শীতের দুপুরে গরম ভাতের সঙ্গে বানিয়ে নিন সুস্বাদু ফুলকপির ভর্তা
ফুলকপির ডালনা, আলু-ফুলকপি ভাজা, ফুলকপির ঝাল বা রোস্ট, ফুলকপির পাকোড়া এমনকি ফুলকপির মালাইকারিও নিশ্চয়ই খেয়েছেন অনেকে। তবে সেই চেনা স্বাদের বাইরে এসে ফুলকপি দিয়ে একটু নতুন কিছু রান্না করতে চাইলে শীতকালই হতে পারে সেরা সময়। কারণ, এই সময় বাজার ভরে থাকে টাটকা ফুলকপিতে।
অনেক অঞ্চলে শীতকালে বেগুন ও শিমের ভর্তা খাওয়ার প্রচলন আছে। আর ফুলকপির ভর্তা তারই অন্যতম। শীতের দুপুরে বানিয়ে ফেলুন মজাদার ফুলকপির ভর্তা। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করলে আর কোনও পদ দরকার হবে না। রইল রেসিপি—
ফুলকপি ভর্তা
উপকরণ:
- ৫০০ গ্রাম ফুলকপি (টুকরো করে কাটা)
- ৪টি শুকনো মরিচ
- ২টি কাঁচামরিচ
- ১০ কোয়া রসুন
- ১টি মাঝারি পেঁয়াজ (কুচোনো)
- ১টি টমেটো
- ১/২ কাপ ধনেপাতা কুচি
- লবণ (স্বাদমতো)
- সরিষার তেল (পরিমাণমতো)
প্রস্তুত প্রণালি:
- প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে তাতে সামান্য লবণ দিন। এরপর ফুলকপির টুকরোগুলো দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।
- কড়াইয়ে সরিষার তেল গরম করে প্রথমে শুকনো মরিচ ভেজে নিন। তারপর রসুন ভেজে তুলে রাখুন।
- একই তেলে টমেটো কয়েক টুকরো করে ভেজে নিন। নরম হলে নামিয়ে পেঁয়াজ ভেজে নিন। পেঁয়াজ স্বচ্ছ হলে আঁচ থেকে নামিয়ে ফেলুন।
- সেদ্ধ ফুলকপির টুকরো হালকা ভেজে নিয়ে একটি পাত্রে ভালোভাবে চটকে নিন।
- এরপর সেই পাত্রে ভাজা শুকনো মরিচ, কাঁচামরিচ, ভাজা রসুন, টমেটো, পেঁয়াজ এবং সামান্য লবণ দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন।
- এবার কুচানো ধনেপাতা এবং পরিমাণমতো সরিষার তেল দিয়ে পুরো মিশ্রণটি ফুলকপির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। স্বাদ অনুযায়ী লবণ দিন।
সুস্বাদু ফুলকপির ভর্তা তৈরি। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। শীতের দুপুরে এই ঝাল-মাখা ফুলকপির ভর্তা আপনার খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তুলবে।
আরটিভি/জেএম
মন্তব্য করুন
মস্তিষ্কের ধার বাড়াবে এই খাবারগুলো
আপনি কি কখনও এমন অবস্থায় পড়েছেন যেখানে আপনি কারও নাম বা কোনও জায়গার নাম মনে করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ছে না? অনেকেই বলে থাকেন যে বয়সের সাথে সাথে আমাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। এমনকি যুক্তি দেওয়ার সক্ষমতাও কমে আসে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের জোড় অনেকটাই কমে যায়, যার কারণে লোপ পায় স্মৃতিশক্তি। এতে ডিমেনশিয়া বা আলঝেইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এ কারণে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানো খুব জরুরি।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, কয়েকটি খাবার স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের অন্য রোগের সমস্যা ঠেকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
যেমন- মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুর গঠনে ওমেগা ৩-র ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্যামন, হেরিং, সার্ডিন, টুনা, মিষ্টি জলের মাছ এক্ষেত্রে সহায়ক।
কফির মূল দুই উপাদান হলো ক্যাফিন এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য দুই-ই উপকারী। এতে ঝিমুনি ভাব কাটে, মন চাঙ্গা থাকে, সজাগ হয়ে যায় মস্তিষ্ক।
ব্লুবেরির হাজারো গুণ, স্মৃতিশক্তিবর্ধক শক্তিও অন্যতম। ব্রেকফাস্টে খেতে পারেন, আবার স্মুদিও বানাতে পারেন।
রান্নাঘরে মজুত হলুদও স্মৃতিশক্তি প্রখর করে। এর মূল উপাদান কারকুমিন মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধির সহায়ক। বার্ধক্যেও মস্তিষ্ক সজাগ থাকে।
