বড়দিনে ঘর সাজানোর নানা আয়োজন
‘জিঙ্গল বেলস জিঙ্গল বেলস, জিঙ্গল অল দ্য ওয়ে।’ আর কদিন পরই বড়দিন। আড় তাই চলছে বড়দিনের শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি। ঘরে উৎসবের আমেজ তৈরি করতে কতরকম আয়োজনের চেষ্টাই না চলছে। কীভাবে সাজালে ব্যতিক্রমী হবে, কোন জায়গায় কী রাখা যায়। আর সেই চেষ্টায় সহযোগিতা করতে জানিয়ে দেব কিছু উপায়।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসবে আয়োজনের কমতি থাকে না। বড়দিনের ঘর সাজানোর আয়োজন বাড়তি আমেজ নিয়ে আসে। বর্তমানে গির্জার আশপাশ ও খ্রিস্টান পরিবারগুলো ছাড়াও রেস্তোরাঁ, মার্কেট ও বড় শপিংমলগুলো এমনকি বিভিন্ন কর্পোরেট অফিস বড়দিন উপলক্ষ্যে সাজানো হয়। সুসজ্জিত ক্রিসমাস ট্রি যেমন দেখতে ভালোলাগে তেমনি একটা উৎসব-ভাব সৃষ্টি করে। অন্যদিকে সান্তাক্লজ কেবল শিশুদেরই আনন্দ দেয় না পাশপাশি বড়দের মাঝেও আশার সঞ্চার করে।
আগে কেবল রঙিন কাগজের ঝালর, ঝুলন ও বেলুন দিয়ে ঘর সাজানোর প্রচলন থাকলেও সময়ের সাথে সাথে সাজে এসেছে নতুন মাত্রা। উৎসবের আনন্দ সবার জন্যই। তাই আজকাল কেবল খ্রিস্টান-ধর্মাবলম্বীরা নয় বরং যে কেউ নিজের ঘরে বছরের এই সময়টায় ‘ক্রিসমাস কর্নার’ তৈরি করতে পারেন। ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর প্রচলন বাড়ায় সহজলভ্য হয়েছে এসব সাজানোর সামগ্রী।
বড়দিনে আনন্দ উদযাপনের অন্যতম অনুসঙ্গ সান্তাক্লজ এবং ক্রিসমাস ট্রি। এই দুইটি জিনিস সাজানোর পাশাপাশি টেবিলের কথা ভোলা যাবে না। কারণ এই টেবিলেই রাখা হবে উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় খাবার কেকটি।
আর টেবিলটি সাজানো থাকতে পারে নানরকম লাইট, মোম, আর সান্টাক্লজের পুতুল দিয়ে। শিশুদের জন্য পার্টি হলে রাখতে পারেন আনব্রেকেবল বা ওয়ানটাইম বাসনপত্র। গ্লাসের গায়ে ঝুলিয়ে দিতে পারেন ক্রিসমাস ট্যাগ। সেখানে লিখে রাখতে পারেন শিশুদের নাম। তাহলে পানি খাওয়ার সময় গ্লাস পাল্টাপাল্টি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
ঘরে আনতে পারেন প্রকৃতির ছোঁয়া। ইন্ডোর প্ল্যান্ট থাকলে কোনও ভাবনাই নেই এক্ষেত্রে। আর তা না থাকলে বারান্দা বা ছাদে রাখা ছোট মাপের টব এনে পছন্দমতো জায়গায় সাজিয়ে রাখুন। ডাইনিং টেবিলের পাশে তৈরি করুন পশুশালায় সদ্যোজাত যিশুর সেই পরিচিত দৃশ্য। এই দৃশ্যের জন্য যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার চেষ্টা করুন।
বড়দিনের পার্টির টেবিল সাজাতে হবে একটু আলাদাভাবে। উৎসবের আমেজ দিতে সেখানে রাখতে পারেন ভেলভেট বো ন্যাপকিন টাই, ক্যান্ডি স্ট্রাইপড ফেস্টিভ ব্যাগ এবং লাল রিবনে বাঁধা উপহার বাকসো। অথবা আপনার ইচ্ছে মতো যেকোনো উপহার রেখে দিতে পারেন।
আলোকসজ্জা ছাড়া কোনও উৎসবের আয়োজন ভাবা যায় নাকি! তারওপর যেহেতু উপলক্ষ বড়দিনের পার্টি, তাই টেবিলে রাখতে পারেন উজ্জ্বল মোমবাতি। ঘরে ঝুলিয়ে দিতে পারেন বাহারি লণ্ঠন। বিভিন্ন মাপের উজ্জ্বল টেবিল ক্যান্ডলও রাখতে পারে। এগুলো উৎসবের মেজাজ আনতে বেশ কার্যকরী। এগুলো সঙ্গে থাকতে নানা রঙের ফুল। ফুলদানিটিও ভরা থাকলো ঘরের একটি জায়গায়।
এইটুকুতেই দেখবেন বড়দিনের উৎসব কানায় কানায় ফুটে উঠেছে আপনার ঘরে।
যেখানে মিলবে বড়দিনের ঘর সাজানোর সামগ্রী
ঢাকায় বেশ কিছু বড় দোকানের পাশাপাশি গির্জার সামনে, রাজধানীর হলিক্রস ও বটমলী হোম বালিকা স্কুলের সামনে বড়দিনের ঘর সাজানোর সামগ্রী পাওয়া যায়।
এছাড়াও ঢাকার ফার্মগেট এলাকার ফার্মভিউ সুপার মার্কেটের দোতলায়, নিউমার্কেট, গুলশানের ডিসিসি ও পুরান ঢাকার চকবাজারে এই ধরনের উপকরণ মিলবে।
ক্রিসমাস ট্রি, ঘন্টা, হরিণ, সান্তাক্লজ, ছোট বড় গিফট বক্স, নানান রংয়ের লাইট, বেলুন, রিবন ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়।
বড়দিন মানেই ‘স্টার’ বা ‘তারা’। এই তারা মান ও উপাদান ভেদে কিনতে পাওয়া যায় একেক দামে। ‘মেরি ক্রিসমাস’ বা ‘শুভ বড়দিন’ লেখা দেয়ালে রঙিন কাগজও পেয়ে যাবেন নানা ডিজাইনের মধ্যে।
ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর জন্য রঙিন বল, তারা, স্বর্গদূত, ছোট ক্রিসমাস ফাদার ইত্যাদি পাওয়া যাবে এসব জায়গায়।
মান ও আকার ভেদে ক্রিসমাস ট্রি পাওয়া যাবে বিভিন্ন দামে। রাজধানীর চকবাজারে বড়দিনের ঘরের সাজসজ্জার পসরা বসে। বিভিন্ন দামের জিনিস পাওয়া যায় এখানে।
ডিসিসি মার্কেটে মিলবে একটু উন্নত মানের সামগ্রী। এখানে সম্পূর্ণ সাজানো অবস্থায় ক্রিসমাস ট্রি পাওয়া যায় যে কারণে দাম তুলনায় বেশি।
বড়দিনের সাজসজ্জায় রঙিন বাতির ব্যবহার বেশ প্রচলিত। মরিচ বাতির পাশাপাশি বর্তমানে নানান আকারের- তারা, স্বর্গদূত, বল, ক্রিসমাস ট্রি ইত্যাদি আকারের রঙিন বাতি পাওয়া যায়।
ঢাকার নিউমার্কেট ও চকবাজারে বাতির নানান রকম দেখা যায়। আকার ভেদে দামের পার্থক্য ঘটে। তবে দামাদামি করে কিনলে সুলভে ভালো পণ্য সংগ্রহ করা যায়।
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন