ডায়াবেটিস রোগীরা কি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে পারেন?
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হলো নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে খাওয়ার ও না খাওয়ার একটি পরিকল্পিত পদ্ধতি। এটি হতে পারে দিনে নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে থাকা বা সপ্তাহের নির্দিষ্ট কিছু দিন ফাস্টিং করা। ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং অনুসরণ করলে ফাস্টিংয়ের সময়ে পানি বা ক্যালরিবিহীন পানীয় পান করা যায়।
বর্তমানে ওজন কমানোর জন্য ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। অনেকেই বলিউড তারকাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই ফাস্টিং কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
ডায়াবেটিস রোগীদের ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের চ্যালেঞ্জ
চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের সবচেয়ে বড় বাধা হলো সকালের খাবার বাদ দেওয়া। ১৬:৮ অনুপাতে ফাস্টিংয়ের সময় ১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা এবং ৮ ঘণ্টা খাওয়ার সময় নির্ধারিত থাকে। সাধারণত রাত ৮ টায় খাওয়া বন্ধ করে সকাল ১২ টায় মধ্যাহ্নভোজ করা হয়। এতে দীর্ঘসময় খালি পেটে থাকতে হয়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সকালের খাবার বাদ দিলে যেসব সমস্যা হতে পারে
হাইপারগ্লাইসেমিয়া: ডায়াবেটিস রোগীরা সকালের খাবার বাদ দিলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার পর হঠাৎ খাবার খেলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি: নিয়মিত হাইপারগ্লাইসেমিয়া হলে স্নায়ু, কিডনি ও দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়া: টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সকালের খাবার না খেলে ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি, তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
মানসিক সমস্যা: সকালের খাবার বাদ দিলে মেজাজ খিটখিটে হওয়া, বিরক্তি এবং কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং মানেই কি সকালের খাবার বাদ?
পুষ্টিবিদদের মতে, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং মানেই সকালের খাবার বাদ দেওয়া নয়। কেউ চাইলে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খেতে পারেন এবং বাকি সময় ফাস্টিং করতে পারেন। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকা বিপদজনক।
করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন কমানোর জন্য বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত। যদি কেউ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে চান, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ, নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিলে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা থেকে যায়।
আরটিভি/জেএম
মন্তব্য করুন