ব্রকোলিতে ভিটামিন কে, অ্যান্টঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। আমাদের কোষের মধ্যে যে Sphingolipids তাকে, তা তৈরিতে ভিটামিন কে-র ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চকোলেট আপনার জন্য ভালো হতে পারে! অন্তত ৭০% কোকো কন্টেন্টসহ ডার্ক চকোলেটে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। পরিমিতভাবে ডার্ক চকোলেট খেলে তা মস্তিষ্কের জন্য কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
সবুজ শাক-সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে কাজ করে। সালাদ, স্মুদি এবং সাইড ডিশে শাক-সবজি যোগ করুন। এগুলো আপনার স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে কাজ করবে। এছাড়াও মিলবে আরও অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা।
কুমড়োর বীজ মস্তিষ্কের ধার বাড়ায়। এতে মজুত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীর এবং মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, আয়রনে স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়।
আরটিভি/এফআই
নাক বন্ধে আরাম মিলবে এই পানীয়গুলোতে
শীত শুরু হতে না হতেই একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় অনেকের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে খুব সহজে অসুস্থ হয়ে পড়ে বাচ্চারা। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে হটাত করে ঠান্ডা লেগে যায়। সর্দি, কাশি, গলা ব্যথার সঙ্গে অনেকসময় জ্বরও আসে। বয়স্কদের মধ্যেও এই উপসর্গগুলো দেখা যায়। শীতের সময়ের এসব সমস্যা দূর করার জন্য সবচেয়ে ভরসাযোগ্য জিনিস হলো ঘরোয়া টোটকা। বেশ কয়েকটি পানীয় আপনি খুব সহজে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারবেন। আর সেগুলো পান করলে গলা ব্যথা থেকে নাক বন্ধ, মাথা যন্ত্রণা থেকে সর্দি-কাশি-কফের সমস্যা দূর হবে নিমিষেই।
কোন কোন পানীয় শীতকালে আপনাকে সুস্থ-সবল রাখবে, রইল তালিকা
শীতকালে নিয়মিত আমলকি বা আমলকির রস খেতে পারলে অনেক উপকার পাবেন আপনি। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন সামান্য পাতিলেবুর রস। আমলকির রস খেলে দূর হবে কাশির সমস্যা। গলা ব্যথা, সর্দিতেও আরাম দেবে এই পানীয়। কাঁচা আমলকি চিবিয়ে খেলেও উপকার অনেক।
আদা এবং পাতিলেবুর রস মিশিয়ে তৈরি করে নিন চা। এই চা শীতের দিনে পান করলে গলা ব্যথায় আরাম পাবেন। সর্দি, কাশি কিংবা জ্বর হলেও খেতে পারেন লেবু এবং আদার রস মেশানো চা। কাশির সমস্যা কমাবে আদার রস।
শীতের সময়ে প্রতিদিন গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করুন। এই পানীয়ের রয়েছে অনেক গুণ। বিভিন্ন ভাবে ভালো রাখবে আপনার শরীর। গরম দুধে হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন সামান্য গোলমরিচ এবং মধু। এই পানীয় শীতে শরীর গরম রাখবে।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগারও ইমিউনিটি বুস্টার ড্রিঙ্ক হিসেবে শীতকালে পান করতে পারেন আপনি। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন লবঙ্গ। অ্যাপেল সিডার ভিনিগার খাইখাই ভাব কমায় এবং মেটাবলিজম রেট বাড়ায়। ফলে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে।
শীতকালের মূল সমস্যা হলো সর্দি-কাশি। এক্ষেত্রে অব্যর্থ ওষুধ তুলসি পাতা। চায়ের মধ্যে মিশিয়ে নিতে পারেন তুলসি পাতার রস। তুলসি পাতার রস কাশির সমস্যা যেমন কমাতে সাহায্য করে তেমনই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
আরটিভি/এফআই
জেনে নিন হার্ট অ্যাটাকের ৮টি লক্ষণ
হার্ট বা হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ দরকার হয়। হার্টে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী যদি বন্ধ হয়ে যায় এবং এর ফলে যদি রক্ত হার্টে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে হার্টের মাংসপেশিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। আর তখনই হয় হার্ট অ্যাটাক। যে কেউ যে কোনও সময়ে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হতে পারেন। শরীরচর্চা না করা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
জেনে নিন হার্ট অ্যাটাকের ৮টি লক্ষণ—
শ্বাসকষ্ট ও দম ফুরিয়ে যাওয়া: যদি আপনার শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনও সমস্যা না থাকে এবং হঠাৎ করে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়, তবে সেটা খারাপ লক্ষণ। মূলত হৃদরোগ থেকে ফুসফুসে পানি জমা-সহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঠান্ডা ছাড়াও শ্বাস কষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়াও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।
অতিরিক্ত ঘাম হওয়া: অতিরিক্ত ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা হওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত ঘাম, বুক ধড়ফড়, হঠাৎ শরীর খারাপ লাগতে শুরু করলে অব্যশই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
বুকে ব্যথা: সাধারণত বুকের মাঝখানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। আস্তে আস্তে সেই ব্যথা চোয়ালে অথবা বাম কাঁধ ও হাতে ছড়িয়ে পড়ে থাকে। এই রকম ব্যথা দেখা দিলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কাশি: আপনার যদি দীর্ঘ দিন কাশির সমস্যা থাকে, এবং তার সঙ্গে সাদা বা কিছুটা ঘোলাটে কফ বের হয়। তবে বুঝতে হবে আপনার হার্ট ঠিক মতো কাজ করছে না। ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে হ্যাঁ, কাশি সব সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নাও হতে পারে। কফের সঙ্গে নিয়মিত রক্ত বের হলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকেই যায়।
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: যদি কাজ করার মধ্যেই আপনি প্রায়ই হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যান, তা হলে বুঝবেন হার্টের সমস্যা রয়েছে।
তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়া: আপনি কি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন? কিছুক্ষণ কাজ করলে বুক ধড়ফড় করে? তবে আপনি এখনই কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষ করে মহিলাদের হার্টের সমস্যার প্রধান লক্ষণ এটি।
মাথা ব্যথা: যখনই প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, আমরা ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু জানেন কি, হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হলো প্রতিদিনের প্রচণ্ড মাথা ব্যথা?
অনিয়মিত পালস রেট: আপনি যদি অনেক বেশি নার্ভাস থাকেন বা কোথাও থেকে দৌড়ে আসেন আপনার পালস রেট ওঠা-নামা করতে পারে। তবে এটি যখন কোনও কারণ ছাড়াই হয়, তবে তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। হার্ট অ্যাটাকের আগে এমনটা হয়ে থাকে।
আরটিভি/এফআই
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
বিশ্বব্যাপী বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন হৃদরোগের বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে। বর্তমানে জীবনযাত্রায় অনিয়মের ফলে কমবয়সীদের মধ্যেও বেড়েছে হৃদরোগের ঝুঁকি। হৃদরোগের এমন কিছু লক্ষণ আছে যা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। এই লক্ষণগুলোও অন্যান্য উপসর্গগুলোর মতই মারাত্মক। নানা কারণেই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক এর চিকিৎসা করাতে না পারলে তৈরি হয় ঝুঁকি। ফলে এর জন্য সচেতন থাকা অত্যাবশ্যক। তাই সবার উচিত এ নিয়ে সতর্ক থাকা। বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জেনে রাখা সবারই উচিত।
হার্ট অ্যাটাক কী: হার্ট অ্যাটাক হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। রক্তের ধমনীতে চর্বি ও কোলেস্টেরল জমার কারণে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে রক্তের ধমনীর ব্লক যদি সময় মতো অপসারণ না করা হয়, তাহলে অক্সিজেনের অভাবে হার্টের টিস্যু মরে যেতে শুরু করে।
