ঢাকামঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

তীব্র শীত পড়লে কী করবেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২০ , ০১:১০ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

তীব্র শীত বা শৈতপ্রবাহের এই সময়টা প্রকৃতি উপভোগ্য হলেও দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা। হুট করে শরীরে সর্দি কাশি বাঁধিয়ে দিতে পারে। সেজন্য কোনো সোয়েটার বা শাল পরে বাইরে বের হওয়া উচিত। শীতে প্রধানত বাড়ে শ্বাসতন্ত্রের রোগ। এ ছাড়া ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যায়। ঠাণ্ডা, শুষ্ক বাতাস হাঁপানি রোগীর শ্বাসনালীকে সরু করে দেয়, ফলে হাঁপানির টান বাড়ে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক এর গবেষক ড. কামরান-উল-বাসেত বলেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব এনজাইম থাকে, তা স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রায় কম কার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

সর্দি-কাশি
শীতে সাধারণ সর্দি-কাশি সবারই হয়। এ রোগের শুরুতে গলা ব্যথা,  খুসখুস ভাব ও শুকনা কাশি দেখা দেয়, নাক বন্ধ হয়ে যায়, নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে এবং ঘন ঘন হাঁচি আসে। হালকা জ্বর, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, দুর্বল লাগা ও ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। এটা মূলত শ্বাসতন্ত্রের রোগ। তবে কাশি কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ইনফ্লুয়েঞ্জা
শীতে ইনফ্লুয়েঞ্জাও বেশি মাত্রায় দেখা যায়। এই রোগটি মূলত ভাইরাসজনিত। ঠাণ্ডার অন্যান্য উপসর্গ ছাড়াও এ রোগের ক্ষেত্রে জ্বর ও কাশিটা খুব বেশি হয় এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে। শীতের প্রকোপে শুধু ফুসফুস নয়, সাইনাস, কান ও টনসিলের প্রদাহ বাড়ে। এসব রোগে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি বাড়ে নবজাতক, শিশু, বৃদ্ধ, হাঁপানি রোগী ও ধূমপায়ীদের।

বিজ্ঞাপন

তীব্র শীতে আরও অনেক রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। যেমন:

* আর্থ্রাইটিস বা বাতের ব্যথা শীতে বাড়তে পারে। মূলত বয়স্কদেরই এ সমস্যা হয়। যারা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিও আর্থোসিস রোগে ভোগেন, তাদের বেলায় এ সমস্যাটা আরও প্রকট হয়ে পড়ে।
* তীব্র শীত বা শৈতপ্রবাহ হলে কিছু কিছু রোগে অনেকের হাতের আঙুল নীল হয়ে যায়। তারা অবশ্যই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন। যেন কোনোভাবেই ঠাণ্ডা না লাগে।
* তীব্র শীতে হলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
* তীব্র শীত বা শৈতপ্রবাহের আরেকটি মারাত্মক সমস্যা হাইপোথার্মিয়া, অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়া, যা মৃত্যুও ঘটাতে পারে।


বেশি শীত বা শৈতপ্রবাহ প্রতিরোধে করণীয়
* ঠাণ্ডা খাবার ও পানীয় খাওয়া একেবারে বাদ দিতে হবে।
* কুসুম গরম পানি পান করা করুন। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করুন।
* প্রয়োজন মতো গরম জামাকাপড় পড়ুন। তীব্র শীতের সময় কান টুপি পরা এবং গলায় মাফলার বাঁধুন।
* ধূমপান পরিহার করুন।
* ঘরের দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ না রেখে মুক্ত ও নির্মল বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা।
* হাঁপানির রোগীরা শীত শুরুর আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রতিরোধমূলক ইনহেলার বা অন্যান্য ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।


* যাদের অনেক দিনের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাদের জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোক্কাস নিউমোনিয়ার টিকা নিন।
* তাজা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা, যা দেহকে সতেজ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
* হাত ধোয়ার অভ্যাস করা। বিশেষ করে চোখ বা নাক মোছার পরপর হাত ধোয়া। সবসময়ই গরম পানি করে রাখুন। ঠাণ্ডা পানি না ধরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধোয়ার জন্য ব্যবহার করুন।

সব সময়ই যে শীতে রোগব্যাধী বাড়বে তা কিন্তু না, এই সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা তো গ্রহণ করছেনই তাহলে অযথাই আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

এস/সি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |