেষকেরা সেখানে দেখেন, আলিঙ্গন কোনো ব্যক্তির অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস করতে পারে। এ সময় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা বেশি আলিঙ্গন পেয়েছেন, তাদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা কম ছিল।
হয়তো আদিকাল থেকেই মানুষের মধ্যে জড়িয়ে ধরা বা আলিঙ্গনের আনন্দ আবিষ্কৃত হয়েছিল, যখন মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে যে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরা কতটা মধুর। যেভাবেই দিবসটির শুরু হোক না কেন, আজও এটি বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভালোবাসা ও মমতা প্রকাশের একটি উপায় হিসেবে বিদ্যমান।
মজার বিষয় হলো, জড়িয়ে ধরা বা আলিঙ্গন একটি সর্বজনীন ভালোবাসার প্রকাশ। যখন বিভিন্ন সংস্কৃতিতে অভিবাদনের ধরন পরিবর্তিত হয়, যেমন—করমর্দন, নমস্কার বা হাই-ফাইভ, তখন আলিঙ্গন প্রায় সব সংস্কৃতিতেই ভালোবাসা ও সংযোগ প্রকাশের সাধারণ মাধ্যম হিসেবে দেখা যায়। মানুষের সুস্থ এবং সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য আলিঙ্গন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিশেষত সদ্যোজাত শিশুদের জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যে শিশুরা ছোটবেলায় আলিঙ্গন বা স্নেহলাভ পায় না, তারা সাধারণত সুস্থ এবং ভালোবাসা-ঘেরা শিশুদের মতো সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে না।
তবে কেবল শিশুরাই নয়, প্রাপ্তবয়স্করাও আলিঙ্গনের সুফল পেতে পারে। আসলে, বহু গবেষণায় দেখা গেছে যে আলিঙ্গন কেবল মানসিক ও আবেগগত দিক থেকেই নয়, শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্যও উপকারী।
তাই লজ্জা নয়—প্রস্তুত হন এবং ‘জড়িয়ে ধরা দিবস’-এ কাউকে জড়িয়ে ধরুন!
সূত্র্র: ডে’জ অব দ্য ইয়ার
ফ্যাটি লিভার থেকে বাঁচতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি
লিভার বা যকৃতে অল্প চর্বি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে তা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিষয়টি লিভার ক্যানসার ও সিরোসিসের দিকে যেতে পারে।
হাঁটু এবং পিঠে ব্যথার কারণে বছরখানেক আগে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন ইয়ানিক ফ্যাশার। সেই সময় তার লিভার পরীক্ষা করা হলে ডা. ফ্রিডহেল্ম জাইক তাকে জানান, তার ফ্যাটি লিভার রোগ হয়েছে৷
ফ্যাশার জানতেন, তার ওজন বেশি। ১.৮০ মিটার উচ্চতার ফ্যাশারের ওজন ১৩০ কেজি ছিল। তবে লিভারের সমস্যা তাকে অবাক করেছিল।
ডা. ফ্রিডহেল্ম জাইক বলছেন, আগামী বছরগুলোতে আমরা এই সমস্যা আরও বেশি দেখবো- ফ্যাটি লিভার, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়বে। এটা আমাদের ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টারগুলোর জন্য উদ্বেগের। ফ্যাশার নিশ্চিতভাবেই সেদিকে এগোচ্ছেন। ফ্যাটি লিভারের কারণে ক্যানসার ও সিরোসিস হতে পারে। এক পর্যায়ে ট্রান্সপ্ল্যান্টই একমাত্র সমাধান হতে পারে। ফ্যাশার সেটি এড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সমস্যা হলো, ফ্যাটি লিভারের জন্য কোনো ওষুধ নেই।
ডা. জাইক বলেন, ফ্যাটি লিভারের জন্য কোনো পিল নেই৷ অনেক গবেষণা চলছে, কিন্তু এখনও প্রমাণিত কোনো চিকিৎসা নেই। তাই জীবনযাপনে পরিবর্তন আনাই এখন পর্যন্ত একমাত্র সমাধান।
ফ্যাশারের কাছে জীবনযাপন পরিবর্তন মানে ওজন কমানো। এখন তিনি নিজের জন্য অনেক সবজি রান্না করেন। আগে অনেক ফাস্ট ফুড খেতেন। ফ্যাশার বলেন, ওজন কমানো শুরু না করলে কী হতে পারে সেটা যখন ডা. জাইক ব্যাখ্যা করেছিলেন তখন সত্যিই আমার চোখ খুলে গিয়েছিল। আমার বয়স ত্রিশের দিকে ছিল, জীবনের অর্ধেক তখনও বাকি। তাই মনে হয়েছিল, এখন না হলে আর কখন? তাই শুরু করেছিলাম৷ ফ্যাশার শুধু খাওয়ার মেন্যু পরিবর্তন করেননি, খাওয়ার সময়ও বদলেছেন।
তিনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করেছিলেন- অর্থাৎ দিনের প্রথম খাবারটা ছিল দুপুরে। এভাবে ২৫ কেজি কমিয়েছেন।
ডা. জাইক বলেন, ওজন কমানো ও জীবনযাপনে পরিবর্তন করাকে ম্যারাথন হিসেবে ভাবাটা গুরুত্বপূর্ণ, যার জন্য অনেক স্ট্যামিনার প্রয়োজন হয়। এটা এমন বিষয় হওয়া উচিত নয় যেটাতে আপনি দ্রুত ওজন কমানোর পর আবার দ্রুত ওজন বাড়ান।
ফ্যাশার আশা করছিলেন যেন তার লিভারের সমস্যা দূর হয়, তবে তিনি পার্থক্য অনুভব করতে পারছিলেন না। এক বছর পরে ফলোআপের সময় তিনি জানতে পারেন, ওজন কমানোর কারণে তার লাভ হয়েছে। লিভারে চর্বি উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে। ফ্যাশার তার লিভার ক্যানসার ও সিরোসিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি কমিয়েছেন। ওজন যেন আবার না বাড়ে সেজন্য নতুন জীবনযাপন চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর তিনি।
শীতে জুতো পরলে মোজায় গন্ধ, সমাধানে রইল টিপস
ঋতু পরিবর্তনের পালাবদলে দেশে নেমেছে শীত। আর এই সময় মোজা দিয়ে জুতা পরায় অনেকের পায়েই দুর্গন্ধ হয়। সাধারণত দীর্ঘক্ষণ মোজা পরে থাকার কারণে পায়ে দুর্গন্ধ হয়। শীতে পা ঘামার বড় কারণ পা ঢাকা জুতা পরা। তবে শুধু ঘামের জন্যই যে দুর্গন্ধ হয়, তা নয়। পায়ে দুর্গন্ধ হওয়াকে বলা হয় ব্রোমোডোসিস।
এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন জেনে নিন—
১) শীতকালেও অনেকের পা ঘেমে যায়। তাই পায়ের যত্ন নিন সবার আগে। প্রতিদিন রাতে বাড়ি ফিরে উষ্ণ পানিতে লবণ ফেলে পা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ভালো করে মুছে নিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
২) প্রতিদিন মোজা ধুয়ে নিন। পারলে ডেটল পানি ব্যবহার করুন, কিংবা একাধিক মোজা কিনে মাঝে মধ্যে বদলে নিন। দেখবেন এতে সমস্যা মিটবে।
৩) ভুলেও গন্ধ মোজায় পারফিউম স্প্রে করবেন না। এতে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
৪) মোজা পরার আগে ভালো করে পা ধুয়ে নিন। একটু বেকিং সোডা হাতে নিয়ে ভালো করে পায়ে ঘষে নিন। দেখবেন এতে সমস্যা দূর হবে।
৫) বাড়িতে ফিরে জুতার মধ্যে কিছুটা পরিমাণ কাগজ ঢুকিয়ে রাখুন। এতে জুতার মধ্যে হওয়া দুর্গন্ধ দূর হবে।
৬) সপ্তাহে একবার জুতা রোদে দিন। এতে জুতাও ভালো থাকবে এবং দুর্গন্ধও হবে না। প্রয়োজনে জুতার মধ্যে ন্যাপথোলিন রাখতে পারেন।
আরটিভি/এফআই
রান্নাঘরের মুশকিল আসান হবে কফি দিয়েই
দেহের ক্লান্তি কাটিয়ে মন মেজাজ ফুরফুরে রাখতে কফি অনেকটাই সাহায্য করে। তাই অনেকেরই সারাদিনের সঙ্গী এক কাপ কফি। কফিশপগুলোয় মানুষের ভিড় দেখলেই বোঝা যায় দিন দিন বাড়ছে এই পানীয়ের জনপ্রিয়তা। যারা কফির সমঝদার, তাদের কাছে দিনদুনিয়া উদ্ধার করে হলেও এক পেয়ালা কফি কোনো না কোনোভাবে চাই–ই। কারণ নিমিষেই ক্লান্তি কাটিয়ে চাঙ্গা হতে এককাপ কফিই যেনো ভরসা। তবে জানেন কি, কফির কাজ এখানেই শেষ নয় কিন্তু। রান্নাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে কফি দুর্দান্ত সাহায্য করে। রান্নাঘর পরিষ্কার করতে বেশ সময় লাগে। তার ওপর ঝক্কিও পোহাতে হয়। কিন্তু হাতের কাছে কফি থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান হতে পারে নিমেষে। রান্নাঘরের দেওয়ালের তেলচিটে দাগ থেকে কড়াইয়ের পোড়া দাগ, কফি এক নিমেষে পরিষ্কার করে দেয়।
জেনে নিন সহজ উপায়—
কড়াই পরিষ্কার: রান্না করতেই তরকারি পুড়ে গিয়েছে। সেই পোড়া দাগ তুলতে কালঘাম ছুটে যায়। এই কাজটা কফি করতে পারে। কড়াইয়ের গায়ে কফির গুঁড়ো মাখিয়ে রাখুন। তারপর বাসন মাজার জ্বালি দিয়ে চেপে ঘষুন। এতে সমস্ত দাগ উঠে যাবে।
ওভেন: রান্না করলে ওভেনে তেল, মশলা পড়বেই। অনেক সময় সেই সব দাগ উঠতে চায় না। এ ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে কফির গুঁড়ো। বাসন মাজার তরল সাবানের সঙ্গে কফির গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি দিয়ে গ্যাস-ওভেন, বার্নার পরিষ্কার করে নিন।
ফ্রিজ: ফ্রিজের দুর্গন্ধ পরিষ্কার করতে এবং ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করতে সাহায্য করে কফি। একটি কাপে কফি বিনস বা কফির গুঁড়ো রেখে দিন। কফির গন্ধ ফ্রিজের সমস্ত দুর্গন্ধ দূর করে দেবে। এ ছাড়া ফ্রিজ পরিষ্কার করার সময় সাবান পানির সঙ্গে কফির গুঁড়ো মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।
সিঙ্ক: মাঝেমধ্যে রান্নাঘরের সিঙ্কে ময়লা জমে যায়। পানি বেরোতে চায় না। এই সমস্যার সমাধান করতে পারে কফি। ফুটন্ত গরম পানিতে কফির গুঁড়ো ও তরল সাবান মিশিয়ে সিঙ্কে ঢেলে দিন। এতে সমস্ত ময়লা পরিষ্কার হয়ে বেরিয়ে যায়। আর পানি জমার সমস্যা হবে না।
আরটিভি/এফআই
মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ ব্যবহারে যা হয়
মেকআপ সামগ্রী সকলের কাছেই খুব শখের। তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও অনেকে তা ফেলতে পারেন না। তবে স্কিন কেয়ারের সামগ্রী, মেয়াদ উত্তীর্ণের পর ব্যবহার করলেই বিপদ। মেয়াদোত্তীর্ণ বা নষ্ট হয়ে যাওয়া মেকআপ ব্যবহারে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। ত্বক, চোখ, চুলের ছোটো বড় নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শখের দামি জিনিস ফেলে দিতে কষ্ট হলে, ব্যবহারের আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ দেখে রাখা উচিত।
অনেক সময় দেখা যায় প্রসাধনের কৌটো বা টিউবে মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখের উল্লেখ নেই কিংবা তারিখটি উঠে গেছে। তখন সেটি আদৌ ব্যবহারযোগ্য কি না তা বোঝা যাবে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য দেখে। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ব্যবহার উপযোগী রাখতেও যত্ন প্রয়োজন।
জেনে নিন মেকআপ সামগ্রীর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে বোঝার উপায়—
- লিপস্টিকের উপাদানে পানি থাকলে তা বছরখানেক পর্যন্ত ভালো থাকে। উপাদানে পানি না থাকলে লিপস্টিক তিন বছর অবধি ব্যবহার করা যায়।