কেন হয়: হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য হার্ট অক্সিজেনযুক্ত রক্ত নেয় করোনারি ধমনির মাধ্যমে। করোনারি আর্টারি তিনটি—লেফট করোনারি আর্টারি, রাইট করোনারি আর্টারি ও লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিজেন্ডিং আর্টারি।
এই তিনটি আর্টারি বা ধমনির মধ্যে কোনো কারণে যদি কিছু অংশ বা পুরোপুরি ব্লক হয়, তাহলে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। পার্সিয়াল বা অংশত ব্লক হলে তাকে অ্যানজাইনা পেকটোরিস বলা হয়। আর সম্পূর্ণ ব্লক হলে তাকে বলা হয় হার্ট অ্যাটাক।
হার্ট অ্যাটাক কাদের হয়
১. বংশগত বা জেনেটিক কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কারো বাবা-মা কিংবা কাছের স্বজনদের হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে তাদের ঝুঁকি বেশি।
২. অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও ধূমপান।
৩. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।
৪. অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ।
৫. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা।
৬. শারীরিক ওজন কম, কিন্তু রক্তে কোলেস্টরেল বা অতিরিক্ত চর্বি বেড়ে গেলেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
৭. কায়িক পরিশ্রম, ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি না করা, শুয়ে-বসে থাকা।
৮. মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বয়স, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণেও হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
১. হার্ট অ্যাটাকের প্রধান লক্ষণ বুকে ব্যথা হওয়া। দুই বুকের মাঝখানে মুষ্টিবদ্ধ হাত রাখলে যেটুকু জায়গা এটাকে রেট্রোস্টার্নাল পেইন বলা হয়। ভেতর থেকে ব্যথা হবে আর এই জায়গার ব্যথাকেই হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা বলে।
২. বুকের ব্যথা একসময় বাম হাত ও ঘাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোয়াল, পেটেও ব্যথা হতে পারে।
৩. হার্ট অ্যাটাকের তীব্রতা বেশি হলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, কাশি হতে পারে।
৪. প্রেশার কমে গিয়ে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
৫. বুকের ব্যথার তীব্রতা বেশি হলে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে রোগী।
৬. অনেক সময় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. বুক ধড়ফড় করা।
হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিক করণীয়: চিকিৎসকরা বলেন, হার্ট অ্যাটাক এমন একটি সমস্যা যার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে রোগী যেকোনো সময় মারা যেতে পারে। বুকে ব্যথা অনুভূত হলে, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ মনে হলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি স্বাস্থ্য সেবায় (৯৯৯) ফোন করতে পারেন।
আক্রান্ত ব্যক্তি যেন বেশি নড়াচড়া না করেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শান্ত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। রোগী যদি জ্ঞান হারায় বা শ্বাস নিচ্ছে না এমন হলে সঠিক নিয়মে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর দিতে হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে সিপিআর কীভাবে দিতে হয় সেটি জানেন এমন কোনো ব্যক্তি ছাড়া না জেনে যে কেউ সিপিআর দিতে পারবেন না।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ অ্যান্টি প্লাটিলেট ড্রাগ দেওয়া যেতে পারে, যা রক্ত তরল করার জন্য ও ধমনিতে রক্ত প্রবাহে বাধা কমাতে সহায়ক।
কারো যদি আগে থেকে হার্টের সমস্যায় নাইট্রোগ্লিসারিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসক, তাদেরকে তাৎক্ষণিক অবস্থায় জিহ্বার নিচে ওই ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। অন্যদের বেলায় দেওয়া যাবে না।
হার্ট অ্যাটাক হলে পালস রেট কমে যায়। এ সময় কাশি দিলে রিফ্লেক্স হয়, যার ফলে প্রেশার বাড়ে এবং হার্ট রেটও বেড়ে যায়। সেজন্য কাশি দিতে বলা যেতে পারে রোগীকে।
চিকিৎসা: চিকিৎসকরা বলেন, ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না, সেটি নিশ্চিত হবে। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে রক্ত যাতে জমাট না বাঁধে, চর্বি না জমে সেজন্য রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা ও রক্ত তরল করার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয় রোগীকে। প্রেশার, গ্যাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস, কোলেস্টরেল থাকলে, ঘুম না হলে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে। একই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে।
এ ছাড়া আধুনিক চিকিৎসা হিসেবে অ্যানজিওগ্রাম করা হয়। হার্ট অ্যাটাকের পর অ্যানজিওগ্রাম করা যেতে পারে, আবার পরেও করা যেতে পারে। অ্যানজিওগ্রামের মাধ্যমে দেখতে হবে হার্টের ব্লক আছে কি না। যদি বেশি ব্লক থাকে, তাহলে বাইপাস করতে হবে। আর যদি কম ব্লক অর্থাৎ এক বা দুইটা ব্লক থাকে তাহলে রিং পরানো যেতে পারে। হার্টের চিকিৎসায় রক্তনালীর ব্লক দূর করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক বা পুনঃপ্রতিস্থাপন করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিরোধ
১. জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
২. সকালে ও বিকেলে নিয়মিত ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটা ও ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে।
৩. অ্যালকোহল ও ধূমপান পরিহার করতে হবে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, জাঙ্ক ফুড, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে।
৫. ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রেশার, কোলেস্টরেল থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৬. পরিবারে যদি হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকে, তাদের ২০ বছর বয়সের পর থেকেই নিয়মিত চেক আপ করাতে হবে।
৭. উদ্বেগ, মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে, ঝগড়া কিংবা জোরে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তথ্যসূত্র : অনলাইন
আরটিভি/এফআই
যে কারণে হৃৎপিণ্ড বড় হয়ে যায়
অনেক কারণে হার্টের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হতে পারে, যা কার্ডিওমেগালি নামে পরিচিত। ডাইলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি (ডিসিএম) হার্টের (হৃৎপিণ্ড) মাংসপেশির রোগ। এর ফলে হৃৎপিণ্ডের দেয়াল পাতলা হয়ে যায় ও এর বাঁ দিকের চেম্বার অস্বাভাবিক রকম বড় আকার ধারণ করে বা ফুলে যায়। ফলে হৃৎপিণ্ডের পাম্পিং ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়। হৃদপিণ্ড এর নিজস্ব গতিতে পাম্প করতে না পারায় রোগীর শরীরে, বিশেষ করে পায়ে পানি আসে ও অল্প পরিশ্রমেই শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়।
কার্ডিওমেগালি বা হার্ট বড় হয়ে যাওয়া মোটেই কাজের কথা নয়। এতে বহু ধরনের শারীরিক অসুখবিসুখ হতে পারে। সাধারণত অন্য কিছু অসুখের কারণে, যেমন উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্টের আকার বড় হয়ে যায়। তখন আর হার্ট আগের মতো কাজ করতে পারে না।
উপসর্গ: কোনো উপসর্গ না থাকায় রোগী বুঝতে পারেন না যে তার হৃৎপিণ্ডে ডিসিএম আছে। চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত ব্যক্তি হৃৎপিণ্ড অকার্যকর হওয়া থেকে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তে পারেন। উপসর্গগুলোর মধ্যে শুরুর দিকে অতিমাত্রায় দুর্বলতা, স্বাভাবিক কাজকর্মে শ্বাসকষ্ট, পায়ের পাতায় ও গোড়ালিতে পানি আসে এবং বুকব্যথা ও বুক ধড়ফড় করতে থাকে। পরিবারে কারও এ রোগ হলে বাকি সবার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উত্তম।
কারণ: ডিসিএমের কারণ হিসেবে কিছু সুনির্দিষ্ট সংক্রমণ, প্রেগন্যান্সির শেষের দিকের জটিলতা, ডায়াবেটিস, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশিতে আয়রন জমা হওয়া (হিমাক্রমাটোসিস), উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, হৃৎপিণ্ডের আ্যরিদমিয়া ও ভালভ ঠিকভাবে বন্ধ না হওয়াকে দায়ী করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া অতিমাত্রায় মদ্যপান, সিসা, কোবাল্ট, পারদজাতীয় টক্সিনের সংস্পর্শে আসা, ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে এ রোগ হতে পারে।
যাদের ঝুঁকি বেশি
রক্তচাপ যদি ১৪০/৯০ বা এর থেকে বেশি থাকে
পরিবারের নিকটাত্মীয়ের, যেমন ভাইবোন, যদি কার্ডিওমেগালির ইতিহাস থাকে
করোনারি আর্টারি ডিজিজ
জন্মগতভাবে ক্ষতিগস্ত হার্ট
হার্ট ভাল্বের অসুখ
হার্টঅ্যাটাকের ইতিহাস
মাড়ির প্রদাহ বা জিনজিভাইটিসে আক্রান্ত রোগীর যদি হার্ট ভাল্বের ত্রুটি থাকে।
ডায়রিয়া ও বাতজ্বরজনিত হৃদরোগে আক্রান্ত অল্প বয়সী শিশু-কিশোর।
ডিসিএমে যা হয়: ডিসিএমের কারণে হৃৎপিণ্ডের চেম্বার, বিশেষ করে বাঁ দিকের ভেন্ট্রিকল বড় হয়ে যাওয়ায় ভালভ বন্ধ হওয়ার অ্যালাইনমেন্ট বদলে যায়। ফলে রক্তপ্রবাহের কিছু অংশ ব্যাক ফ্লো করে ও হৃৎপিণ্ডকে আরও বড় হতে সাহায্য করে। হৃৎপিণ্ড বড় হতে হতে একসময় পাম্প করতে ব্যর্থ হয়ে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। হৃৎপিণ্ড বড় হয়ে যাওয়ায় এটি তার পাম্প করার ছন্দ হারিয়ে ফেলে এবং এর ফলে অনিয়মিত হার্টবিট তথা অ্যারিদমিয়া দেখা দেয়।
চিকিৎসা
পুরোপুরি সুস্থতা ফিরে পাওয়া কঠিন। কিছু ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। এ ওষুধগুলোর মধ্যে আছে ডাই-ইউরেটিক, এনজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম ইনহেবিটর, এনজিওটেনসিন রিসিপ্টর ব্লকার, বিটা ব্লকার, ডিজক্সিন, অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট, অ্যান্টি অ্যারিথমিক ইত্যাদি।
সার্জিক্যাল পদ্ধতিতেও কিছু চিকিৎসা করতে হয়। হৃত্স্পন্দন কম থাকলে বা হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা কমে গেলে কখনো কখনো পেসমেকার বসাতে হয়। আইসিডি নামের ছোট একটি ডিভাইসও বসানো লাগতে পারে। হার্ট ভাল্বের সার্জারিও অনেক সময় লাগে। করোনারি রক্তনালির অসুখ হলে বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন হয় অনেক সময়।
কিছু নিয়মকানুন মানলে কার্ডিওমেগালিসহ হার্টের অসুখ থেকে ভালো থাকা যায়।
ধূমপান না করা
অতিরিক্ত ওজন কমানো
পাতে অতিরিক্ত লবণ না খাওয়া
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
নিয়মিত ব্যায়াম করা
অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন পরিহার করা
অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানো
মাড়ির অসুখের যথাসময়ে চিকিৎসা
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করতে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার বেশি গ্রহণ
নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে না করা
বাতজ্বর থাকলে তার চিকিৎসা।
সূত্র : অনলাইন
আরটিভি/এফআই
কোন দেশ কোন খাবার দিয়ে নতুন বছর শুরু করে
নতুন বছর শুরু করার সময় প্রত্যেক দেশেই কিছু বিশেষ রীতি ও ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়। এর মধ্যে খাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন সংস্কৃতি নতুন বছরের প্রথম দিনে নির্দিষ্ট কিছু খাবার গ্রহণ করে, যা তাদের জন্য সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি এবং সুখের প্রতীক। আসুন দেখে নিই কোন দেশ কোন খাবার দিয়ে নতুন বছর শুরু করে।
১. স্পেন: আঙুর
স্পেনে নতুন বছরের শুরুতে ১২টি আঙ্গুর খাওয়ার রীতি রয়েছে। প্রতিটি আঙ্গুর ১২ মাসের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি বিশ্বাস করা হয় যে, এই আঙ্গুরগুলো খেলে বছরজুড়ে সুখ ও সমৃদ্ধি বজায় থাকবে।
