যেভাবে তৈরি করবেন আপেল চা
বিশ্বে চা প্রেমী মানুষের সংখ্যা অগণিত। আড্ডায় কিংবা ঘুম ভাঙা ভোরে এক কাপ চা হৃদয়ে প্রশান্তি এনে দেয়। নিয়মিত যারা চা খেয়ে অভস্ত্য, তারা একবেলা চা না খেতে পারলে যেন স্বস্তিই পান না। আর সেই চা যদি হয় বিভিন্ন স্বাদের তাহলে তো চা প্রেমীদের আনন্দ আরও দ্বিগণ হয়ে যায়।
চলুন তেমনই এক বিভিন্ন স্বাদের চায়ের রেসিপি জেনে নেওয়া যাক—
উপকরণ
আপেল ১টি, মধু ১ টেবিল চামচ, চা-পাতা ১ চা-চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, দারুচিনি ১ টুকরা, পানি ২ কাপ।
প্রণালি
ছোট ছোট টুকরা করে নেবেন আপেল। পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে তাতে চা পাতা ও আপেলের টুকরা, দারুচিনি দিন। কয়েক মিনিট ফোটান। চা ছেঁকে কাপে নিন। এবার এতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন আপেল চা।
আরটিভি/এইচএসকে
মন্তব্য করুন
প্রথমবার ‘ব্লাইন্ড ডেটে’ যেতে মাথায় রাখুন ৫ বিষয়
মানুষটার সম্পর্কে কিছু জানেন না। কেমন দেখতে, কী নাম, পেশা কী, কোথায় থাকে, কিছুই না। প্রথমবার মানুষটাকে দেখবেন। চিন্তা করছেন আবার এক্সসাইটমেন্টও রয়েছে। ‘ব্লাইন্ড ডেট’-এ যাওয়ার জন্য আগে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। অনেক সিঙ্গল মানুষই এখন ‘ব্লাইন্ড ডেট’-এ যেতে পছন্দ করছেন। আগে মানুষটার বিষয়ে কিছু না জেনে তার সঙ্গে ডেটে যাওয়াই হলো ‘ব্লাইন্ড ডেট’। কিন্তু ব্লাইন্ড ডেটে গেলেই হবে না, কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
জেনে নিন বিষয়গুলো—
১) ব্লাইন্ড ডেটের জন্য কফি শপ, বই ক্যাফের মতো জায়গা বেছে নিন। যেহেতু মানুষটাকে আগে থেকে চেনেন না, সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তার কথাটাও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। তাই এমন জায়গা বেছে নিন যেটা আপনি চেনেন এবং জায়গাটা সুরক্ষিত।
২) প্রথমবার দেখা করতে গেলে কি পোশাক নিয়ে সচেতন হওয়া দরকার? এই প্রশ্নটা অনেকেরই মনেই থাকে। প্রথমত, এমন পোশাক পরুন, যেটায় আপনি কমফর্টবেল। পোশাক পরে যদি আপনি নিজেই অস্বস্তিবোধ করেন, তা হলে সেটা না পরাই ভালো। এ ছাড়া আবহাওয়া বুঝে ড্রেস বেছে নিন।
৩) ব্লাইন্ড ডেটে প্রত্যাশা না রাখাই ভালো। কোনও এক্সপেকটেশন ছাড়াই ডেটে যান। সেখানে গিয়ে মানুষটার সঙ্গে যদি মনের মিল হয়, তখনই আগে এগোনোর কথা ভাববেন। কিন্তু প্রথমেই কোনও প্রত্যাশা রাখবেন না।
৪) ব্লাইন্ড ডেটে গিয়ে সামনের মানুষকে চেনাটাই হলো প্রথম কাজ। তাই দু’জন দু’জনের পছন্দের কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন। চেষ্টা করুন মানুষটাকে চেনার, বোঝার। পাশাপাশি ভালো শ্রোতা হওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের বিষয়ে শেয়ার করার বদলে সামনের মানুষটার কথা শুনুন।
৫) ব্লাইন্ড ডেটে গিয়ে যে মানুষটাকে পছন্দ হবে কিংবা পছন্দ হবে না, এত কিছু প্রথমেই ভাববেন না। তা ছাড়া একবার আড্ডা দিলে বা দেখা করলে বোঝা যায় না, যে সে আপনার জন্য পারফেক্ট। তাই সময় নিন। তবে, পজিটিভ ভাবনার সঙ্গে ডেটে যান। ডেটে গিয়ে খারাপ লাগুক বা ভালো, সেটাকে গ্রহণ করুন।
আরটিভি/এফআই
আপনার জুতার যে সমস্যাগুলো অসুস্থতা বাড়ায়
সুন্দর জুতার পাশাপাশি সেটা যাতে আরামদায়ক হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কারণ পায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও এটা উপকারী। বাজারে এখন বিভিন্ন লুকের, বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা বেরিয়েছে। দাম আর ব্র্যান্ড দেখেই মানুষ জুতা কিনে থাকেন। কিন্তু এই জুতার কারণেও আপনার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে, জানেন? হিল, সমান্তরাল, হাঁটা কিংবা অফিসে যাওয়ার জুতা যদি প্রথমেই পরতে গিয়ে অস্বস্তি হয় তাহলে সেটা পরা আর কখনও ঠিক হয় না। কারণ জুতার কারণেই বাড়তে পারে আর্থ্রাইটিস, হাঁটুর সমস্যা, ফ্ল্যাটফিটের মত সমস্যাগুলো।
বিএইচইউর একটি সমীক্ষা অনুসারে নিজের আরাম অনুসারে ঠিকঠাক মাপের জুতা না কেনার জন্য অনেক তরুণ খেলোয়াড় অনেক আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী এমন ১০০০ থেকে ১৫০০ জন খেলোয়াড়কে এই প্রশ্ন করা হয়েছে সমীক্ষার মাধ্যমে। তাদের সকলেরই বক্তব্য জুতোর কারণেই তাদের অনেক সময় পায়ের সমস্যা দেখা দিয়েছে, ব্যথা, আর্থ্রাইটিসের মত সমস্যা এসেছে।
এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পা-বিষয়ক চিকিৎসক জোডি আর.শোয়েনহাস বলেন, সঠিক মাপের জুতা দেহের ভারসাম্যে সামঞ্জস্য আনার পাশাপাশি সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উপকার করে।
জুতা পরার অস্বস্তি থেকে পায়ে অস্বস্তি, আঙ্গুলে ব্যথা, পেশিতে টান ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। আর দীর্ঘদিন এভাবে চললে অবস্থা গুরুতর হতে পারে। তাই সবসময় আরামদায়ক জুতা পরার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
সঠিক জুতা নির্বাচনের জন্য কয়েকটি বিষয় জেনে নিন —
প্রতি বছর পায়ের মাপ নেওয়া: শুনতে অবাক লাগতে পারে, তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও পায়ের গঠন পরিবর্তন হয়- একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন মার্কিন চরণ-চিকিৎসক এলিজাবেথ ডর্থি।
তিনি বলেন, বয়সের সাথে পায়ের পাতার সংযোগ স্থলে পরিবর্তন, কোলাজেন’য়ের স্থিতিস্থাপকতা কমা ইত্যাদি থেকে পায়ের আকার পরিবর্তিত হয়। এছাড়া ওজন বাড়া বা কমা, নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান ধারণ ও প্রসবের পর পায়ের রূপান্তর হতে পারে। তাই বছরে একবার অন্তত পায়ের মাপ নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেন ডা. ডর্থি।
পায়ের পাতার প্রস্থ বিবেচনা করা: শুধু লম্বায় নয় আরামদায়ক জুতা বেছে নিতে পায়ের পাতার প্রস্থের দিকেও নজর দিতে হয়ে। ডা. শোয়েনহাস বলেন, বেশি চিকন জুতা ব্যবহার করলে পায়ে ব্যথা হবে। সেই সাথে পড়বে পেশিতে চাপ। আবার কারও পায়ের পাতা সরু হলে সে চওড়া জুতা পরলে হাঁটায় ভারসাম্য থাকবে না। পিছলে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে।
দিনের শেষে জুতা কেনা: বয়সের সাথে যেমন পায়ের আকার পরিবর্তিত হতে পারে তেমনি সকালের চেয়ে বিকাল বা সন্ধ্যায় পায়ের পাতায় ভিন্নতা আসে। তাই ডা. ডর্থি পরামর্শ দেন, সবসবময় দিনের শেষভাগে জুতা কেনার চেষ্টা করুন। কারণ সারাদিন পর পা একটু ফুলে থাকতে পারে। যে কারণে দিনের প্রথমভাগে কেনা জুতা দিন শেষে পরলে অনেক সময় আঁটসাঁট লাগে।
পায়ের পাতার মাঝের অংশের ভারসাম্য রক্ষা: পায়ের পাতার মাঝের অংশ বাঁকা থাকে। যে কারণে এই অংশে জুতার সঠিক ভার বহনের ক্ষমতা থাকতে হবে। অনেকের পায়ের পাতার মাঝের অংশ বেশি বাঁকানো হয়। এক্ষেত্রে কিছুটা উঁচু হিল’য়ের জুতা পরা উপকারী- বলেন ডা.শোয়েনহাস। যে জুতা পায়ের পাতার বাঁকানো অংশে ভালো ভারসাম্য দেবে না, সেটা ভালো হবে না।
আঙ্গুলের সামনে কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকা: জুতার অগ্রভাগ পায়ের আঙ্গুল লেগে থাকলে স্নায়ুতে চাপ পড়ে। সেই সাথে কড়া পড়া, আঙ্গুলে ব্যথা হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। জুতার সামনের দিক চওড়া বা আঙ্গুল যাতে স্বচ্ছন্দে থাকে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। আর সামনের দিকে সরু জুতা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে পায়ের সবচেয়ে বড় আঙ্গুলের থেকে অন্তত আধা ইঞ্চি যেন বাড়তি জায়গা থাকে সেটা খেয়াল করতে হবে।
আলাদা কুশন: পায়ের পাতায় আরাম দেওয়ার জন্য অনেক জুতার ভেতর আলাদা কুশন দেওয়া থাকে। এই কুশনগুলো অতিরিক্ত চাপ গ্রহণ করে পায়ের ওপর চাপ কমায়।
উপলক্ষ্যের ভিন্নতায় জুতা নির্বাচন: উদ্দেশ্যে অনুযায়ী জুতা বাছাই করতে হবে।। ডা. শোয়েনহাস বলেন, যেমন- খেলতে বা হাঁটতে গেলে গোড়ালিতে ভালো ভারসাম্য দেয় এমন জুতা পরা উচিত। এক্ষেত্রে স্নিকার্স উপকারী। আবার ভারোত্তলন বা এই ধরনের ব্যায়ামের জন্য সমতল জুতা ভালো। হাঁটার জন্য হালকা পাদুকা বাছাই করতে হবে।
জোর না করা: ডা. শোয়েনহাস’য়ের ভাষায়, যে জুতা প্রথমেই পরতে জোর দিতে হয় সেটা কখনই আর ঠিক হয় না। একটা কথা প্রচলিত আছে, কয়েকদিন ব্যবহারের পর জুতা আকার একটু বড় হয়। কথাটা ঠিক। তবে যেটা পরতে জোর দিতে হয় সেটা ছাড়লেও আরামদায়ক হয় না।
কেনার সময় পরতে গিয়ে জুতা জোর করে পায়ে গলাতে হলে, সেটা কেনা বাদ দিতে হবে। তাই দোকানে গিয়ে অতি পছন্দ হওয়ার পর, পায়ে আরাম না দিলে সেই জুতা কেনা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
সঠিক মাপের জুতা বাছাই: একইভাবে বাচ্চাদের মাপের চাইতে বড় জুতা পরানোর অভ্যাস রয়েছে অনেক অভিভাবকের, যা মোটেও ভালো নয়। এতে শিশুদের পায়ের বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আরামদায়ক জুতা না পরলে অনেকক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আরটিভি/এফআই
মস্তিষ্কের ধার বাড়াবে এই খাবারগুলো
আপনি কি কখনও এমন অবস্থায় পড়েছেন যেখানে আপনি কারও নাম বা কোনও জায়গার নাম মনে করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ছে না? অনেকেই বলে থাকেন যে বয়সের সাথে সাথে আমাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। এমনকি যুক্তি দেওয়ার সক্ষমতাও কমে আসে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের জোড় অনেকটাই কমে যায়, যার কারণে লোপ পায় স্মৃতিশক্তি। এতে ডিমেনশিয়া বা আলঝেইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এ কারণে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানো খুব জরুরি।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, কয়েকটি খাবার স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের অন্য রোগের সমস্যা ঠেকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
যেমন- মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুর গঠনে ওমেগা ৩-র ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্যামন, হেরিং, সার্ডিন, টুনা, মিষ্টি জলের মাছ এক্ষেত্রে সহায়ক।
কফির মূল দুই উপাদান হলো ক্যাফিন এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য দুই-ই উপকারী। এতে ঝিমুনি ভাব কাটে, মন চাঙ্গা থাকে, সজাগ হয়ে যায় মস্তিষ্ক।
ব্লুবেরির হাজারো গুণ, স্মৃতিশক্তিবর্ধক শক্তিও অন্যতম। ব্রেকফাস্টে খেতে পারেন, আবার স্মুদিও বানাতে পারেন।
রান্নাঘরে মজুত হলুদও স্মৃতিশক্তি প্রখর করে। এর মূল উপাদান কারকুমিন মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধির সহায়ক। বার্ধক্যেও মস্তিষ্ক সজাগ থাকে।
ব্রকোলিতে ভিটামিন কে, অ্যান্টঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। আমাদের কোষের মধ্যে যে Sphingolipids তাকে, তা তৈরিতে ভিটামিন কে-র ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চকোলেট আপনার জন্য ভালো হতে পারে! অন্তত ৭০% কোকো কন্টেন্টসহ ডার্ক চকোলেটে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। পরিমিতভাবে ডার্ক চকোলেট খেলে তা মস্তিষ্কের জন্য কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
সবুজ শাক-সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে কাজ করে। সালাদ, স্মুদি এবং সাইড ডিশে শাক-সবজি যোগ করুন। এগুলো আপনার স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে কাজ করবে। এছাড়াও মিলবে আরও অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা।
কুমড়োর বীজ মস্তিষ্কের ধার বাড়ায়। এতে মজুত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীর এবং মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, আয়রনে স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়।
আরটিভি/এফআই
নাক বন্ধে আরাম মিলবে এই পানীয়গুলোতে
শীত শুরু হতে না হতেই একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় অনেকের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে খুব সহজে অসুস্থ হয়ে পড়ে বাচ্চারা। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে হটাত করে ঠান্ডা লেগে যায়। সর্দি, কাশি, গলা ব্যথার সঙ্গে অনেকসময় জ্বরও আসে। বয়স্কদের মধ্যেও এই উপসর্গগুলো দেখা যায়। শীতের সময়ের এসব সমস্যা দূর করার জন্য সবচেয়ে ভরসাযোগ্য জিনিস হলো ঘরোয়া টোটকা। বেশ কয়েকটি পানীয় আপনি খুব সহজে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারবেন। আর সেগুলো পান করলে গলা ব্যথা থেকে নাক বন্ধ, মাথা যন্ত্রণা থেকে সর্দি-কাশি-কফের সমস্যা দূর হবে নিমিষেই।
কোন কোন পানীয় শীতকালে আপনাকে সুস্থ-সবল রাখবে, রইল তালিকা
শীতকালে নিয়মিত আমলকি বা আমলকির রস খেতে পারলে অনেক উপকার পাবেন আপনি। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন সামান্য পাতিলেবুর রস। আমলকির রস খেলে দূর হবে কাশির সমস্যা। গলা ব্যথা, সর্দিতেও আরাম দেবে এই পানীয়। কাঁচা আমলকি চিবিয়ে খেলেও উপকার অনেক।
আদা এবং পাতিলেবুর রস মিশিয়ে তৈরি করে নিন চা। এই চা শীতের দিনে পান করলে গলা ব্যথায় আরাম পাবেন। সর্দি, কাশি কিংবা জ্বর হলেও খেতে পারেন লেবু এবং আদার রস মেশানো চা। কাশির সমস্যা কমাবে আদার রস।
শীতের সময়ে প্রতিদিন গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করুন। এই পানীয়ের রয়েছে অনেক গুণ। বিভিন্ন ভাবে ভালো রাখবে আপনার শরীর। গরম দুধে হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন সামান্য গোলমরিচ এবং মধু। এই পানীয় শীতে শরীর গরম রাখবে।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগারও ইমিউনিটি বুস্টার ড্রিঙ্ক হিসেবে শীতকালে পান করতে পারেন আপনি। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন লবঙ্গ। অ্যাপেল সিডার ভিনিগার খাইখাই ভাব কমায় এবং মেটাবলিজম রেট বাড়ায়। ফলে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে।
শীতকালের মূল সমস্যা হলো সর্দি-কাশি। এক্ষেত্রে অব্যর্থ ওষুধ তুলসি পাতা। চায়ের মধ্যে মিশিয়ে নিতে পারেন তুলসি পাতার রস। তুলসি পাতার রস কাশির সমস্যা যেমন কমাতে সাহায্য করে তেমনই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
আরটিভি/এফআই
জেনে নিন হার্ট অ্যাটাকের ৮টি লক্ষণ
হার্ট বা হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ দরকার হয়। হার্টে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী যদি বন্ধ হয়ে যায় এবং এর ফলে যদি রক্ত হার্টে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে হার্টের মাংসপেশিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। আর তখনই হয় হার্ট অ্যাটাক। যে কেউ যে কোনও সময়ে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হতে পারেন। শরীরচর্চা না করা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
জেনে নিন হার্ট অ্যাটাকের ৮টি লক্ষণ—
শ্বাসকষ্ট ও দম ফুরিয়ে যাওয়া: যদি আপনার শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনও সমস্যা না থাকে এবং হঠাৎ করে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়, তবে সেটা খারাপ লক্ষণ। মূলত হৃদরোগ থেকে ফুসফুসে পানি জমা-সহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঠান্ডা ছাড়াও শ্বাস কষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়াও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।
অতিরিক্ত ঘাম হওয়া: অতিরিক্ত ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা হওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত ঘাম, বুক ধড়ফড়, হঠাৎ শরীর খারাপ লাগতে শুরু করলে অব্যশই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
বুকে ব্যথা: সাধারণত বুকের মাঝখানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। আস্তে আস্তে সেই ব্যথা চোয়ালে অথবা বাম কাঁধ ও হাতে ছড়িয়ে পড়ে থাকে। এই রকম ব্যথা দেখা দিলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কাশি: আপনার যদি দীর্ঘ দিন কাশির সমস্যা থাকে, এবং তার সঙ্গে সাদা বা কিছুটা ঘোলাটে কফ বের হয়। তবে বুঝতে হবে আপনার হার্ট ঠিক মতো কাজ করছে না। ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে হ্যাঁ, কাশি সব সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নাও হতে পারে। কফের সঙ্গে নিয়মিত রক্ত বের হলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকেই যায়।
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: যদি কাজ করার মধ্যেই আপনি প্রায়ই হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যান, তা হলে বুঝবেন হার্টের সমস্যা রয়েছে।
তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়া: আপনি কি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন? কিছুক্ষণ কাজ করলে বুক ধড়ফড় করে? তবে আপনি এখনই কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষ করে মহিলাদের হার্টের সমস্যার প্রধান লক্ষণ এটি।
মাথা ব্যথা: যখনই প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, আমরা ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু জানেন কি, হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হলো প্রতিদিনের প্রচণ্ড মাথা ব্যথা?
অনিয়মিত পালস রেট: আপনি যদি অনেক বেশি নার্ভাস থাকেন বা কোথাও থেকে দৌড়ে আসেন আপনার পালস রেট ওঠা-নামা করতে পারে। তবে এটি যখন কোনও কারণ ছাড়াই হয়, তবে তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। হার্ট অ্যাটাকের আগে এমনটা হয়ে থাকে।
আরটিভি/এফআই
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
বিশ্বব্যাপী বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন হৃদরোগের বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে। বর্তমানে জীবনযাত্রায় অনিয়মের ফলে কমবয়সীদের মধ্যেও বেড়েছে হৃদরোগের ঝুঁকি। হৃদরোগের এমন কিছু লক্ষণ আছে যা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। এই লক্ষণগুলোও অন্যান্য উপসর্গগুলোর মতই মারাত্মক। নানা কারণেই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক এর চিকিৎসা করাতে না পারলে তৈরি হয় ঝুঁকি। ফলে এর জন্য সচেতন থাকা অত্যাবশ্যক। তাই সবার উচিত এ নিয়ে সতর্ক থাকা। বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জেনে রাখা সবারই উচিত।
হার্ট অ্যাটাক কী: হার্ট অ্যাটাক হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। রক্তের ধমনীতে চর্বি ও কোলেস্টেরল জমার কারণে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে রক্তের ধমনীর ব্লক যদি সময় মতো অপসারণ না করা হয়, তাহলে অক্সিজেনের অভাবে হার্টের টিস্যু মরে যেতে শুরু করে।
কেন হয়: হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য হার্ট অক্সিজেনযুক্ত রক্ত নেয় করোনারি ধমনির মাধ্যমে। করোনারি আর্টারি তিনটি—লেফট করোনারি আর্টারি, রাইট করোনারি আর্টারি ও লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিজেন্ডিং আর্টারি।
এই তিনটি আর্টারি বা ধমনির মধ্যে কোনো কারণে যদি কিছু অংশ বা পুরোপুরি ব্লক হয়, তাহলে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। পার্সিয়াল বা অংশত ব্লক হলে তাকে অ্যানজাইনা পেকটোরিস বলা হয়। আর সম্পূর্ণ ব্লক হলে তাকে বলা হয় হার্ট অ্যাটাক।
হার্ট অ্যাটাক কাদের হয়
১. বংশগত বা জেনেটিক কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কারো বাবা-মা কিংবা কাছের স্বজনদের হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে তাদের ঝুঁকি বেশি।
২. অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও ধূমপান।
৩. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।
৪. অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ।
৫. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা।
৬. শারীরিক ওজন কম, কিন্তু রক্তে কোলেস্টরেল বা অতিরিক্ত চর্বি বেড়ে গেলেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
৭. কায়িক পরিশ্রম, ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি না করা, শুয়ে-বসে থাকা।
৮. মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বয়স, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণেও হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
১. হার্ট অ্যাটাকের প্রধান লক্ষণ বুকে ব্যথা হওয়া। দুই বুকের মাঝখানে মুষ্টিবদ্ধ হাত রাখলে যেটুকু জায়গা এটাকে রেট্রোস্টার্নাল পেইন বলা হয়। ভেতর থেকে ব্যথা হবে আর এই জায়গার ব্যথাকেই হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা বলে।
২. বুকের ব্যথা একসময় বাম হাত ও ঘাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোয়াল, পেটেও ব্যথা হতে পারে।
৩. হার্ট অ্যাটাকের তীব্রতা বেশি হলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, কাশি হতে পারে।
৪. প্রেশার কমে গিয়ে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
৫. বুকের ব্যথার তীব্রতা বেশি হলে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে রোগী।
৬. অনেক সময় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. বুক ধড়ফড় করা।
হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিক করণীয়: চিকিৎসকরা বলেন, হার্ট অ্যাটাক এমন একটি সমস্যা যার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে রোগী যেকোনো সময় মারা যেতে পারে। বুকে ব্যথা অনুভূত হলে, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ মনে হলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি স্বাস্থ্য সেবায় (৯৯৯) ফোন করতে পারেন।
আক্রান্ত ব্যক্তি যেন বেশি নড়াচড়া না করেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শান্ত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। রোগী যদি জ্ঞান হারায় বা শ্বাস নিচ্ছে না এমন হলে সঠিক নিয়মে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর দিতে হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে সিপিআর কীভাবে দিতে হয় সেটি জানেন এমন কোনো ব্যক্তি ছাড়া না জেনে যে কেউ সিপিআর দিতে পারবেন না।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ অ্যান্টি প্লাটিলেট ড্রাগ দেওয়া যেতে পারে, যা রক্ত তরল করার জন্য ও ধমনিতে রক্ত প্রবাহে বাধা কমাতে সহায়ক।
কারো যদি আগে থেকে হার্টের সমস্যায় নাইট্রোগ্লিসারিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসক, তাদেরকে তাৎক্ষণিক অবস্থায় জিহ্বার নিচে ওই ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। অন্যদের বেলায় দেওয়া যাবে না।
হার্ট অ্যাটাক হলে পালস রেট কমে যায়। এ সময় কাশি দিলে রিফ্লেক্স হয়, যার ফলে প্রেশার বাড়ে এবং হার্ট রেটও বেড়ে যায়। সেজন্য কাশি দিতে বলা যেতে পারে রোগীকে।
চিকিৎসা: চিকিৎসকরা বলেন, ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না, সেটি নিশ্চিত হবে। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে রক্ত যাতে জমাট না বাঁধে, চর্বি না জমে সেজন্য রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা ও রক্ত তরল করার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয় রোগীকে। প্রেশার, গ্যাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস, কোলেস্টরেল থাকলে, ঘুম না হলে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে। একই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে।
এ ছাড়া আধুনিক চিকিৎসা হিসেবে অ্যানজিওগ্রাম করা হয়। হার্ট অ্যাটাকের পর অ্যানজিওগ্রাম করা যেতে পারে, আবার পরেও করা যেতে পারে। অ্যানজিওগ্রামের মাধ্যমে দেখতে হবে হার্টের ব্লক আছে কি না। যদি বেশি ব্লক থাকে, তাহলে বাইপাস করতে হবে। আর যদি কম ব্লক অর্থাৎ এক বা দুইটা ব্লক থাকে তাহলে রিং পরানো যেতে পারে। হার্টের চিকিৎসায় রক্তনালীর ব্লক দূর করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক বা পুনঃপ্রতিস্থাপন করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিরোধ
১. জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
২. সকালে ও বিকেলে নিয়মিত ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটা ও ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে।
৩. অ্যালকোহল ও ধূমপান পরিহার করতে হবে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, জাঙ্ক ফুড, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে।
৫. ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রেশার, কোলেস্টরেল থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৬. পরিবারে যদি হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকে, তাদের ২০ বছর বয়সের পর থেকেই নিয়মিত চেক আপ করাতে হবে।
৭. উদ্বেগ, মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে, ঝগড়া কিংবা জোরে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তথ্যসূত্র : অনলাইন
আরটিভি/এফআই
যে কারণে হৃৎপিণ্ড বড় হয়ে যায়
অনেক কারণে হার্টের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হতে পারে, যা কার্ডিওমেগালি নামে পরিচিত। ডাইলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি (ডিসিএম) হার্টের (হৃৎপিণ্ড) মাংসপেশির রোগ। এর ফলে হৃৎপিণ্ডের দেয়াল পাতলা হয়ে যায় ও এর বাঁ দিকের চেম্বার অস্বাভাবিক রকম বড় আকার ধারণ করে বা ফুলে যায়। ফলে হৃৎপিণ্ডের পাম্পিং ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়। হৃদপিণ্ড এর নিজস্ব গতিতে পাম্প করতে না পারায় রোগীর শরীরে, বিশেষ করে পায়ে পানি আসে ও অল্প পরিশ্রমেই শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়।
