জরায়ুমুখ ক্যানসার
স্ক্রিনিং কেন, কখন ও কীভাবে করাবেন
জরায়ুমুখ ক্যানসার নারীদের অন্যতম প্রাণঘাতী একটি রোগ। বাংলাদেশে এ ক্যানসারে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা অনেক বেশি এবং ক্রমবর্ধমান। জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত নারীদের অত্যন্ত কষ্টকর, ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তবে একটু সচেতন হলে এ রোগ সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত স্ক্রিনিং, অর্থাৎ ঝুঁকির প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
স্ক্রিনিং কেন জরুরি
জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি যাচাই করার জন্য স্ক্রিনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি সুস্থ থাকলেও এ পরীক্ষা আপনাকে ঝুঁকিমুক্ত থাকার নিশ্চয়তা দিতে পারে। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসার জন্যও স্ক্রিনিং অপরিহার্য। জরায়ুমুখ ক্যানসারের স্ক্রিনিং অত্যন্ত সহজলভ্য এবং জটিলতামুক্ত, ফলে যে কোনো সময় করানো সম্ভব।
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণ ও প্রাথমিক সংকেত
জরায়ুমুখ ক্যানসারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো:
- পিরিয়ডের বাইরের অনিয়মিত রক্তপাত।
- সহবাসের সময় বা পরে রক্তপাত।
- মেনোপজের পর রক্তপাত।
- তীব্র গন্ধযুক্ত বা রক্তমিশ্রিত যোনিস্রাব।
- সহবাসের সময় ব্যথা বা অস্বস্তি।
ঝুঁকিতে আছে যারা
নিম্নলিখিত কারণগুলো জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে:
- অল্প বয়সে বিয়ে বা যৌনমিলন।
- একাধিক যৌনসঙ্গী থাকা।
- বেশি সংখ্যক সন্তানের জন্ম দেওয়া।
- দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহার।
কীভাবে স্ক্রিনিং করাবেন
জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে স্ক্রিনিং অত্যন্ত কার্যকর। ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের প্রতি ৩-৫ বছর পরপর স্ক্রিনিং করানো উচিত। বিভিন্ন পদ্ধতিতে স্ক্রিনিং করা যায়, যেমন:
- ভায়া টেস্ট
- প্যাপস স্মিয়ার
- এইচপিভি ডিএনএ পরীক্ষা
- কলপোস্কপি
একজন গাইনি ক্যানসার বিশেষজ্ঞ আপনার জন্য সঠিক পদ্ধতি নির্ধারণ করে পরীক্ষা সম্পন্ন করবেন।
সচেতনতা
উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, নিয়মিত স্ক্রিনিং আপনাকে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে সহায়তা করবে। লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সময়মতো স্ক্রিনিং করালে রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। সচেতনতা ও নিয়মিত স্ক্রিনিংই জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর পথ।
আরটিভি/জেএম
মন্তব্য করুন