২. জাপান: সোবা নুডলস
জাপানের মানুষ নতুন বছরে "তোশিকোশি সোবা" নামে এক ধরনের নুডলস খায়। লম্বা এই নুডলস দীর্ঘ জীবন এবং স্থিতিশীলতার প্রতীক।
৩. আমেরিকা: কালো মটরশুঁটি ও কর্নব্রেড
আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে কালো মটরশুঁটি, কর্নব্রেড এবং সবুজ শাক-সবজি খাওয়ার রীতি প্রচলিত। কালো মটরশুঁটি সৌভাগ্যের প্রতীক, কর্নব্রেড সোনালী সমৃদ্ধির এবং সবুজ শাক-সবজি আর্থিক উন্নতির ইঙ্গিত দেয়।
৪. ফিলিপাইন: গোলাকার ফল
ফিলিপাইনের মানুষরা নতুন বছরে বিভিন্ন ধরনের গোলাকার ফল খায়, যেমন কমলা ও আঙুর। গোলাকার আকৃতি মুদ্রার প্রতীক, যা আর্থিক সমৃদ্ধির আশা নিয়ে আসে।
৫. ইটালি: লেন্টিল ও সসেজ
ইটালিতে লেন্টিল খাওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে, কারণ এর আকৃতি মুদ্রার মতো দেখতে। এটি আর্থিক সমৃদ্ধির প্রতীক। এ ছাড়াও, সসেজ খাওয়া হয় যা ভালো স্বাস্থ্যের প্রতীক।
৬. চীন: ডাম্পলিংস ও ফিশ
চীনে ডাম্পলিংস এবং ফিশ খাওয়ার রীতি প্রচলিত। ডাম্পলিংসকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়, আর মাছ সম্পদ ও সমৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করে।
৭. ব্রাজিল: পানীয়
ব্রাজিলে সামাজিকভাবে ইউরোপীয় প্রভাব অনেকটাই বেশি। স্প্যানিশ ও পর্তুগিজদের মতো তাই এখানেও নববর্ষের ১২টি ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে ১২টি আঙুর বা আনারদানা খাওয়া হয়। এ ছাড়া নববর্ষের দিন চাল-ডাল থাকে সবার খাবার টেবিলে।
স্প্যানিশ ও পর্তুগিজদের মতো তাই ব্রাজিলেও নববর্ষে আঙুর খাওয়া হয়।
কারণ, তাদের ধারণা চাল ও ডাল অর্থনৈতিক উন্নতির প্রতীক। এ ছাড়া এদিন সন্ধ্যায় সবাই মিলে বিভিন্ন রকমের ফলের রস দিয়ে তৈরি ককটেলসহ পানীয় পান করা হয় সাম্বা নাচের তালে তালে সমুদ্রসৈকতে।
৮. গ্রীস: বাসিলোপিটা
গ্রীসে একটি বিশেষ কেক তৈরি করা হয়, যাকে "বাসিলোপিটা" বলা হয়। এই কেকের মধ্যে একটি মুদ্রা লুকিয়ে রাখা হয়। যিনি সেই মুদ্রা পান, তার জন্য বছরটি সৌভাগ্যময় হবে বলে মনে করা হয়।
৯. কোরিয়া: তেওকগুক স্যুপ
কোরিয়ায় চালের গুঁড়া দিয়ে ভাপে বানানো হয় রাইস কেক। এই রাইস কেক মাংস, ডিম, সামুদ্রিক শেওলা ও সবজি দিয়ে বানানো সুস্বাদু তেওকগুক স্যুপ নববর্ষের দিন পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়াটাই কোরীয় রীতি।
১০. জার্মানি: শূকরের পা ও লেবুর রিং
জার্মানিতে শূকরের পা এবং লেবুর রিং খাওয়া হয়। শূকর সৌভাগ্যের প্রতীক, আর লেবুর রিং চক্রাকার জীবনের ধারাবাহিকতার প্রতীক। এ ছাড়া চিনি ও বাদাম দিয়ে তৈরি ‘সুগার পিগস’ খেয়েও নতুন বছরকে বরণ করেন জার্মানির অধিবাসীরা।
১১. মেক্সিকো: টামালেস
কলাপাতায় মোড়া এক বিশেষ ধরনের খাবার খেয়ে মেক্সিকোতে শুরু হয় বর্ষবরণ উৎসব। ‘টামালেস’ নামের এই খাবারে থাকে কর্ন, মাংস, পনিরসহ আরও কিছু আইটেম। এক ধরনের স্যুপের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় এই খাবার।
মেক্সিকোর নববর্ষ উদযাপনের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে রোসকা ডি রেস নামের এক ধরনের কেক বা রুটি। এতে বিভিন্ন ফলের মোরব্বা, গুঁড়া করা চিনি ও কিশমিশ দেওয়া থাকে।
১২. আর্জেন্টিনা: বিনস
আর্জেন্টিনার খাদ্যতালিকায় এমনিতেও বিনস বা বিভিন্ন ডালজাতীয় খাবারের প্রাধান্য রয়েছে। অর্থকরী রবিশস্য হিসেবে আর্জেন্টাইন সমাজে তাই বিনসের আছে আলাদা কদর।
নববর্ষের দিনে আর্জেন্টিনার সবাই বিনস–জাতীয় খাবার শখ করে খান। তারা বিশ্বাস করেন, এতে তাদের জীবন ও জীবিকায় আসবে উন্নতি, আসবে প্রাচুর্য।
নতুন বছরের এই খাবারগুলোর পেছনে প্রতিটি দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং বিশ্বাস লুকিয়ে রয়েছে। এই ঐতিহ্যগুলো কেবল খাবার নয়, বরং মানুষকে একত্রিত করে এবং নতুন বছরের জন্য ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলে।
আরটিভি/ জেএম
শীতে পা কিছুতেই গরম হয় না, অজান্তেই ভুগছেন না তো এই সমস্যায়?