- লিপগ্লস বছরখানেক পর্যন্ত ভালো থাকে। উপাদানে পানি থাকলে আরও আগে নষ্ট হয়ে যায়।
- নেলপলিশ তিন বছরেরও বেশি সময় পর্যন্ত ভালো থাকে।
- ব্লাশঅন তরল, পাউডার বা ক্রিমজাতীয় যেমনই হোক না কেন, তিন বছর অবধি ব্যবহার করা সম্ভব।
- আইশ্যাডোর উপাদানে পানি থাকলে এক বছরের মধ্যে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। পানিহীন আইশ্যাডো অবশ্য ২-৩ বছর পর্যন্ত নিরাপদ থাকে।
- পেন্সিল আইলাইনার এবং মাসকারা ৩-৬ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। তরল আইলাইনার অবশ্য দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
- কনট্যুর বা ব্রোনজারে পানি না থাকলে তিন বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
- তরল, পাউডার বা ক্রিমজাতীয় ফাউন্ডেশন দুই বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
- কনসিলার তরল হলে ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। ক্রিমজাতীয় হলে এক থেকে দেড় বছর এবং পাউডারজাতীয় হলে দুই বছর ঠিক থাকে।
- পারফিউম বা বডি স্প্রে সাধারণত ব্যবহার করা যায় ৩-৫ বছর।
- মুখের ক্রিম তিন মাসের মধ্যে ব্যবহার করে ফেলা উচিত।
- হাইলাইটারও কনসিলারের মতো ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত নিরাপদ।
আরটিভি/এফআই
হাঁটারও আছে নিয়ম, না জানলেই বিপদ
হাঁটা শরীরের পক্ষে ভালো, তবে বুঝে-শুনে। নাহলে সমস্যা হতে পারে। আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, জয়েন্টে ব্যথা আরও কত কী সঙ্গী হয়। কেমন হবে হাঁটার নিয়ম? অতিরিক্ত বেসামাল হাঁটাচলার খারাপ দিকগুলোয় বা কী কী, চলুন জেনে নিই।
আসলে আমরা সবাই জানি, হাঁটা খুবই উপকারী। কিন্তু এটা কজন জানেন যে হাঁটা ভালো, কিন্তু সেটা যদি সঠিক সময় মেনে, সঠিক নিয়ম মেনে না করা হয় তা হলে কিন্তু ভালোর আড়ালে বিপদ আছে। কারণ হাঁটা মানে শুধু হাঁটা নয়, এর সঙ্গে আরও অনেক কিছুই যুক্ত রয়েছে। কীভাবে হাঁটা হচ্ছে, কতক্ষণ, কখন, কী রকমভাবে – সব কিছুর ওপর নির্ভর করবে হাঁটার উপকারিতা।
আজকাল হাঁটুর সমস্যা যেভাবে সবার সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাতে করে এটা ঠিকই যে, নিত্য হাঁটাচলার মধ্যেই লুকিয়ে আছে হাঁটুর ভালো-মন্দ। আর্থ্রাইটিসের সমস্যা তাই এত বাড়ছে। ৩৫ বছর পরেই হাঁটু-কোমরে ব্যথা শুরু হচ্ছে।
প্রতিদিন হাঁটা শরীরের জন্য ভালো কিন্তু বেশি হাঁটা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ। অস্টিওআর্থ্রাইটিস রিসার্চ সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল জার্নালের তথ্য, সঠিক নিয়মে না হাঁটা ও বেশি সিঁড়ি ভাঙা অস্টিওআর্থাইটিসের অন্যতম কারণ।
অনেকের ধারণা সাধারণত ঘরের কাজ করা, বাইরে কাজ করা, প্রতিদিন অফিস যাওয়া এসব ক্ষেত্রে আমাদের যে পরিমাণ হাঁটাচলা হচ্ছে তাতেই হয়তো উপকার হয়ে যাচ্ছে। এটা কিন্তু সাধারণ হাঁটা। উপকার নগণ্য।
আসলে উপকার পেতে ব্রিস্ক ওয়াকিং বা জোরে হাঁটা দরকার। অর্থাৎ ৩-৬ হাজার স্টেপ দ্রুতগতিতে হাঁটা। টানা একবারে হাঁটতে না পারলে সকালে কিছুক্ষণ ও বিকালে কিছুক্ষণ ব্রিস্ক ওয়াকিং করা যেতে পারে। তবে ব্রিক্স ওয়ার্কিং-এর সঠিক পদ্ধতি জানেন না বলেই হাঁটার পরও হাঁটুব্যথা কমার বদলে বাড়ছে।
সাধারণত সুফল পাওয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় বা সকালবেলা একঘণ্টা হাঁটা দরকার। তার মধ্যে ভাগ করে নিতে হবে এইভাবে—