কার্ডিওমেগালি বা হার্ট বড় হয়ে যাওয়া মোটেই কাজের কথা নয়। এতে বহু ধরনের শারীরিক অসুখবিসুখ হতে পারে। সাধারণত অন্য কিছু অসুখের কারণে, যেমন উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্টের আকার বড় হয়ে যায়। তখন আর হার্ট আগের মতো কাজ করতে পারে না।
উপসর্গ: কোনো উপসর্গ না থাকায় রোগী বুঝতে পারেন না যে তার হৃৎপিণ্ডে ডিসিএম আছে। চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত ব্যক্তি হৃৎপিণ্ড অকার্যকর হওয়া থেকে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তে পারেন। উপসর্গগুলোর মধ্যে শুরুর দিকে অতিমাত্রায় দুর্বলতা, স্বাভাবিক কাজকর্মে শ্বাসকষ্ট, পায়ের পাতায় ও গোড়ালিতে পানি আসে এবং বুকব্যথা ও বুক ধড়ফড় করতে থাকে। পরিবারে কারও এ রোগ হলে বাকি সবার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উত্তম।
কারণ: ডিসিএমের কারণ হিসেবে কিছু সুনির্দিষ্ট সংক্রমণ, প্রেগন্যান্সির শেষের দিকের জটিলতা, ডায়াবেটিস, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশিতে আয়রন জমা হওয়া (হিমাক্রমাটোসিস), উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, হৃৎপিণ্ডের আ্যরিদমিয়া ও ভালভ ঠিকভাবে বন্ধ না হওয়াকে দায়ী করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া অতিমাত্রায় মদ্যপান, সিসা, কোবাল্ট, পারদজাতীয় টক্সিনের সংস্পর্শে আসা, ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে এ রোগ হতে পারে।
যাদের ঝুঁকি বেশি
রক্তচাপ যদি ১৪০/৯০ বা এর থেকে বেশি থাকে
পরিবারের নিকটাত্মীয়ের, যেমন ভাইবোন, যদি কার্ডিওমেগালির ইতিহাস থাকে
করোনারি আর্টারি ডিজিজ
জন্মগতভাবে ক্ষতিগস্ত হার্ট
হার্ট ভাল্বের অসুখ
হার্টঅ্যাটাকের ইতিহাস
মাড়ির প্রদাহ বা জিনজিভাইটিসে আক্রান্ত রোগীর যদি হার্ট ভাল্বের ত্রুটি থাকে।
ডায়রিয়া ও বাতজ্বরজনিত হৃদরোগে আক্রান্ত অল্প বয়সী শিশু-কিশোর।
ডিসিএমে যা হয়: ডিসিএমের কারণে হৃৎপিণ্ডের চেম্বার, বিশেষ করে বাঁ দিকের ভেন্ট্রিকল বড় হয়ে যাওয়ায় ভালভ বন্ধ হওয়ার অ্যালাইনমেন্ট বদলে যায়। ফলে রক্তপ্রবাহের কিছু অংশ ব্যাক ফ্লো করে ও হৃৎপিণ্ডকে আরও বড় হতে সাহায্য করে। হৃৎপিণ্ড বড় হতে হতে একসময় পাম্প করতে ব্যর্থ হয়ে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। হৃৎপিণ্ড বড় হয়ে যাওয়ায় এটি তার পাম্প করার ছন্দ হারিয়ে ফেলে এবং এর ফলে অনিয়মিত হার্টবিট তথা অ্যারিদমিয়া দেখা দেয়।
চিকিৎসা
পুরোপুরি সুস্থতা ফিরে পাওয়া কঠিন। কিছু ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। এ ওষুধগুলোর মধ্যে আছে ডাই-ইউরেটিক, এনজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম ইনহেবিটর, এনজিওটেনসিন রিসিপ্টর ব্লকার, বিটা ব্লকার, ডিজক্সিন, অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট, অ্যান্টি অ্যারিথমিক ইত্যাদি।
সার্জিক্যাল পদ্ধতিতেও কিছু চিকিৎসা করতে হয়। হৃত্স্পন্দন কম থাকলে বা হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা কমে গেলে কখনো কখনো পেসমেকার বসাতে হয়। আইসিডি নামের ছোট একটি ডিভাইসও বসানো লাগতে পারে। হার্ট ভাল্বের সার্জারিও অনেক সময় লাগে। করোনারি রক্তনালির অসুখ হলে বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন হয় অনেক সময়।
কিছু নিয়মকানুন মানলে কার্ডিওমেগালিসহ হার্টের অসুখ থেকে ভালো থাকা যায়।
ধূমপান না করা
অতিরিক্ত ওজন কমানো
পাতে অতিরিক্ত লবণ না খাওয়া
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
নিয়মিত ব্যায়াম করা
অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন পরিহার করা
অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানো
মাড়ির অসুখের যথাসময়ে চিকিৎসা
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করতে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার বেশি গ্রহণ
নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে না করা
বাতজ্বর থাকলে তার চিকিৎসা।
সূত্র : অনলাইন
আরটিভি/এফআই