শীত পুরোপুরি জেঁকে বসেছে। এ রকম শীতে জবুথবু হয়ে কম্বলের নিচে থাকতেই বেশি ভালো লাগে। এতে শরীর দ্রুত উষ্ণ হয়। তবে এই শীতে কম্বল-চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়েও অনেকের পা কিছুতেই গরম হতে চায় না, ঠান্ডা থেকেই যায়। অনেক চেষ্টা করলেও পা গরম হয় না। তাদের রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে যায়, তবু পা গরম হয় না। পুরো রাত লেপ-কম্বলের নিচে থেকেও যাদের পা গরম হয় না তারা জেনে নিন এই পা ঠান্ডা থাকা কি স্বাভাবিক নাকি কোনো রোগের ইঙ্গিত।
এ সমস্যার প্রথম কারণ হতে পারে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা। রক্ত সঞ্চালন ঠিকমত না হলে পা ঠান্ডা থেকে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। কারণ এতে সমস্যা হলে শরীরের নিচের দিকে রক্ত ঠিকমত পৌঁছাতে পারে না।
রক্তবাহে বেশি চাপের জন্য রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হতে পারে। ডায়াবিটিস থাকলে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। আর এই কারণেই পা কম্বল মুড়ি দেওয়া থাকলেও গরম হয় না সহজে। অনেক সময় অবশও হয়ে যায় পা।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্নায়ুজনিত সমস্যাও দেখা যায়। ফলে ডায়াবিটিস থাকলে সেই রোগীদের এই লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হওয়া দরকার।
পা গরম না হওয়া থাইরয়েডের সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। এক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা ঠিক থাকে না। হাইপোথাইরয়েডিজমের কারণে এই সমস্যা দেখা যেতে পারে।
এক্ষেত্রে এইরকম লক্ষণ যাদের দেখা যায় তাদের অনেক সময় শরীরে আয়রনের ঘাটতি লক্ষ করা গিয়েছে।
যাদের পা গরম হয় না তারা জেনে নিন কিভাবে পা গরম রাখতে পারেন―
রাতে ঘুমানোর আগে অনেকেই মোজা পরে ঘুমান পা গরম রাখার জন্য। চেষ্টা করুন পাতলা মোজা পরিধানের। বেশি মোটা মোজা অস্বস্তির কারণ হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় মোজা না পরে ঘুমাতে পারলে।
ঘুমানোর আগে গরম তেল দিয়ে পা ম্যাসাজ করতে পারেন। ঘর্ষণে পায়ের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং ঠান্ডা ভাবও কেটে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই ঘুমানোর আগে হাত-মুখ ধুয়ে ঘুমাতে যান সবাই। এ সময় পা ধোয়ার জন্য গরম পানি ব্যবহার করুন।
অনেকের পা কোনোভাবেই গরম হতে চায় না। তারা হট ওয়াটার বোতল ব্যবহার করতে পারেন। ঘুমানের সময় গরম পানি হট ওয়াটার বোতলে নিয়ে বিছানায় যান। এবার পা দুটো চাপ দিয়ে ধরে রাখুন ব্যাগটিকে। পা গরম হয়ে এলে ঘুমাতেও আর বাধা থাকবে না।
ঘুমানোর কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে পা গরম হয়―এমন একটি জুতা পরতে পারেন এবং বিছানায় যাওয়ার আগে খুলে ফেলতে পারেন।
গরম পানিতে পা ধুয়ে কম্বলের নিচে শীত কাটাতে পারেন আরামে। পা গরম থাকবে এবং ঘুমও ভালো হবে।