প্রথম ১৫ মিনিট সাধারণ গতিতে হাঁটুন, তার পর ধীরে ধীরে গতি বাড়ান। আমরা সাধারণত ঘাম হতে শুরু করলে মনে করি হেঁটে উপকার হচ্ছে, তারপর হাঁটা থামিয়ে দিই। এটা নয়, হাঁটার ক্ষেত্রে ঘাম হতে শুরু করার পর আরও ২০-৩০ মিনিট হাঁটলে তবেই উপকার মিলবে। তারপর ধীরে ধীরে গতি কম করে আরও কিছুক্ষণ বা ১০-১৫ মিনিট হেঁটে, হাঁটা থামাতে হবে। এই পদ্ধতি অনেকেই মানেন না। তখনই হিতে-বিপরীত হয়।
শুরুতেই খুব জোরে হাঁটতে শুরু করেন, দ্রুত ওজন কমাবেন বলে অনেকক্ষণ ধরে হাঁটেন এবং ভুল গতিতে হাঁটেন। ভুল নিয়মে অতিরিক্ত হাঁটলে হাঁটুর মধ্যে একটা আঘাত তৈরি হয়। ফলে হাঁটুর চারিদিকে একটা রস জমতে থাকে। যা একটা ইনফ্লেমেটারি বা প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া তৈরি করে ও শরীরের কিছু খারাপ পদার্থ হাঁটুতে জমা হতে থাকে। তা থেকে হাঁটুর কার্টিলেজ ড্যামেজ হতে শুরু করে। আর সঠিক নিয়মে হাঁটলে দেখা গিয়েছে হাঁটুর সমস্যা প্রায় ১৫ শতাংশ কমিয়ে রাখা সম্ভব। আর উলটো হলে ১২ শতাংশ হাঁটুর সমস্যা হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। হাঁটা ও একজনের ওজন, উচ্চতা ও বিএমআই-এর ওপর নির্ভর করে হাঁটার ভালো-মন্দ।
তবে সব ঠিক থাকলে হাঁটার উপকার তো আছেই। প্রত্যেকটি জয়েন্টে ফ্লুইড (সাইনোভিয়াল ফ্লুইড) ও কার্টিলেজ (আর্টিক্যুলার) থাকে। যখন একজন হাঁটেন তখন জয়েন্টের মুভমেন্ট হয়। ফলে ফ্লুইডের সার্কুলেশন বেড়ে যায়। কার্টিলেজগুলো এই ফ্লুয়িডের দ্বারা ধুয়ে যায় বা পরিষ্কার হয়ে যায়। ফলে কার্ডিলেজগুলো অনেক বেশি সক্রিয় ও ভালো অবস্থায় ফিরে যায়। জয়েন্টের নিউট্রিশন বেড়ে যায়।
শুধু জয়েন্টেই নয়, এর পাশে থাকা সমগ্র পেশিই সচল ও শক্তিশালী হয়। এছাড়া হাঁটার সঙ্গে ক্যালোরিও বার্ন হয়। হাঁটা সব সময় যে শুধুমাত্র হাঁটুর ব্যায়াম তা কিন্তু নয়, এটা সমগ্র শরীরের এক্সারসাইজ। সমগ্র অঙ্গপ্রত্যঙ্গে এর সুপ্রভাব পড়ে। পায়ের গোড়ালি, ছোট ছোট জয়েন্ট, হাঁটু, কোমর, শিরদাঁড়া, ঘাড় ও কাঁধের মুভমেন্ট হাঁটার মাধ্যমে সচল থাকে।
উপকার পেতে যেগুলো মানবেন:
প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় নিয়ম মেনে টানা হাঁটুন। সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে হাঁটায় উপকার নেই।
অতিরিক্ত সিঁড়ি ভাঙা বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা হাঁটুর ক্ষয় বাড়ায়।
সস্তার জুতো না পরে ভালো জুতো সব সময় পরুন। একদম ফ্ল্যাট জুতো না পরে হালকা হিল থাকবে ও নরম জুতো পরাই শ্রেয়। মর্নিং ওয়াকের জন্য স্পোর্টস শু উপকারী।
টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিচে বসে কাজ করে যাওয়া ঠিক নয়। এতে করে হাঁটু সোজা করতে না পারলে হাঁটুর ক্ষতি হতে শুরু করে। এমনকী, যারা টেবিলে কাজ করেন চেয়ারে বসে, তারা যদি পা-টাকে ভাঁজ করে বসেন তাতে ক্ষতি। যতটা সম্ভব সোজা করে বা পা ছড়িয়ে চেয়ারে বসে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ খুব অল্পমাত্রায় বা ১০-১৫ ডিগ্রিতে ভাঁজ করে হাঁটুটা রাখলে উপকার। টানা তিন ঘণ্টা বসে কাজ করছেন, এমন হলে মাঝেমধ্যেই পায়ের গোড়ালি ঘুরিয়ে বসে বসেই ব্যায়াম করে নিতে হবে। এটা জয়েন্টে ফ্লুয়িডের সার্কুলেশন বাড়ায়। ভালো থাকে।